Breaking News
Home / Breaking News / পণ্যভর্তি ১২ হাজার কন্টেইনার গায়েব

পণ্যভর্তি ১২ হাজার কন্টেইনার গায়েব

চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ

চট্টগ্রাম বন্দরসহ দেশের ৪ বন্দরে জব্দ করা প্রায় ১২ হাজার (১১ হাজার ৯১৬টি) পণ্যভর্তি কনটেইনার গায়েব হয়ে গেছে। এর বেশিরভাগই গায়েব হয় চট্টগ্রাম সামুদ্রিক বন্দর থেকে। কম্পিউটারে সংরক্ষিত বিল অব এন্ট্রির গোপন পাসওয়ার্ড চুরি করে কনটেইনারগুলো গায়েব করা হয়। মিথ্যা ঘোষণায় বিদেশ থেকে পণ্য আনার বিষয়টি শুল্ক কর্তৃপক্ষের গোচরে আসে।
পরে শুল্ক কর্তৃপক্ষ ১১ হাজার ৯১৬টি কনটেইনার শুল্কায়নের মাধ্যমে ছাড়করণ স্থগিত করে। কিন্তু অসাধু চক্র বিল অব এন্ট্রির ইউজার আইডির গোপন পাসওয়ার্ডের লক ভেঙে এ বিপুল পরিমাণ কনটেইনার বন্দর থেকে নিয়ে গেছে। এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের রাজস্ব দেওয়া হয়নি।
শুল্ক বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, সংশ্লিষ্ট পণ্য আমদানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে এ ধরনের জালিয়াতির ঘটনা ঘটে। এর সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর ও কাস্টমসের কিছু অসাধু কর্মকর্তা জড়িত। পণ্যভর্তি ১১ হাজার ৯১৬টি কনটেইনার গায়েব হওয়ার ঘটনায় সরকার কয়েকশ কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
কনটেইনার গায়েবের ঘটনায় গতকাল রাতে রাজধানীর রমনা থানায় একটি মামলা করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। মামলার বাদী হন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা অ৬ানোয়ার হোসেন। জালিয়াতির অভিযোগে তিনটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়। প্রতিষ্ঠান তিনটি হলো পুরান ঢাকার গুলশান আরা সিটি মার্কেটে অবস্থিত জারা এন্টারপ্রাইজ, ৪/১, হেয়ার স্ট্রিট ওয়ারীর মেসার্স চাকলাদার সার্ভিস এবং এমআর ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল। পণ্যবাহী কনটেইনার গায়েব করে দেওয়ার ঘটনায় ইতোমধ্যে শুল্ক গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষ এমআর ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মালিক মিজানুর রহমান চাকলাদারকে গ্রেপ্তার করে। তাকে গতরাতেই পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার মুখ থেকে পিলে চমকানো সব তথ্য বেরিয়ে আসছে। ঘটনার সঙ্গে অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তিও জড়িত রয়েছে বলে তথ্য পাচ্ছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
শুল্ক কর্তৃপক্ষ বলছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ২ হাজার ৬২৭টি, কমলাপুর আইসিডি থেকে ২২৩টি এবং মোংলা বন্দর থেকে ১০টি কনটেইনার গায়েব করে দেওয়া হয়। একইভাবে ১৬-১৭ অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ২ হাজার ১৬২, কমলাপুর আইসিডি থেকে ৭৪, পানগাঁও বন্দর থেকে ২টি এবং মোংলা বন্দর থেকে ১৪টি কনটেইনার গায়েব করা হয়। অন্যদিকে গত বছর চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ৬ হাজার ৭১১, কমলাপুর আইসিডি থেকে ৩৪, মোংলা বন্দর থেকে ২৯ এবং পানগাঁও বন্দর থেকে ৩০টি জব্দকৃত কনটেইনার গায়েব করা হয়।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. সহিদুল ইসলাম আমাদের সময়কে বলেন, ঘটনা অনুসন্ধানে চমকপ্রদ ও উদ্বেগজনক তথ্য পাওয়া গেছে। এ জালিয়াতির ঘটনায় রাজধানীর রমনা থানায় মামলা করা হয়। এর পেছনে শক্তিশালী একটি চক্র রয়েছে। তদন্ত করে ওই চক্র ধরার চেষ্টা চলছে। গায়েব করা কনটেইনারে কয়েক হাজার কোটি টাকার পণ্য ছিল।
রমনা থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়, কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা ডিএএম মুহিবুল ইসলাম ২০১৩ সালের ২২ জানুয়ারি থেকে ২০১৪ সালের ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে কর্মরত ছিলেন। এর পর তিনি তিনটি দপ্তর ঘুরে যশোর ভ্যাট থেকে ২০১৫ সালে অবসরে যান। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে কর্মরত অবস্থায় তিনি অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমের ইউজার আইডি-পাসওয়ার্ড নেন। কিন্তু বদলি হওয়ার পর ২০১৮ সাল পর্যন্ত তার ইউজার আইডি সচল ছিল। তার পাসওয়ার্ড চুরি করে জালিয়াতির মাধ্যমে জব্দ করা পণ্যবাহী কনটেইনার পর্যায়ক্রমে খালাস করে নিয়ে যায় আমদানিকারক কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া একই কায়দায় ফজলুল হক নামে আরেকজন কাস্টমস কর্মকর্তার ইউজার আইডি ব্যবহার করে প্রায় সাড়ে তিন হাজার পণ্য চালান গোপনে খালাস করে নেওয়া হয়। রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থান থেকে তার আইডিতে প্রবেশ করে জালিয়াতচক্র। মিথ্যা ঘোষণায় স্থগিত করা চালান কীভাবে খালাস করে নেওয়া হয়েছে, তা অনুসন্ধান করতে গিয়ে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর এ চমকপ্রদ ও ভয়াবহ জালিয়াতির ঘটনা উদ্ঘাটন করে।
শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তারা বলেছেন, ঢাকার গুলশান আরা সিটির জারা এন্টারপ্রাইজের নামে মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি করছে বলে খবর পান। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ১৯ এপ্রিল প্রতিষ্ঠানটির একটি চালান স্থগিত করতে শুল্ক গোয়েন্দার চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আবু হানিফ মোহাম্মদ আবদুল আহাদ চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনারকে চিঠি দেন। শুল্ক জালিয়াতির সংবাদ থাকায় ২৫ জুন চালানটি স্থগিত করতে এনবিআরের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসি) কাস্টমসকে নির্দেশ দেয়।
চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম কাস্টমস অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে শুল্ক গোয়েন্দার নামের বিপরীতে পণ্য চালানটির বিল অব এন্ট্রি লক করে দেয়। পরে আমদানিকারকের মনোনীত সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট

Powered by themekiller.com