Breaking News
Home / Breaking News / চালের দাম কমায় স্বস্তিতে ক্রেতারা, ক্ষুব্ধ কৃষকরা

চালের দাম কমায় স্বস্তিতে ক্রেতারা, ক্ষুব্ধ কৃষকরা

এন কে সুমন পাটওয়ারীঃ

দিনাজপুরে চালের বাজারে অস্থিরতা কমতে শুরু করেছে। গত কয়েক দিনের ব্যবধানে মোটা চালের দাম কেজি প্রতি কমেছে এক থেকে দুই টাকা। চালের সরবরাহ বাড়লে দাম আরও কমবে বলে জানিয়েছেন আড়তদার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা। তবে চিকন চালের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এদিকে বাজারে ধানের দাম কমেছে অস্বাভাবিক হারে কমে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ কৃষকরা।

দিনাজপুরের প্রধান চালের বাজার বাহাদুর বাজার এন এ মার্কেটে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিকেজি গুটি স্বর্ণ ৩০-৩২ টাকা দরে, সুমন স্বর্ণ ৩২-৩৩ টাকা, বিআর-২৯ চাল বিক্রি হচ্ছে ৩৮ টাকা কেজি দরে। কয়েকদিন প্রতি কেজি গুটি স্বর্ণ ৩৩-৩৪ টাকা, সুমন স্বর্ণ ৩৫-৩৬ টাকা এবং বিআর-২৯ চাল প্রতিকেজি ৪০ টাকা দরে ধরে বিক্রি হতো।

খুচরা বাজারের পাশাপাশি পাইকারি বাজারেও কমেছে চালের দাম। বাহাদুর বাজারের চাল ব্যবসায়ী লিয়াকত আলী জানান, পাইকারি বাজারে গত কয়েকদিনের ব্যবধানে প্রকারভেদে বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) চালের দাম কমেছে ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকা।

বাহাদুর বাজারের চালের আড়তদার গোলাম রব্বানী জানান, কয়েকদিন আগে মিল মালিকরা চালের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছিল। এখন সরবরাহ বৃদ্ধি করায় চালের দাম কমতে শুরু করেছে। সরবরাহ বাড়লে চালের দাম আরও কমবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। তবে মিনিকেটসহ অন্যান্য চিকন চালের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

চাল ক্রেতা সুকুমার দাস জানান, গত কয়েকদিন ধরেই চালের বাজার চড়া ছিল। এখন তা কমতে শুরু করেছে। চালের দাম যাতে না বাড়ে সেজন্য সরকারের দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন।

ক্রেতা লতা রানী জানান, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস হিসেবে চালের দাম আরও কমানো উচিত। যাতে করে সবাই দুবেলা দুমুঠো পেট পুরে খেতে পারে।
এদিকে বাজারে অস্বাভাবিকহারে দাম কমতে শুরু করেছে ধানের। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রকার ভেদে প্রতিবস্তা (৭৫ কেজি) ধানের দাম কমেছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা করে।
দিনাজপুরের অন্যতম বৃহৎ ধানের হাট দিনাজপুর সদর উপজেলার গোপালগঞ্জে গিয়ে দেখা যায়, প্রকার ভেদে প্রতিবস্তা (৭৫ কেজি) গুটি স্বর্ণ ধান বিক্রি হচ্ছে ১২৫০ টাকা থেকে ১২৮০ টাকা দরে, সুমন স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে ১৩০০ টাকা দরে এবং বিআর-৫১ ধান বিক্রি হচ্ছে ১৩২০ টাকা দরে। এক সপ্তাহ আগে প্রতিবস্তা গুটি স্বর্ণ ধান বিক্রি হতো ১৪০০ টাকা দরে, সুমন স্বর্ণ ধান ১৪৫০ টাকা দরে এবং বিআর-৫১ ধান বিক্রি হতো ১৪৫০ টাকা দরে।
চালের দাম কমতে শুরু করায় ভোক্তারা স্বস্তি প্রকাশ করলেও ধানের দাম কমাতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে কৃষকরা। কৃষকরা জানান,ধানের দাম কমায় তাদের উৎপাদন খরচ তুলতে হিমসিম খেতে হবে।
কৃষক সেলিম রেজা জানান, প্রায় প্রতি বছরই ধান আবাদ করে ন্যায্য মূল্য পান না কৃষকরা। ধানের যে মূল্য তাতে করে উৎপাদন খরচ উঠানোয় দায় হয়ে পড়েছে। কৃষকরা যাতে করে ধানে লোকসান না গুনে এজন্য সরকারি মনিটরিং ব্যবস্থা জোড়দারের দাবি জানান তিনি।
ধান বিক্রি করতে আসা সিরাজুল ইসলাম জানান, কয়েকদিন আগেই বাজারে স্বর্ণ ধান বিক্রি করেছেন ৭০০টাকা মণ দরে। এখন একই ধান বিক্রি করতে হচ্ছে ৬০০ টাকায় । আশা ছিল দাম বাড়বে কিন্তু হয়েছে উল্টো। অন্তত কৃষকদের কথা ভেবেও ধানের বাজারে সামঞ্জস্য আনার দাবি জানান তিনি।
দিনাজপুরে দ্রুতগতিতে চলছে আমন সংগ্রহ অভিযান। দিনাজপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আশরাফুজ্জামান জানান, দিনাজপুরে চলতি আমন সংগ্রহ মৌসুমে দিনাজপুর জেলায় মোট ৪৯ হাজার ৯২ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এজন্য ১ ডিসেম্বরের আগেই দিনাজপুর জেলার ২৪১১ জন মিল মালিক খাদ্য বিভাগের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়। প্রতি কেজি ৩৬ টাকা দরে ইতিমধ্যেই প্রায় ৩৬ হাজার মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত এই সংগ্রহ অভিযান চলবে বলে জানান তিনি।

Powered by themekiller.com