Breaking News
Home / Breaking News / নির্বাচন সংক্রান্ত খবর প্রকাশ করায় খুলনায় সাংবাদিক হেদায়েৎ গ্রেফতার

নির্বাচন সংক্রান্ত খবর প্রকাশ করায় খুলনায় সাংবাদিক হেদায়েৎ গ্রেফতার

বিশেষ প্রতিনিধিঃ
গ্রেফতারের পর হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় সাংবাদিক হেদায়েৎ হোসেনকে
গ্রেফতারের পর হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় সাংবাদিক হেদায়েৎ হোসেনকে

ইংরেজি দৈনিক ঢাকা ট্রিবিউনে প্রকাশিত নির্বাচনের ফলাফল সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন সঠিক ও তথ্যভিত্তিক না হওয়ার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পত্রিকাটির খুলনা প্রতিনিধি মো.হেদায়েৎ হোসেন মোল্যাকে মঙ্গলবার (১ জানুয়ারি) দুপুরে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। খুলনার সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও বটিয়াঘাটা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা দেবাশীষ চৌধুরীর দায়ের করা মামলায় সাংবাদিক হেদায়েৎ হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি একইসঙ্গে অনলাইন গণমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউনেরও খুলনা প্রতিনিধি।

দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে নবনির্বাচিত কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের অনুষ্ঠান শেষে সদ্য বিদায়ী কমিটির কোষাধ্যক্ষ হেদায়েৎ হোসেন বের হলে প্রেসক্লাবের বাইরে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পরপরই মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা ও বটিয়াঘাটা থানার পরিদর্শক সরকার ইব্রাহীম সোহেল তাকে হাতকড়া পরিয়ে আদালতে হাজির করেন। আদালতের বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তবে পুলিমের দাবি শহরের গল্লামারী এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

খুলনার পুলিশ সুপার এস এম সফিউল্লাহ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও বটিয়াঘাটা উপজেলার ইউএনও’র ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় হেদায়েৎকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’ তিনি বলেন,‘রিটার্নিং কর্মকর্তা বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছে। তারাই মামলা করেছেন। আমরা আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেছি।’

হাতকড়া পরিয়ে আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ঢাকা ট্রিবিউন ও বাংলা ট্রিবিউনের সাংবাদিক হেদায়েৎ হোসেনকে
হাতকড়া পরিয়ে আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ঢাকা ট্রিবিউন ও বাংলা ট্রিবিউনের সাংবাদিক হেদায়েৎ হোসেনকে

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও বটিঘাটা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সরকার ইব্রাহীম সোহেল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,‘সোমবার বটিয়াঘাটার ইউএনও দেবাশীষ চৌধুরী নিজেই মামলা করেছেন। মামলা নম্বর ৬। মামলায় দুজনকে আসামি করা হয়েছে।

হেদায়েৎ হোসেন ছাড়া মামলার অপর আসামি হলেন, দৈনিক মানবজমিনের খুলনা প্রতিনিধি রাশিদুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘মামলার পর আমরা হেদায়েৎ হোসেনকে গ্রেফতার করেছি। তবে রাশিদুল ইসলামকে এখনও পাওয়া যায়নি। তিনি পলাতক।’

পরিদর্শক ইব্রাহীম সোহেল বলেন, ‘এজাহারের সঙ্গে মানবজমিন ও ঢাকা ট্রিবিউনে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ফটোকপি ও স্কিনশট সংযুক্ত করা হয়েছে। আমরা প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। তারা ভুল ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করেছেন এবং তা পত্রিকা দুটি তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে।’

গ্রেফতার হেদায়েৎ হোসেনের স্ত্রী সৈয়দা লায়লা আক্তার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,‘হেদায়েৎ হোসেন সকালে প্রেসক্লাবে যান, দুপুরে তিনি আর বাড়িতে ফেরেননি। তার ফোনে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেনি। একবার কল অপর ব্যক্তি রিসিভ করেন। তিনি তার পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘আমি বটিয়াঘাটা থানার ওসি (তদন্ত)।’’ এরপর তিনি লাইনটি কেটে দেন।’ লায়লা আক্তার আরও বলেন, ‘‘আমি বাগেরহাটে জব করি, সেখান থেকে দ্রুত বাড়িতে চলে আসি। এরপর অন্যান্য সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পারি তাকে থানা পুলিশ গ্রেফতার করেছে।’ ’

এদিকে, সাংবাদিক হেদায়েৎ হোসেন মোল্যাকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় খুলনা প্রেসক্লাবে সকল সাংবাদিক সংগঠনের যৌথসভা অনুষ্ঠিত হবে।

উল্লেখ্য, খুলনা-১ আসনের ভোট গণনা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল ঢাকা ট্রিবিউনে। সেই প্রতিবেদনটিকে অসত্য দাবি করে মামলাটি দায়ের করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

Powered by themekiller.com