Breaking News
Home / Breaking News / বিরোধী জোটের ইশতেহারে নতুনত্ব বেশী

বিরোধী জোটের ইশতেহারে নতুনত্ব বেশী

বিশেষ প্রতিনিধিঃ
সরকারি দল আওয়ামী লীগ ও এর নেতৃত্বাধীন মহাজোট ১০ বছর ধরে ক্ষমতায় আছে। সঙ্গত কারণেই তাদের ইশতেহারে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে মনে করি, বিরোধী জোটের ইশতেহারে নতুনত্ব বেশি আছে। সরকারি দলের ইশতেহারে খুব বেশি নতুন কথা নেই। কারণ নতুন নতুন প্রসঙ্গ সেখানে বেশি উত্থাপণ করা হলে জনগণের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠবে, ১০ বছর ধরে ক্ষমতায় থেকেই তাহলে এগুলো করা হলো না কেন? তাই তাদের ফোকাস উন্নয়নে।

সব দলের ইশতেহার তো সবসময়ই ভালো থাকে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে তারা অতীতে কী করেছে এবং আগামীতে কী করবে। গত দশ বছরে আওয়ামী লীগ কী করেছে এর ওপর ভর করেই তাদের পক্ষে ভোট আসবে। আর আগামী দশ বছর কী করবে তা ধারাবাহিক ব্যাপার। আওয়ামী লীগের ইশতেহারে নতুনত্বের কমতি রয়েছে, অন্যদিকে ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপির ইশতেহারে কিছুটা নতুনত্ব রয়েছে। এটাই স্বাভাবিক। ১০ বছর বিরোধী দলে থাকার কারণে তারা তাদের ইশতেহারে নতুন নতুন কথা যুক্ত করতে পেরেছে বেশি করে। যেমন দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের কথা বলা হয়েছে। এই একই কথা কিন্তু তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর দলের ইশতেহারেও স্থান পেয়েছে। ক্ষমতার ভারসাম্য আনা, দু’বারের বেশি প্রধানমন্ত্রী পদে না থাকা এমন নানা বিষয় বিরোধী জোটের ইশতেহারে এসেছে। তারা খুঁজে খুঁজে জনপ্রিয় বিষয়গুলো যুক্ত করেছেন।

পররাষ্ট্র নীতির ক্ষেত্রে দুই দল ও জোটের ইশতেহারে খুব বেশি নতুনত্ব নেই। দু’দিকেই অনেকটা একই রকম কথা বলা হয়েছে। ভারসাম্যমূলক পররাষ্ট্র নীতির কথা বলা হয়েছে। অন্যদিকে দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ সার্বিক অর্থনৈতিক বিষয়েও ঘোষিত ইশতেহারের মধ্যে পার্থক্য খুব বেশি নয়।

আমি মনে করি, ইশতেহার একটি রাজনৈতিক বিষয়। এর বাস্তবায়নেও তাই রাজনৈতিক অঙ্গীকার থাকতে হয়। অনেকে বলে থাকেন, ক্ষমতায় গেলে অনেকে নিজ দলের ইশতেহার পুরোপুরি বাস্তবায়ন করেন না। আমি বলব, ইশতেহার কোনো রাজনৈতিক কনভেনশন নয়। এটি একটি লক্ষ্য। ক্ষমতায় গেলে সে লক্ষ্য অর্জনের জন্য কাজ করার কথা এখানে বলা হয়েছে। ইশতেহার আসলে ভোট টানার জন্য একটি কৌশল। এর স্বল্পমেয়াদি লক্ষ্য হলো ভোটারদের আকৃষ্ট করা। এটা অক্ষরে অক্ষরে মানা হবে, এটি ভাবা ভুল। অতীতের বিভিন্ন ইশতেহারের দিকে তাকালে দেখতে পাব, সেগুলোর বাস্তবায়নেও ঘাটতি রয়ে গেছে।

তবে এবার যেহেতু বড় ও গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু ইস্যু মোটা দাগে আলোচনায় এসেছে, যেমন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনয়ন, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ, এমন আরও বেশ কিছু বিষয়, তাই আমার ব্যক্তিগত ধারণা, নির্বাচনের পরেও এসব বিষয়ে আলোচনা চলবে। এসব আলোচনা আমাদের সিভিল সোসাইটিতে প্রায়ই হয়, আগেও হতো। এখন এগুলো রাজনৈতিক দলের ইশতেহারে আসায় নির্বাচনের পরেও ঘুরেফিরেই এসব বিষয় বারবার সামনে আসতে পারে।

Powered by themekiller.com