ঠাকুরগাওয়ে হিন্দু বাড়ীতে আগুন

ঠাকুরগাও প্রতিনিধিঃ

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় একটি হিন্দু বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

শুক্রবার ভোরে উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের সিংগিয়া শাহাপাড়া গ্রামের কৃষ্ণ ঘোষের বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু তাহের মো.আব্দুল্লাহ ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলালউদ্দিন মাস্টার। তারা পৃথকভাবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

এ ঘটনায় বিএনপি ও আওয়ামী লীগ পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে। ঘটনার পর ওই এলাকায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, শুক্রবার ভোর ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে কৃষ্ণ ঘোষের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। দ্রুতই তা চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে ও ঘরবাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। তবে এতে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

কৃষ্ণ ঘোষ অভিযোগ করে বলেন, শুক্রবার ভোরে কে বা কারা আমাদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় বাড়ির সবাই ঘুমিয়ে ছিল। আগুনে আটটি ঘর, সাতটি ছাগল, ৬০ মন ধান ও আসবাবপত্র পুড়ে প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে।

ঠাকুরগাঁও ফায়ার সার্ভিসের টিম লিডার মো. মাইনুদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে তাদের একটি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে প্রায় পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে তারা খসড়া তালিকা করেছেন।

এদিকে জগন্নাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলাউদ্দীন আলাল মাস্টার এ ঘটনার জন্য ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা মোস্তফিজুর রহমান লিটনকে দায়ী করেছেন। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন লিটন।

আলাউদ্দীন মাস্টার বলেন, সাবেক চেয়ারম্যান লিটনের নেতৃত্বে বিএনপি-জামায়াতের লোকজন শেখবাজার এলাকায় আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অফিসে হামলা করে বৃহস্পতিবার রাতে। আর এরই জের ধরে শুক্রবার ভোরে এই হিন্দু বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

বিএনপি-জামায়াত ২০১৪ সালের মত অবস্থা তৈরি করার চেষ্টা করছে মন্তব্য করে এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।

অভিযোগ অস্বীকার করে সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান লিটন বলেন, ওই ইউনিয়নের হিন্দু ভোটাররাও আমাকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছিল। আমি কেন তাদের বাড়িতে আগুন দেব?

তিনি দাবি করেন, এ ঘটনায় তিনি বা তার দলের কেউ জড়িত নয়। তাকে এবং তার লোকজনকে এ ঘটনায় ফাঁসানো হচ্ছে। আর তাকে ফাঁসাতে ওই ইউপির চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু তাহের মো.আব্দুল্লাহ বলেন, কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তা স্পষ্ট নয়। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অরুনাংশু দত্ত টিটো বলেন, ২০১৪ সালে বিএনপি-জামায়াতের লোকজন হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্মম নির্যাতন করেছিল। তাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়া হয়েছিল। এখন আবারও শুরু হয়েছে। তাই এসব অপশক্তিকে শক্তভাবে দমন করতে হবে। এ ঘটনার বিচার করতে হবে। নইলে এ ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে।