Breaking News
Home / Breaking News / ফরিদগঞ্জে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে লড়তে চান তারুণ্যের প্রতীক রোমান

ফরিদগঞ্জে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে লড়তে চান তারুণ্যের প্রতীক রোমান

আবু হেনা মোস্তফা কামাল ঃ আসন্ন ১১ তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসনে নৌকা প্রতীকে লড়তে চান এডভোকেট জাহিদুল ইসলাম রোমান। ইতিমধ্যে দলের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন তিনি। গত ২০০৩-২০০৮ সালে সফলভাবে চাঁদপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। তার দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে সমগ্র চাঁদপুর জেলায় অভূতপূর্বভাবে ছাত্রলীগ সাংগঠনিকভাবে প্রসার লাভ করে ও মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড়ায়। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনৈতিক পরিবারে বেড়ে ওঠা একজন রাজনৈতিক কর্মী জাহিদুল ইসলাম রোমান- গত ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ডাঃ দীপু মনির জয়লাভে তার বিশেষ অবদান ছিল। পরবর্তীতে উপজেলা, জেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলের প্রার্থী বিজয়ের পেছনেও তার বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।
আওয়ামী পরিবারের এ সন্তানের বাবা প্রয়াত এডভোকেট সিরাজুল ইসলাম পাটওয়ারী ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। নির্বাচনে লড়া ও জয়লাভে তার বিশেষ আশাবাদ রয়েছে। ফরিদগঞ্জের একটি পৌরসভাসহ ১৫টি ইউনিয়নে তার রয়েছে বিশাল কর্মী বাহিনী। যাদের বড় অংশ তরুণ। ইতিমধ্যে তিনি ফরিদগঞ্জ উপজেলায় তারুন্যের শক্তি হিসেবে নিজেকে আত্ম প্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছেন।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসনটি নানাভাবে আলোচিত। স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করেছিলো আওয়ামী লীগ। সে নির্বাচনে জয়লাভ করেন প্রয়াত এম সফিউল্লাহ। তারপর যে কয়টি নির্বাচন হয়েছে কোনোটিতেই আওয়ামী লীগ জয়লাভ করতে পারেনি। ১৯৭৯ সালে বিএনপির অধীনে, ১৯৮৬ ও ৮৮ সালে জাতীয় পার্টির অধীনে জয়লাভ করেন প্রয়াত মাওলানা এমএ মান্নান। তিনটি নির্বাচনই বিতর্কিত ছিলো বলে রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের অভিমত।

এক্ষেত্রে, জাহিদুল ইসলাম রোমান অনেকটা নিরাপদ বলে মত প্রকাশ করছেন দলীয় নেতা কর্মীগণ। কারণ তাকে নিয়ে একদিকে দলের বিরুদ্ধে বিশেষ কোনো অভিযোগ নেই, অন্যদিকে তরুণদের মাঝে ব্যাপক জনপ্রিয় এ্যাডভোকেট জাহিদুল ইসলাম রোমানই হতে পারেন দলীয় ঐক্যের প্রতীক। গত প্রায় দেড় দশকে একজন ক্লিন ইমেজের জননেতা হিসেবে উপজেলার ছাত্রজনতা নারী পুরুষ ভোটার নির্বিশেষে সকলের ভালোবাসা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন তিনি- অভিমত এলাকাবাসীর।

এ্যাডভোকেট জাহিদুল ইসলাম রোমান টানা সভা সমাবেশ ও গণসংযোগ করে চলেছেন। ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকা ও ১৫টি ইউনিয়নের দলীয় নেতা কর্মীদের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান তার দলের নিবেদিত সেতা কর্মীরা। এলাকায় ও রাজনীতিতে সর্বমহলে বিনয়ী হিসেবে পরিচিত জাহিদুল ইসলাম রোমান। তার প্রয়াত বাবা সিরাজুল ইসলাম পাটওয়ারী আওয়ামী লীগের পক্ষে ১৯৭০ এর নির্বাচনে প্রাদেশিক পরিষদ, ১৯৭২ সালে গণপরিষদ ও ১৯৭৫ সালে উপনির্বাচনে সংসদ সদস্য পদ লাভ করেন। পরবর্তীতে চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও, বিগত বিভিন্ন নির্বাচনে জাহিদুল ইসলাম রোমান উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী বিজয়ে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতার লক্ষে গত কয়েক বছর পূর্ব হতে ফরিদগঞ্জ উপজেলাব্যাপী ব্যাপক সভা সমাবেশ ও গণসংযোগ কর্মসূচী করেছেন তিনি। গুছিয়ে নিয়েছেন নির্বাচনী মাঠ।

এদিকে, গত ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাহিদুল ইসলাম রোমান চাঁদপুর সদর আসনে ডাঃ দীপু মনির পক্ষে নির্বাচনে অসামান্য অবদান রেখেছেন বলে দলের নেতা কর্মী ও ভোটারদের মধ্যে সর্বজন স্বীকৃত। দলীয় মনোনয়নে ডাঃ দীপু মনির নাম ঘোষণার পর দলের বড় এক অংশের নেতা কর্মী গোঁ ধরেন। তারা প্রায় নিষ্ক্রিয় থাকেন। কিন্তু জাহিদুল ইসলাম রোমানই প্রথম হাজার হাজার ছাত্র জনতাকে সাথে নিয়ে ডাঃ দীপু মনির পক্ষে মাঠে নামেন। নৌকা মার্কার নির্বাচনী মাঠ সরগরম করে তোলেন ও জয়লাভে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। পরবর্তীতে অন্যরাও নির্বাাচনী মাঠে নামতে বাধ্য হন এবং প্রথমবারের মত ডাঃ দীপু মিন বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেন।

পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে স্কুল জীবন হতেই রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠেন জাহিদুল ইসলাম রোমান। যুক্ত হন ছাত্রলীগেরে সঙ্গে। ১৯৯০ সালে স্বৈারাচার বিরোধী ছাত্র গণআন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। চট্টগ্রাম মহসীন কলেজ ও চাঁদপুর সরকারী কলেজে ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত থেকে ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। এর ধারাবাহিকতায় গত ২০০৩-২০০৮ সালে তিনি চাঁদপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পাণর করেন। তার সময়কালে চাঁদপুর জেলাব্যাপী ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম অভূতপূর্বভাবে বিস্তার লাভ করে। দীর্ঘ বছর পর চাঁদপুর জেলায় তিনি হয়ে উঠেন ছাত্রলীগের পথিকৃৎ। তারুণ্যের প্রতীক হিসেবে বিশাল ভাবমূর্তী নিয়ে দাঁড়িয়ে যান জাহিদুল ইসলাম রোমান।

আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন প্রায় ১৩ জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে বর্তমান এমপি ড. মোহাম্মদ শাসছুল হক ভূইয়া গত দু’বারের প্রার্থী জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক সফিকুর রহমান অন্যতম।

এদিকে, দলের টিকিট নিয়ে যে কেউ দাঁড়ালেই অনায়াসে ফরিদগঞ্জ আসনে পাশ করবে বিএনপি। তাদের এমন ধারণায় এখন চিড় ধরেছে। আর তাদের এই ধারণা পাল্টে দিতে মরিয়া আওয়ামীলীগ। তাই নিজ ঘাঁটিকে নিরাপদ মনে করে রিলাক্স থাকতে চাইলে কাল হতে পারে বিএনপির জন্য। কারণ বিগত যে কোন সময়ের তুলনায় বর্তমানে ভালো অবস্থানে রয়েছে আওয়ামী লীগ। বিশেষ করে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ সরকারের ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড আওয়ামী লীগের জয় লাভে প্রধান ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের নেতা কর্মী ও সমর্থকবৃন্দ।

আসন্ন নির্বাচন বিষয়ে চাঁদপুর জেলা পরিষদের সদস্য সাইফুল ইসলাম রিপন বলেছেন, নির্বাচনে লড়ার জন্য আমরা দলসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি গুছিয়ে রেখেছি। দল যদি জননেতা রোমান ভাইকে মনোনয়ন দেন তাহলে আমরা জয়লাভ করে তাহলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তথা বঙ্গরন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে এ আসনটি উপহার দিতে পারবো বলে আমরা আশাবাদী।

তবে জাহিদুল ইসলাম রোমান বলেছেন, রাজনীতিতে রয়েছি দেশ ও মানুষের সেবা করার জন্য। দল যদি আমাকে যোগ্য মনে করেন এবং মনোনয়ন দেন তবেই আমি নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারি। অন্যথায়, দলের সিদ্ধান্তই আমি মেনে নেবে।

Powered by themekiller.com