Breaking News
Home / Breaking News / ফরিদগঞ্জে মহাসড়কে প্রতিবন্ধকতা-দুর্ঘটনা, সওজ নির্বিকার!

ফরিদগঞ্জে মহাসড়কে প্রতিবন্ধকতা-দুর্ঘটনা, সওজ নির্বিকার!

আবু হেনা মোস্তফা কামাল, ফরিদগঞ্জ: ফরিদগঞ্জে আঞ্চলিক মহাসড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে চলছে নির্মাণ কাজ। যানবাহন চলাচলে বিঘ্নসহ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর দায় নির্মাণ কর্তৃপক্ষের- মন্তব্য করেছেন এলাকাবাসী। হাসান টেকনো বিল্ডার্স নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ কাজ করছে। সড়ক ও জনপদ,
চাঁদপুরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা কর্মচারীর উপস্থিতিতেই ওই ঝুঁকিপূর্ণ নির্মাণ কাজ চলছে। যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা দেখেও তারা নির্বিকার। এমন দায়িত্ব বোধহীন কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করছেন এলাকাবাসী ও যানবাহনের চালকগণ। ফরিদগঞ্জ সদরের ফরিদগঞ্জ সেতুর সঙ্গে ওই কাজ চলছে প্রায় ২৫ দিন
পূর্ব হতে।

সরেজমিন, প্রত্যক্ষদর্শী ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে,
চাঁদপুর-ফরিদগঞ্জ-লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের অবস্থিত ফরিদগঞ্জ সেতু। এ সড়কটি প্রচন্ড ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন অন্তত ১০ হাজার যানবাহন
দুইদিকে চলাচল করে। এই সেতুর সংযোগ সড়ক রক্ষার জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে ঠেস দেয়াল (জবঃধরহম ধিষষ)। এর দৈর্ঘ্য একশত মিটার ও উচ্চতা বেইস থেকে ৯ ফিঠ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ওই কাজ শুরু হয়েছে প্রায় ২৫ দিন আগে। তখন যাচ্ছে তাইভাবে কংক্রিট, পাথরের কনা, বালি ও রড সড়কের সাদা দাগ (রোড মার্কিং) ক্যারেজ ওয়ে (রাস্তার ওপর) পর্যন্ত স্তুপ করা হয়েছে। ২-৪ দিন কাজ চলেছে, আবার ২-৪ দিন বন্ধ থেকেছে। এভাবে কাজ চলছে সেখানে। প্রত্যক্ষদর্শী ও সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞজন জানিয়েছেন, সড়কে প্রতিদিন অন্তত ১০ হাজার ছোট/বড় যানবাহন চলাচল করে। এর মধ্যে, ১৫ টন মালবাহী ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান (১০ চাকা), তেলবাহি ট্যাংক লরি, বাস, মাইক্রো, কার, সিএনজি চালিত অটোরিক্সা, মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, রিক্সাসহ অন্যান্য যানবাহন রয়েছে। এ ছাড়া, মাঝেমধ্যে ১৪-১৬ চাকার প্রাইম মুভার লরিও চলাচল করে।

ঢাকা-চাঁদপুর, খুলনা-চট্টগ্রাম থেকে ওই সব যানবাহন
ফরিদগঞ্জ-রায়পুর-লক্ষ্মীপুর-নোয়াখালী-ফেনীসহ পার্বত্য জেলা গুলোর উদ্দেশে সড়কে চলাচল করে। কাজ চলাকালীন অন্তত ৩০/৩৫টি ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটেছে।

কয়েকজন মোটরসাইকেল আরোহী হুমড়ি খেয়ে পড়ে আহত হয়েছেন। সব মিলিয়ে শতাধিক যানবাহন দুর্ঘটনার মুখোমুখি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞজনদের মতে, ঠিকাদার এভাবে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি ও
কাজ করতে পারে না। কাজেরস্থলে জায়গা না থাকলে সড়কের পাশে যেখানে জায়গা আছে সেখানে নির্মাণ সামগ্রী রাখবেন। সড়কের কিছু অংশে বাধ্য হয়ে কাজ করলেও দুইদিকে ‘সাবধান, সড়কে কাজ চলছে’ ইত্যাদি সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড লাগাবেন,
প্লাস্টিকের কোন্ বসাবেন ও দুই প্রান্তে দুইজন সার্বক্ষণিক ট্রাফিক এর মতো দায়িত্ব পালন করবেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সেখানে এমন কিছুই
নেই। সওজ এর কর্মকর্তা-কর্মচারীর সামনেই ঠিকাদার রাস্তায় ঝুঁকি, প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি ও কাজ করছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানিয়েছেন, সড়কের
উত্তর পাশে পর্যাপ্ত জায়গা থাকার পরও ঠিকাদার সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। এটা তারা করতে পারেন না। নির্মাণ সামগ্রী উত্তর পাশের উঁচু জমিতে
রাখা উচিৎ ছিলো। কেনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি ও যানবাহন চলাচল কারীদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলা হলো- এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ
করা প্রয়োজন।

বুধবার বিকালে পথচারী আবদুর রহিম (৪৫) এর সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, প্রায় এক মাস যাবত রাস্তার উপর ইট-বালু-পাথর-রড স্তুপ কইরা রাস্তা বন্ধ করা
হইছে। প্রায়ই দেখি দুর্ঘটনা ঘটছে ও জাম লাগছে।
চলার পথে একটি ট্রাকের গতি ধীর হয়। চালককে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, সারা দেশে কোনো জায়গায় এমন অবস্থা দেখি নাই। এইখানেই দেখলাম। তিনি এ
প্রতিবেদককে প্রশ্ন করে বলেন, এইখান দিয়ে কি সরকারী লোকজন চলাচল করে না।

কাল বুধবার বিকাল প্রায় পাঁচ ঘটিকায় কাজেরস্থলে কথা হয় সওজ এর কার্য্য সহকারী (ওয়ার্ক এসিস্ট্যান্ট) সালমান এর সঙ্গে। সড়কে প্রতিবন্ধকতার বিষয়ে
তিনি বলেন, কাজ করতে হলে একটু সমস্যা তো হবেই। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এ সব বিষয়ে উপসহকারী প্রকৌশলীর সাথে কথা বলেন।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি দাবী করেন, কাজ শেষ হতে আরও ১০/১২ দিন লাগতে পারে।

সওজ এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সড়ক শাখা-২, চাঁদপুর) মামুনুর রশিদকে মুঠোফোনে কল দিলে তিনি বলেন, পাশে জায়গা না থাকায় সড়কে মালামাল রাখতে হয়েছে। বৃষ্টির জন্য একটু বিলম্ব হয়েছে। কাজ শেষ হতে আর বেশিদিন লাগবে না। এর মধ্যে, বেশ কিছু দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর দায় কে নেবে। এমন প্রশ্নে
তিনি উত্তর দিতে পারেননি। প্রসঙ্গত, জানতে চাইলে তিনি বলেন, এক গ্রুপে কয়েকটি কাজ আছে। সব মিলিয়ে ২৪ কোটি টাকার কার্য্যাদেশ দেয়া হয়েছে।
ঠিকাদারের নাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, চাঁদপুরের কাজ সোহেল ভাই করেন।

Powered by themekiller.com