Breaking News
Home / Breaking News / ফরিদগঞ্জে পুলিশ চলে যাওয়ার পর সন্ত্রাসী হামলা, আহত দু’জন

ফরিদগঞ্জে পুলিশ চলে যাওয়ার পর সন্ত্রাসী হামলা, আহত দু’জন

আবু হেনা মোস্তফা কামাল, ফরিদগঞ্জ: জীবনের নিরাপত্তার দাবীতে জাতীয় প্রেসক্লাব এর সামনে ১৩৭ দিন অনশন কর্মসূচী পালন করছেন একটি পরিবার সদস্য। অনশন চলাকালীনই পুনরায় জমি দখল ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগ করেছেন ওই পরিবার সদস্য ফয়েজ আহম্মদ। তিনি দাবী করেছেন তাদের ভোগ দখলীয় সম্পত্তিতে জোর পূর্বক মাটি কেটেছেন ও আবাদী ফসল বিনষ্ট করেছেন প্রতিপক্ষ মিজানুর রহমান, দেলোয়ার হোসেন, লোকমান হোসেন এর দলবল। পুলিশ উপস্থিত হয়ে দুপক্ষকে শান্ত করে ফিরে যান। পুলিশ যাওয়ার পর, ৯৯৯-এ কল দেওয়ার কারণে ফয়েজ আহম্মদ এর প্রতিবেশী জাহাঙ্গীর হাজী ও তার স্ত্রী ঝর্ণা আক্তারকে বেদমভাবে মারধর করা হয়। আহত অবস্থায় তাদেরকে ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। উপজেলার রূপসা (উত্তর) ইউনিয়নের রুস্তমপুর গ্রামে সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটেছে শনিবার সকালে।

ভূক্তভোগী ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গ্রামের ফয়েজ মৃধা (৪৫), শেখ ফরিদ (৪০) ও তাদের মা ফাতেমা বেগম (৬০) এর জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলছিলো দেলোয়ার হোসেন ও লোকমান হোসেন গংয়ের সঙ্গে। শনিবার সকালে ঘটনার সময় ফয়েজ আহম্মদ মৃধাদের দখলীয় ও বিরোধপূর্ণ নীচু জমির পাড়ের মাটি কাটেন ও আবাদী শাক সবজি বিনষ্ট করেন অভিযুক্তরা। বাধা দিতে গেলে ফয়েজ মৃধাকে মারতে তেড়ে আসেন প্রতিপক্ষরা। তাদের কেউ ফয়েজ মৃধার বসত ঘরের সামনে তেড়ে যান। এতে, তিনি ভয়ে নিজ ঘরে আশ্রয় নেন ও সেখান থেকে ফেসবুকে ভিডিও লাইভ করেন- দাবী করেছেন ফয়েজ মৃধা।
ওই সময় তাদের প্রতিবেশী জাহাঙ্গীর হাজী (৩৮) ৯৯৯-এ কল দেন। এতে, ফরিদগঞ্জ থানার এস.আই. রফিক ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। তিনি বিবদমান পক্ষকে শান্ত করেন ও ফয়েজকে থানায় অভিযোগ দায়ের করতে পরামর্শ দিয়ে ফিরে যান। পুলিশ চলে যাওয়ার পর অভিযুক্তরা লাঠিসোঁটা নিয়ে বাড়ি ঢুকে জাহাঙ্গীর হাজীর ওপর চড়াও হয় ও বেদমভাবে মারধর করে। তার স্ত্রী ঝর্ণা আক্তার (৩০) এগিয়ে গেলে তাকেও মারধর করা হয়। তাদের মাথায়, নাকে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম হয়েছে। সন্ত্রাসী হামলার জন্য অন্যদের সঙ্গে লোকমান হোসেন এর ছেলে মিজান (২৬), ভাতিজা খোকন (৪৫), স্ত্রী পান্না (৩৮), রব হাজীর ছেলে মো. বাসার (৪২), সোহেলসহ কয়েক জনকে দায়ী করেছেন ফয়েজ মৃধা। তিনি আরও বলেন, প্রতিপক্ষরা আওয়ামী লীগ এর প্রবাবশালী নেতার সাহসে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড অব্যাহত রেখেছেন। জাহাঙ্গীর হাজী ও তার স্ত্রী ঝর্ণা আক্তার বর্তমানে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এ ব্যপারে এলাকার কয়েক জনের সঙ্গে কথা হয়। তারা আশংকা প্রকাশ করে বলেছেন, এখানে যেমন পরিস্থিতি চলছে এতে বড় রকমের দুর্ঘটনার আশংকা বিদ্যমান। অভিযুক্তদের মধ্যে লোকমান হোসেনকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি।

এ ব্যপারে মুঠোফোনে জানতে চাইলে এস.আই. রফিক বলেন ৯৯৯-এ কল দিলে আমি রুস্তমপুর গিয়ে উভয় পক্ষকে শান্ত থাকতে ও অভিযোগ নিয়ে ফয়েজ মৃধাকে থানা যেতে বলি। আমি ফিরে আসার পর কি হয়েছে জানি না।

ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবদুল মান্নান বলেন, রুস্তমপুর গ্রাম থেকে ৯৯৯-এ কল পেয়ে এস.আই. রফিককে পাঠাই। তারপর, যদি মারধর করা হয়ে থাকে তা হলে অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, জমিজমা রক্ষায় বৈধ নিশ্চয়তা, জীবনের নিরাপত্তা ও মিথ্যা তদন্ত রিপোর্ট বাতিলের দাবীতে ফয়েজ মৃধা, শেখ ফরিদ মৃধা, তার মা ফাতেমা বেগম ও ফরিদ মৃধার স্ত্রী পর্যায়ক্রমে ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাব, চাঁদপুর প্রেসক্লাব, ও সর্বশেষ জাতীয় প্রেসক্লাব এর সামনে অনশন করছেন ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি ও ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাব-এ একাধিকবার সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

Powered by themekiller.com