Breaking News
Home / Breaking News / মানবতার প্রতীক ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী

মানবতার প্রতীক ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী

ঘুমাতে পারছি না! কেবলি লোকটার কথা মনে হয়।বাঁচবে তো? হ্যাঁ ছবির এই অজ্ঞাতনামা লোকটার কথাই বলছি।গত ১০/১৫ দিন ধরে তার দিন কাটছিলো চাঁদপুরের শহীদমিনারঘেষা মুক্তি যোদ্ধা সড়কের পাশে।আমরা প্রতিনিয়ত হাজার হাজার লোক চলাচল করি।কিন্তু কেউ তার খোঁজ নেই না।উত্তর দক্ষিনমুখি হয়ে লোকটা মরার মতো শুয়ে কখনো খেয়ে কখনো না খেয়ে কাটিয়ে দিচ্ছিলো দিন।ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছিলো তার শরীর।অবশেষে তার দিকে ২/৩ ধরেই নজর দিলেন প্রবীণ রাজনীতিক আমাদের শ্রদ্ধাভাজন সফিউদ্দীন ভাই।ভাবলেন হয়তো সে ভালো হয়ে যাবে।আপনা আপনিই চলে যাবে বাড়ি! কিন্তু না তা হচ্ছে না! সোমবার রাত ১০ টার পর দেখলেন তার নড়াচড়া কমে গেছে।কি করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না।অবশেষে আমায় ফোন। বল্লেন ইকবাল তুই কই? বল্লাম প্রেসক্লাবে।কেন ভাই? বল্লো একটা লোককে বাঁচা।ভাই তুই আয় নাহয় কাউকে পাঠা শহীদ মিনার পাশে।আর যদি তোরা কেউ না আসছ তাহলে ডিসি এসপিকে তুই একটু বল ভাই।আমি বল্লাম টেনশন করো না ভাই।মোবাইল করলাম আমার পত্রিকার সাংবাদিক অমরেশককে।সে খুব অল্প সময়েই জায়গামতো হাজির হলো।ছবি নিলো।ঐ সময় একে একে হাজির হলেন রাজনীতিক রণজিৎ রায় চৌধুরী,সাংবাদিক জিয়াউর রহমান বেলাল ভাইসহ ক জন। রনজিত দা ফোন করলেন থানায়। অসি পুলিস ফোর্স পাঠালেন।অবশেষে তার ঠাই হলো ২৫০ শয্যা হাসপাতালে।মুখে কথা নেই,হাত পা কাঁপছিলো।যায় যায়! যাক ডাক্তাররা স্যালাইন পুস করলেন।নিথর দেহে এলো প্রাণ। কাল রাতে দেখতে গেলাম।আমায় দেখে প্রথমে ভয়ে তাকালো তারপর মাথায় হাত দিতেই হাসি।কিন্তু মুখে কথা বলতে পারছে না।নামও বলতে পারছে না। মাথা নাড়লো পড়াশুনা জানে।রনজিত দা আমি হাতে কলম দিলাম।কিন্তু লিখতে পারলো না।আমি যাওয়ার পর তার ময়লা বিছানাটা পরপাটি করতে ধুম পড়লো।আমি তত্ত্ববধায়ককে ফোন দিলাম ফোন দিলাম আরএমও কে।অনুরোধ রাখলাম তাদের কাছে- আপনারা দয়া করে এই অজ্ঞাতের দিকে একটু আলাদা নজর দিন।বলেছেন সব রকম ব্যবস্থা করবেন।তারপরও আপনাদের বলি- তাকে একবার দেখে আসবেন! তার আত্মীয় পরিজনকে কেউ চেনেন কিনা একটু খোঁজ নিন।হয়তো কোন মা কোন বাবা কিংবা তার সন্তান স্ত্রী ভাই বোন আত্মীয়রা তার জন্য চোখের পানি ফেলছো।! আপনার আমার একটু সহানুভূতি তাকে প্রাণ দিতে পারে।খোঁজে দিতে পারে আত্মীয়কে! হাসপাতালের খাতায় লিখা অজ্ঞাতনামা নামটি মুছে দিতে পারে।আমি ধন্যবাদ দি সফিউদ্দীন ভাইকে,রনজিত দা কে অমরেশকে,বেলাল ভাইকে আর যারা ছিলো তাদের,চিকিৎসক নার্সদের এবং পুলিশ ভাইদের।হে আল্লাহ ঘুম থেকে জেগে যেন শুনি তার পাশে তার আত্মীয় স্বজনেরা এসেছে এবং সে কথা বলে।!
সংগ্রহে ঃ এম. আর হারুন

Powered by themekiller.com