আবু মুছা আল শিহাবঃ
চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে পরপর ২ শিক্ষকের বেত্রাঘাতে গুরুতর আহত হয়েছে প্রতিবন্ধী এক ছাত্রী।
ঘটনাটি ১৪ মার্চ মঙ্গলবার বেলা ২টায় চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলার খিলা বাজার স্কুল এন্ড কলেজে ঘটে।
জানাযায়, উপজেলার রায়শ্রী দক্ষিণ ইউনিয়নের বেরকী মজুমদার বাড়ির প্রবাসী নজরুল ইসলাম কিরনের প্রতিবন্ধী কন্যা জান্নাতুল নাইম নিঝুম (১৩) খিলা বাজার স্কুল এন্ড কলেজে ৭ম শ্রেণীতে অধ্যায়নরত। ঘটনার দিন টিপিন টাইমের পর স্কুল মাঠ ও যাতায়াতের পথে ঘটনাটি ঘটে।
এবিষয়ে আহত ছাত্রী নিঝুম বলে, ৫ম ঘন্টা শেষে আমি স্কুলের মাঠে নামলে গণিতের শিক্ষক মজিবুর রহমান স্যার আমাকে অসংখ্য বেত্রাঘাত করে। পরে আমি শরীরের যন্ত্রনা নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে স্কুলের পূর্বপাশে রাস্তা উপরে দৌঁড়ে এসে পথ আগলে দাঁড়ান আমাদের ক্লাশের শিল্প ও সাংস্কৃতি বিষয়ক শিক্ষক কাউসার হোসেন স্যার। তিনিও বেত দিয়ে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন আর বলেন, বল কথা শুনবি, যা বলি তা করবি। এসময় স্কুলের আয়া মায়া রাণী এসে আমাকে উদ্ধার করে আমার বাড়িতে মায়ের হাতে তুলে দেন। কেন এভাবে মারা হলো- এমন প্রশ্ন করলে সে বলে, মজিব স্যার কেন মেরেছেন তা আমি জানিনা আর কাউসার স্যার আমাকে বাজে কথা বলতেন এবং বিভিন্ন সময় কুপ্রস্তাব দিতেন। আমি নারাজি থাকায় তিনি প্রতিনিয়তই খারাপ ও ভয়ভীতিমূলক আচরণ করতেন। আমি খুব ভয় পাই। আমাকে কাউসার স্যার অনেক মেরেছে। আমার অপরাধ আমি ওনার কথা শুনিনি। ওনাদের কারনে আমার আর লেখাপড়া করা হবেনা। আমি এটার বিচার চাই। যে শিক্ষক জীবন গড়ার কারিগর আর সে শিক্ষকের কাছেই ছাত্রী পায় প্রেমের প্রস্তাব। এমন শিক্ষক দ্বারা আমাদের সুন্দর আগামী অন্ধকারাচ্ছন্ন হবে বলে সে জানায়।
আহত ছাত্রীর মা মুকছুদা বেগম বলেন, ঘামাক্ত ও রক্তাক্ত অবস্থায় আমার মেয়েকে স্কুলের আয়া মায়া রাণী আমার কাছে নিয়ে আসে। আমি মায়া রাণীকে জিজ্ঞেস করলে মায়া রাণী বলে, মজিব স্যার ও কাউসার স্যার নিঝুমকে মেরেছে। কেন মেরেছে তা আমি জানিনা। আমি তাকে বাড়ি পৌঁছে দেয়ার জন্য এসেছি।
একথা বলে মায়া রাণী চলে যায়। আমি আমার মেয়েকে সাথে নিয়ে বিষয়টি ম্যানেজিং কমিটি ও এলাকাবাসীকে জানাই। তারা এমন ঘটনার বিচার করতে পারবেনা বলে আমাকে নিরাশ করে। আমি অপারগ হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করি। তিনি আরও বলেন, বিষয়টি নিয়ে প্রথমে থানায় গিয়েছি। ওসি আমার অভিযোগটি গ্রহন করেননি। আমার মেয়ের শিক্ষা জীবন ওরা শেষ করেছে আমি তাদের বিচার চাই। মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ও স্থানিয় সংসদসদস্য মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম মহোদয়ের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
এবিষয়ে শিক্ষকগন তাদের বক্তব্য দিতে রাজি নন বলে জানান।
এলাকাবাসী বলেন, ঘটনার সত্যতা থাকলে অবশ্যই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট প্রসাশনের ব্যবস্থা গ্রহন করা উচিত। তদন্ত স্বাপেক্ষে দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের তাগিদ প্রদান করেন তারা।