Breaking News
Home / Breaking News / ইলিশের পোনা জাটকা রক্ষায় মেঘনা পদ্মায় দু’মাসের অভয়াশ্রম

ইলিশের পোনা জাটকা রক্ষায় মেঘনা পদ্মায় দু’মাসের অভয়াশ্রম

মোহাম্মদ সিন্টুঃ
চাঁদপুরসহ ৪টি ইলিশ প্রজনন কেন্দ্রে মার্চ এপ্রিল দু’ মাস অভয়াশ্রম ঘোষণা করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী ইউনিয়নের প্রায় ৬০ কিলোমিটার এলাকায় মেঘনা ও পদ্মা বক্ষে কোনো প্রকার জাল ব্যবহার, কোনো প্রজাতির মাছ শিকারসহ মওজুদ করা সম্পুর্নভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। প্রতি বছর মার্চ এপ্রিল দু’মাস ইলিশের পোনা জাটকা রক্ষায় চাঁদপুরের নদী নিয়ন্ত্রিত কোস্টগার্ড, পুলিশ প্রশাসন, মৎস্য বিভাগসহ উপজেলা প্রতিনিধিগণ বেশ তৎপরতার সাথে এক যোগে জাটকা সংরক্ষণ করার অঙ্গিকারবদ্ধ। চাঁদপুর মৎস্য বিভাগ সুত্রে জানা যায়, চাঁদপুরের মেঘনা ও শরীয়তপুরের পদ্মার ইলিশের চাহিদা বিশ্বজুড়ে। সুস্বাদু ইলিশ রপ্তানি করে বাংলাদেশে ব্যাপক রাজস্ব আদায় হয়ে থাকে। প্রতি বছর মার্চ এপ্রিল দু’মাস ইলিশের পোনা জাটকা রক্ষা করা হলে প্রায় ত লাখ মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদন হয়ে থাকে। সুত্রে আরো জানা যায়, ইলিশের পোনা জাটকা রক্ষায় চাঁদপুর কোস্টগার্ড, পুলিশ প্রশাসন দিবারাত্রি বিস্তৃর্ণ নদী এলাকায় বিশেষ টহলের মধ্যে থেকে প্রানপণ চেষ্টা চালিয়ে যায়। চাঁদপুরে প্রায় ৪৭ হাজার জেলে পরিবার রয়েছে। দু’ মাসের অভয়াশ্রমকালে এ সব জেলেদের সরকারীভাবে খাদ্য সহায়তা করা হয়। সরকারী তালিকাভুক্ত কার্ডধারী জেলেরা ৩০ কেজি চাল, ডালসহ নগদ অর্থ পেয়ে থাকে। এরই মধ্যে কিছু অসাদু জেলে গভীর রাতে মেঘনা পদ্মায় নিষিদ্ধ কারেন্টজাল দিয়ে জাটকা নিধন করে থাকে। এসব জাটকা বরফ যোগে এক শ্রেণীর দাদনদার জেলা উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছে ব্যাপক অর্থ। বিশেষ করে প্রতি বছর অক্টোবর মাসে সাগরের নোনা জল থেকে মেঘনা পদ্মায় মা ইলিশ ডিম ছাড়তে মিঠা পানিতে চলে আসে। এ সময়ের মধ্যে ২২ দিনের অভয়াশ্রম ঘোষণা করা হয়। ইলিশের পোনা জাটকা রক্ষায় চাঁদপুরসহ চর আলেকজান্ডার,রামগতি ও আন্দারমানিক ৪টি প্রজনন কেন্দ্রে কোস্টগার্ড, মৎস্য বিভাগ ও পুলিশ প্রশাসন বেশ সক্রিয় থাকে। বিশেষ করে চাঁদপুরের মিঠা পানির ইলিশের চাহিদা দেশ বিদেশে ব্যাপক চাহিদা থাকায় চাঁদপুর ও আলেকজান্ডার প্রায় ১’শ কিলোমিটার নদী এলাকাকে অভয়াশ্রমের আওতায় আনা হয়। এ সময়ের মধ্যে কোনো জেলে নদী বক্ষে জাটকা নিধন করাকালীন সময়ে আটক হয়ে থাকে। এদের জেল জরিমানা করা হয়ে থাকে। নৌকা ও নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল পুড়িয়ে দেয়া হয়। গত বছর প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ থাকা স্বত্তেও কিছু অসাধু জেলে রাতের অন্ধকারে জাটকা শিকার করে বিভিন্ন খালে তা সংরক্ষণ করে বরফযোগে ড্রাম ভর্তি করে কৌশলে পাচার করে ইলিশের পোনা নির্বংশ করে দেয়। এতে করে দেশের জাতীয় সম্পদ বিনষ্ট হয় বলে জানা যায়। চলতি অভয়াশ্রমকালে চাঁদপুরের কোস্টগার্ড, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, মৎস্য বিভাগ ও সচেতন মহল বেশ সোচ্চার রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে জাটকা সংরক্ষণে প্রত্যেক ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও জনপ্রতিনিধিগণ ভুমিকা পালন করবে বলে জানা যায়। ইলিশের পোনা জাটকা রক্ষা সফলভাবে পরিচালিত হলে দেশের রাজস্ব আদায় হবে বলে সচেতন মহল মতামত প্রকাশ করেন। সেই সাথে জাটকা সংরক্ষণে যারা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে তাদের প্রতিও সাধুবাদ প্রকাশ করা হয়। বিশেষ করে চাঁদপুরের আলুরবাজার, ঈশানবালা ফেরী ঘাট, আখনের হাট, কালীগোলা, জনতাবাজার, কাটাখালী, চরভৈরবী ও সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর,আনন্দ বাজার, মতলবের মোহনপুর, ষাটনল, আমিরাবাদ, এখলাসপুরসহ কয়েকটি অঞ্চলে প্রশাসনের সদয় দৃষ্টি অব্যাহত থাকলে চাঁদপুরে ইলিশ সংরক্ষণ সফল হবে বলে সচেতন মহল আহবান জানান।

Powered by themekiller.com