#সন্ধিক্ষণে
— স্নেহাশিস পালিত
০৯-০৯-২০২২
যখন কোনকিছুই ঠিকঠাক হয় না,
বেসুরো জীবন এগিয়ে চলে অচেনা ছন্দে…
ক্লান্তি দোসর করে একঘেয়ে পহর কাটে –
নিঃসীম অন্ধকারে আলোক বিন্দুর সন্ধানে।
অবসাদ সর্বস্ব জীবনের রোজনামচায় –
লেখা হয় ব্যর্থতার নীরস উপাখ্যান…
হয়তো মনে হবে এই বুঝি ভোর হবে,
তিমির বিদারি তপনের পবিত্র রশ্নিপাতে।
অব্যক্ত যন্ত্রণা অস্তিত্বের প্রশ্ন রেখে যাবে…
সঙ্গীহীন সমুদ্রের গভীরতা চোখ রাঙাবে,
অচেনা পরিধিতে উন্মুক্ত বাতাসের খোঁজে –
আকুল আবেদন রবে ইষ্টদেবতার কাছে!
মানসিক চঞ্চলতা, উদ্বেগ মূলধন করে –
ছুটে চলা উদ্ভ্রান্তের মতো লক্ষহীন পথে…
খুঁজে ফেরা অন্তিম অবলম্বন জীবন কিনারে,
রুক্ষ মনুষ্যনীতির অসম প্রতিদ্বন্দ্বিতায়!
স্থান — খড়্গপুর, পঃ মেদিনীপুর/০৯-০৯-২০২২
সংরক্ষিত@স্নেহাশিস পালিত
——————————————–
শিরোনাম -হিজলের প্রেমে মাতোয়ারা মন
কলমে- রত্না চৌধুরী
০৯/০৯/২০২২
হালকা গোলাপি আভায়
দাঁড়িয়ে থাকা হিজল গাছ
ফুলে ফলে মোহময়।
রাতে ফুটছে!
সকালের আলোয় ঝরছে!
সুঁই সুতোর ভাঁজে ভাঁজে
ঝরা ফুলের মালা গাঁথি
আপন মনের আবেশে।
ঝরা হিজলের নরম গালিচায়
মুখোমুখি বসে
কবিতা আওড়াই মনে মনে
চোখের ভাষায় তারে এনে।
খোঁপায় গুঁজানো হিজল ফুলে
মায়াবী গন্ধ জাগে
রূপসাজ ছড়িয়ে পড়ুক
নতজানু হিজলের বাগে।
মাতাল মাদকতাময় মায়ায়
মাতোয়ারা চারদিক
কি অদ্ভুত ভালোলাগা
জলে ভাসছে হিজলের রূপ!
——————————————–
সেই দিনগুলো
দীপঙ্কর দত্ত
এতক্ষণ হুঙ্কার ছেড়ে,
মেঘটা এখন পালাচ্ছে
আকাশটাকে খালি করে।
হুঙ্কারই সার,
একফোঁটা জল ঝরলো না।
আকাশ যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলে,
গুটিগুটি করে সূয্যিমামা উঁকি মারলে।
মেঘের এই দস্যিপানা দেখে,
মনে পড়ে সত্তরের দশকের কথা।
বলা নেই কওয়া নেই
অচেনা কিছু ছেলে ছোকরা
বোমা ফাটাতে ফাটাতে পাড়ার গলি ধরে যেত,
আমরা জানালা বন্ধ করে
ঘরের ভিতর সেঁধিয়ে থাকতুম,
দোকানের ঝাঁপ বন্ধ করে, হারু দা ধূতির কাছা তুলে দৌড় লাগাতো বাড়ির পানে,
আবার আধ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই,
সব স্বাভাবিক।
তখন আবার লোকের আনাগোনা,
পুলিশের একবার টহল মেরে
চলে যেত,
ফিসফাস করে সবাই বলতো,
নকশাল রা এসেছিল।
এসব ছিল সে আমলে নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা,
পরে অবশ্য এসব গা সওয়া হয়ে গিয়েছিল।
সর্বাধিকারী লেন ফিরে যেত স্বমহিমায়,
সরকার বাড়ির রোয়াকে
পাড়ার বুড়োরা মাততো আড্ডায়।
৯/৯/২০২২
কলকাতা।
——————————————–
বড্ডো ইচ্ছে করে
– শিহাব ইকবাল
বড্ডো ইচ্ছে করে
ভালোবাসার বইতে নদী
সকাল-সন্ধ্যা নিরবধি
দেশের সকল ঘরে।
বড্ডো ইচ্ছে জাগে
মানবপ্রেমে করতে মহৎ
হিংসা-দ্বেষে নিত্য বৃহৎ
চলতি বিশ্বটাকে।
স্বপ্ন দু’চোখ জুড়ে –
বঞ্চিতদের থাকতে মিতা
প্রেম-প্রীতিময় সুখপাখিটা
আসবে কখন উড়ে।
ভাবছি দিবস-রাতি
‘সবার আগে মানুষ সত্য’-
আনতে এমন মনুষ্যত্ব
জাগবে কখন জাতি?
ইচ্ছে আমার নদী,
ঢেউয়ের পাখায় নিত্য উড়ে
ভালোবাসার সমুদ্দুরে
ছুটছে নিরবধি।
——————————————–
বুনো আমি
রহমান সিদ্দিক
বুনো আমি; সবুজ পাতা ছুঁই
মাটি চিরি; আগলে রাখি ভুঁই।
কাদাখোঁচার সঙ্গী আমি রোজ
খুঁচিয়ে পাই গুপ্তধনের খোঁজ।
ফুলিরে তুই সঙ্গী হবি,আয়?
মানুষ নাই; যবগুলো সব খায়।
কাউন চাউলে ভরছে সারা খেত
ঘরের পাশে হইছে বাঁশ আর বেত।
তোর জন্য ঘর বানাবো, সই
মাচা পাতবো, বাঁশের দেবো মই।
সই হবি না? সায় দিয়ে হাত ধর
বুনো আমি ; করিস না তুই পর।
খেতখামারে আঁকি নতুন বাঁক
ফসল বুনি, শুনি জমির ডাক!
আয় না ফুলি? ডাকছে জমি খেত
পাড়ি দেবো জবর নদীর রেত!
কষ্ট এলে আছে না, দুই হাত?
খাটবো বেজায়, সারাটা দিনরাত!
——————————————–
৷৷ মায়ের খোঁজে ৷৷
…………………………………………….
গৌতম মণ্ডল
ও মেঘ, তুই কোথায় যাবি ?
কোন্ দেশে , কোন্ দিকে ?
এনেদিতে পারিস আমার —-
হারিয়ে যাওয়া মাকে ?
নাম না জানা , দেশ – বিদেশে
যখন – তখন ঘুরিস ৷
আমার মায়ের খোঁজ পেলে তুই
খবর টা ঠিক দিস ৷
আমার মা ঠিক , মায়ের মতো
মায়ায় ভরা আঁখি ৷
একটু চোখের আড়াল হলেই
করত ডাকা – ডাকি ৷
কাছে গেলেই বলত আমায়
“কোথায় ছিলি ? সোনা” ?
এখন আমি ডাকছি মাকে
দেয় না সাড়া মা !
গেল বছর , ভাসলো নদী
বান এল এই দেশে ৷
মা যে কোথায় হারিয়ে গেল
নেই তো মা আজ পাশে ৷
এখন আমি একলা ঘরে
মায়ের ছবি আঁকি ৷
আজ কেউ ডাকনা মায়ের মতন
‘খোকা’ …..ব’লে ডাকি !
ও মেঘ তুই , আকাশ জুড়ে
ঘুরিস নানান্ দিকে ৷
এনে দিতে পারিস আমার
হারিয়ে যাওয়া মাকে ?
মেঘ বলে – “ওরে, শোনরে বাছা
মা কি কভু হারায় ?
মায়ের আশিস ছড়িয়ে আছে
শ্যাম বনানীর ছায়ায় ৷
মায়ের জন্যে মনখারাপে
কাঁদিস কেন বোকা ?
বনের পাখি নাম ধ’রে তোর
ডাকছে তোকে খোকা…
কাঁদিসনে আর চোখ মুছেফ্যাল
মা আছে তোর সাথে ৷
আকাশজুড়ে মেঘের খেলায়
তারায় ভরা রাতে ৷
বিশ্ব – ভুবন এই মাটিতেই
ছড়িয়ে আছে মা ৷
চলতে পথে সকালবেলায়
শিশির ভেজায় পা ৷
দ্যাখ্ চেয়ে দ্যাখ্ আলোর আকাশ –
সোনার বরণ গা !
কাশ ফুটেছে নদীর ধারে
আসছে মা দুগ্গা !
মেঘের কথা শুনে খোকা
অবাক চোখে দ্যাখে —
মেঘ চলেছে কুমোরটুলি
আনতে জগৎ-মা কে ৷
তাং -০৯/০৯/২০২২
দাসপুর, ঘাটাল, পশ্চিম মেদিনীপুর ( W.B )