শ্রাবণের প্রথম দিন
সাগর আহমেদ
আজ শ্রাবণের প্রথম দিন । অথচ
আকাশে মেঘের ফিঞ্চ পাখিরা কিছুতেই উড়ছে না ।
মাঝে মাঝে ঝিরিঝিরি বর্ষণে ভিজলো কি কদমের
প্রথম যৌবন ? আংশিক বর্ষণে অতৃপ্ত মাছরাঙা উড়ে
গেলো নতুন কোনো নলখাগড়ার বনে ।
মুসকিল! আমি মাছরাঙা নই । মানব জনম এমনি কলন্ক , বারবার ভালবাসার
ভূখণ্ড বুক বদলাতে পারে না । মেঘেরা মরু মেঘ-
বর্ষণ জানেনা । ফারাক্কায় মরণ বাঁধে অন্য নারীদের
সাথে ভরা যৌবনা তিস্তাও বাঁধেনি তার এলোচুল
আর । কিছুটা বৃষ্টিতে ভ্যাপসা গরম বাতাস অঝোর
শ্রাবণের তৃষ্ণা জাগায়। অথচ জলবায়ু পরিবর্তন
-কবিকে বিষন্ন করে দেয়। অথচ আজ ভিজে
যাবার দিন ছিলো । সমুদ্র আজ থমথমে । ৯ নম্বর
বিপদ সংকেতে রুদ্ধ আকাশ বাতাস ।
এসো শ্রাবণ, এ সকল উটকো ঝামেলা অকপটে
ছুড়ে ফেলে পদ্মফোটা নীল জলে অঝোরেই ঝাঁপ দেই।
ফিরে আসুক ভরা গাঙ্গে, ভরা বর্ষায় কৈশোরের ডুব সাঁতারের দিনগুলো ।
আহ্ বর্ষা,
আহ্ শ্রাবণের শীতল ধারা !
আহ্ আবার ভেজাও তুমি ।
——————————————–
শিরোনাম–সারাংশ
কলমে–শম্পা চট্টোপাধ্যায়
১৬/০৬/২০২২
বুড়িগঙ্গার কিনারায় দাঁড়িয়ে
নদীর গভীরতার মধ্যে লুকানো শোক দেখছিলাম গোপনে সেদিন,
হাজার কাটাকুটির পরও ধ্বংসের খিদে মেটেনি কোনো কালেই,
পরাজিত হয়েও বহুবার ভিন্নতর তৃপ্তি মাখা অধরা শুকিয়ে ক্ষত গুলোর আগুন সমারোহে
অধিকারের তালিকা থেকে বাছাই করেছে সারাংশ,
গতকালের ক্লান্তিরা আড়মোরা ভাঙতে ভাঙতে উঠে বসে
তারপর রুটিন বাঁধা শহরকে আবারও জাপটে ধরে,
হামাগুড়ি দিয়ে প্রবেশ করে ধ্বংসস্তূপে
দাঁড়ায় হাতে নিয়ে বিজয় নিশান।
ভাবনা গুলো একলা হাঁটে পথ
একটা বিন্দুতে ঘিরে দাঁড়ায় অন্ধকার উদাসীন অভিমান,
সৌধের প্রতিবিম্বের ছায়ায় বহুদিনের অভ্যাস গুলো-
ঘুড়ির সুতোর মতো জট পাকিয়ে তাকায়
চোখের সামনে একটু একটু করে বদলে যায় প্রতীক্ষার রূপ,
চেনা বিষাদ আনন্দ আধ পোয়া সুখ!
তোমার চাওনি ও কবিতার স্বভাব!
——————————————–
কবিতার নামঃ শেষ কথাটি বলা হলোনা
কবির নামঃ মোঃ ফরহাদ হোসেন
তারিখঃ ১৬/০৬/২০২২ ইং
##
যেদিন তুমি বিদায় নিলে ;
চার প্রজন্মই উপস্থিত ছিল ।
আকাশ ভেঙে বিদ্যুৎ পড়লো
প্রকৃতি নীরব নিস্তব্ধ হলো
পাখিরা লুকালো পাতার আড়ালে ।
তুমি গেলে কাঁধে উঠে
আমি নিষ্পলক তাকিয়ে রইলাম —-
শেষ কথাটি বলা হলোনা —–।
মেলান্দহ,জামালপুর,ময়মনসিংহ।
——————————————–
“দুঃখ নীলকাব্য”
__নীল__
১৬.০৬.২০২২
ঝরা প্রেমে,
ঝরেছে জীবনের স্বর্ণালি সময়,
ঝরেছে সবগুলো সোনালী বসন্ত !!
গোধূলির বক্ষ চিরে সিঁদুর রঙা হয়েছে
পশ্চিমাকাশ,
নীলিমার নীল থেকে ঝরেছে অঝোরে বৃষ্টি,
সাতরঙা রঙধনু ঝরে আসমানী নীলে সেজেছে সোনালি কিরণময় বর্ণিল দিগন্ত ।।
ঝরা প্রেমে,
অকারণে সবুজবীথি ঝরেছে,
নক্ষত্রলোকের বুক থেকে চাঁদ-তারা ঝরেছে,
পূর্ণিমার চাঁদ থেকে ঝরেছে ঝলসানো জ্যোৎস্না,
রজনীর গা বেযে ঝরেছে অমানিশা
পৃথিবী হয়েছে বিদঘুটে অন্ধকার ।।
ঝরা প্রেমে,
ঝরে গেছো তুমি আমার স্বপ্নিল জীবন থেকে !!
ঝরেছে সেই মায়াবী মুখ,
টানাটানা চোখ,
ঝরেছে সেই গোলাপি ঠোঁটের গভীরতম
শিহরিত চুম্বন ।।
ঝরেছে, তোমার সুডোল বুকের ভাঁজে
লুকিয়ে থাকা ছোট্ট তিলের কালো আস্তরণ৷!!
ঝরা প্রেমে যুগে যুগে,,
ঝরেছে শিশু,
ঝরেছে যুবা,
ঝরেছে বৃদ্ধ,
আরও কতশত প্রাণবন্ত জীবন !!
ঝরা প্রেমে,
সাহিত্যিকের সাহিত্য ঝরেছে,
ঝরেছে কবিতার ছন্দ,
কবির কবিত্ব,
হুইস্কির বোতল থেকে ঝরেছে রঙিন পানীয় জল !!
ঝরা প্রেমে,
শুধু, লেখকের কলমের ডগায়,
দিস্তা দিস্তা সাদা কাগজের পাতায়
সৃষ্টি হয়েছে,
অনন্ত যুগের,
অনন্তকালের,
বিষময় দুঃখ বিলাসী, দুঃখ নীলকাব্য !!
__নীল কবিতা__
——————————————–
কবিতা – আষাঢ়স্য প্রথম দিবসে
স্বপন কুমার রুইদাস ১৬/৬/২২
বর্ষার নুপুরধ্বনিতে আষাঢ়স্য প্রথম দিবসে,
প্রথম কদমফুলের স্পর্শ মনে আসে!
জ্বলে তার আলো কল্পনার রূপসাগরে
ত্রিকালজয়ী কামনা ; রক্তকণার সহজ আদিমতায়,
জেগে ওঠে অন্তরঙ্গতম আলিঙ্গনের প্রমত্ততায়।
হৃদয়াকাশে এঁকেছি শ্রাবণী রূপসীর শ্রীমুখ ,
চন্দ্রমুখী গগনবৃত্তে আমি চাইলেই পূর্ণিমা!
নৌকা খুলেই ভাসা যায় হৃদ-সাগরে,
কণামাত্র রশ্মির স্ফুরণে স্বর্গীয় অনুভব
কদমফুল বৃষ্টির নির্জনে রেখেছি তারে ।
——————————————–
অসুখ
সুশান্ত কুমার ঘোষ
যমের চাতালে বসত বাড়ি গড়ে
দাপিয়ে বেড়ায় দৃপ্ত অহংকারে!
পলে পলে বাড়ছে নেশার ঘোর
জীবন এখন মস্ত অহং খোর!
চেয়ারটাতে বসেই বাজায় বুক
খাচ্ছে গিলে আত্মরতির সুখ!
আকাঙ্ক্ষাকে চোব্য চূষ্য করে
অহংটাকে চিবোয় মোহের ঘোরে!
আজ জীবনের বীভৎস অসুখ
মরার পরেও দেখছে না কেউ মুখ!
তবুও মোহ নিত্য নতুন ফাঁদে
অহংটাকে ভীষণ কষে বাঁধে!
——————————————–