তনয়া
মাহফুজা জান্নাত
আমি স্বপ্ন দেখেছিলাম দু’চোখ রাঙিয়ে,
পড়াশোনা করে অনেক অনেক বড়ো মানুষ হবো,
দেশ সমাজের জন্য ভালো কিছু একটা করবো;
আমি ছিলাম মা বাবার খুব আদরের তৃতীয় সন্তান;
খুব শীঘ্রই আমি ষোড়শী রূপের বন্যায় ভাসলাম;
স্রষ্টা আমায় উদার চিত্তে রূপ লাবণ্য দিয়েছিলেন;
পড়াশোনায়ও খুব একটা মন্দ ছিলাম না,
অধ্যাপনায়ও কোন রকমের অবহেলনা ছিল না।
দরিদ্র ঘরের মেয়ে হয়ে জন্মালে যা হয়, আমারও হলো;
একদিন পাশের গ্রামের জেলের ছেলের সঙ্গে আমার বিয়ে হলো;
রূপে গুনে আমার বরটি মোটেও মন্দ ছিল না,
তার নদীতে মাছ ধরা আয় থেকে সংসার যুদ্ধ চলতে লাগল;
রাতে মাছ বিক্রি করে ক্লান্ত দেহে বাড়ি ফিরলে,
আমি ভালোবাসার হাতটি বাড়িয়ে দিতাম তাঁর দিকে।
ভালোবাসার মধ্য দিয়ে সময় খুব ভালোভাবেই কাটছিল,
ভালোবাসার ফসল হিসেবে পেলাম তনয়া তমাকে,
তাকে পেয়ে জীবন যেন স্বার্থক হলো, মনে করলাম।
তবে আমার অতৃপ্ত বাসনাগুলো আজো জ্বালাতন করে,
পড়াশোনার মাঝপথেই যে ইতি টেনেছিলাম,ভাবায়;
আমি কঠিন প্রতিজ্ঞায় তৎক্ষণাৎ আবদ্ধ হলাম,
আমার এই তমার মধ্য দিয়ে নিজেকে আবিষ্কার করবো,
আমাদের কঠিন ত্যাগ আর পরিশ্রম কাজে লাগলো,
আজ সে এক প্রতিষ্ঠিত বড়ো ডাক্তার,সমাজ সেবিকা!
আমি আজ এক গর্বিত, সুখী সন্তানের মা!