Breaking News
Home / Breaking News / কবি ইতি ঘোষ এর গল্প ” নারী শক্তি “

কবি ইতি ঘোষ এর গল্প ” নারী শক্তি “

গল্প — নারী শক্তি
কলমে — ইতি ঘোষ
ওরে বাপ রে বাপ এই বাড়ি থেকে এবার কাজ ছেড়ে দিয়ে দেশে চলে যাব । আর এখানে থাকব না । এই বয়সে এতো ঝক্কি ঝামেলা আর ভাল লাগে না বাপু। ঘর ঝাড়তে ঝাড়তে বিনি পিসি বকবক করেই চলেছে দেখে দেবমাল্য জিজ্ঞাসা করে কি হয়েছে গো বিনিপিসি ? বিনীতা ঝংকার দিয়ে বলে সেই কোন কাল থেকে এ বাড়িতে দেখে আসছি এই বাঙাল ঘটির যুদ্ধু ।‌ এই যুদ্ধু আর বন্ধ হবে না।দেবমাল্য ভ্রূ কুঁচকে বলে কেন এ বাড়িতে সবাই তো ঘটি। এ বাড়ির বউ থেকে জামাই সব দেখে দেখে ঘটি বাড়ি থেকে আনা হয়েছে তাহলে যুদ্ধুটা লাগল কার সঙ্গে ? আর বলো না বাবা তোমাদের পাশের বাড়ি যারা কিনেছে গো তারা তো বাঙাল । এই কথাটা শুনেই ক্ষণিকের জন্যে দেবমাল্যর চোখের সামনে ভেসে উঠল একটা মিষ্টি মুখ। ওরা তো অনেক দিন এসেছে । হ্যাঁ গো ওই বাড়ির কত্তা গিন্নী এ বাড়ি এসেছে নারায়ণ পুজোর নেমতন্ন করতে । গিন্নী তোমার মা কাকিমাদের সঙ্গে ভেতরে চলে গেলেন আর কত্তাদের নানা কথার মধ্যে ওই খেলার কথা এসে যেতেই লেগে গেল যুদ্ধ । সঙ্গে সানাইয়ের পো আছে মেজো আর ছোট কত্তা । বিনি পিসি বকবক করতে করতে চলে গেলে দেবমাল্য হেঁসে ফেলল কারণ সেই ছোট থেকে কতবার যে শুনেছে বিনি পিসির এই দেশে চলে যাবার কথা । রাগ কমে গেলেই পিসি মাটির মানুষ । মায়ের কাছে শুনেছে খুব ছোটবেলায় বিনি পিসির বাবা মারা যাবার পরে বিনি পিসির মা গ্রাম থেকে এই বাড়িতে কাজ করতে আসলো বিনি পিসিকে কোলে নিয়ে । পিসি এই বাড়িতে তার মায়ের সঙ্গে থেকে গেল । এ বাড়ির মেয়ের মতো বড় হচ্ছিল । আমার পিসিদের সঙ্গী হয়ে গেছিল ।‌ পিসিরা নিজেরা পড়তে বসলে বিনি পিসিকেও জোর করে পড়তে বসাবার চেষ্টা করতো কিন্তু বিনি পিসি দৌড়ে পালাতো । পিসির মা হঠাৎ সাত দিনের জ্বরেতে মারা গেলেন । অনেক ডাক্তার দেখানো হয়েছিল কিন্তু কিছু হোলো না । সেই থেকে পিসি এই বাড়িতে থেকে যায় । আমার ঠাকুরদা পিসির বিয়ে দিয়েছিলেন কিন্তু আজন্ম দুঃখী পিসির স্বামী বছর দুই পর হঠাৎ কলেরা হয়ে মারা যায় । শ্বশুর বাড়িতে অত্যাচার করছে খবর পেয়ে আমার ঠাকুমা ঠাকুরদা তাকে আবার এই বাড়িতে ফিরিয়ে এনেছেন । সেই থেকে পিসির একটু মাথার গন্ডগোল হয় । আর কিছু না পিসি হুট করে রেগে যায় তখন অনর্গল বকে যায় আবার রাগ কমলেই একদম মাটির মানুষ । বিনি পিসির কোনো কথায় এ বাড়ির কেউ রাগ করে না । উত্তর কোলকাতার হাতি বাগানে দেবমাল্যদের বাড়ি । সেই ছোট বেলা থেকে দেখে আসছে এই পাড়ায় বাঙাল ঘটির বাকবিতণ্ডা লেগেই আছে । মোহনবাগান ইস্টবেঙ্গলের ফুটবল খেলা হলে তো কথাই নেই । সারা পাড়ায় টানটান উত্তেজনা থাকে । যদি মোহনবাগান হেরে যায় তাহলে এ বাড়িতে রান্না খাওয়া প্রায় বন্ধ । বড় হয়ে এ সব দেখে হাঁসি পায় দেবমাল্য বা দেব এর । কারণ স্কুলে তার অনেক বন্ধুই বাঙাল আছে । মোহন বাগান ইস্ট বেঙ্গল নিয়ে তাদের মধ্যেও অনেক তর্ক হয় কিন্তু সেটা তাৎক্ষণিক । এ বাড়িতে বাঙাল দের সঙ্গে সখ্যতা একদম কেউ পছন্দ করে না । দেব দেখেছে যে এ বাড়িতে নিয়ম লঙ্ঘন করেছিল তাকে এই বাড়িতে ঢুকতেই দেওয়া হলো না । সে এই একান্নবর্তী পরিবারের বড় ভাইয়ের বড় ছেলে মানে আমার দাদা দেবদত্ত ।
তখন দেব মনে ভেবেছে দাদা কি এমন অপরাধ করেছে যে বাড়িতেই ঢুকতে দেওয়া হল না ? বাবা খুব রাশভারী মানুষ আর তার কথাকে পরিবারের সকলে মান্য করে। দাদা বন্ধুর বোনের বিয়ে উপলক্ষ্যে নিমন্ত্রিত হয়ে বন্ধুর সঙ্গে গেছিল চন্দননগর । বিয়ের আসরে সকলে বুঝতে পারল বর ও বরের বন্ধুরা মদ্যপ হয়ে এসেছে । বিশাল বড়োলোকের সুদর্শন ছেলে দেখে মেয়ের জন্যে পছন্দ করেছিল বাড়ির লোক। তার ওপর তারা নগদ টাকা সোনাদানা কিছু তো নেবেই না উপরন্তু গয়না দিয়ে ছেলের সুন্দরী বউকে সাজিয়ে নিয়ে যাবে । এমন সমন্ধ কেউ হাতছাড়া করে ? কিন্তু তার যে এই বদভ্যাস আছে খবর নিয়েও কেউ জানতে পারেনি । দাদার বন্ধু ও বন্ধুর মামার সঙ্গে বর পক্ষের কথা কাটাকাটি শুরু হতে হতে প্রায় হাতাহাতির মত অবস্থা । বরপক্ষ অপমানিত বোধ করে ছেলেকে বিয়ের পিঁড়ি থেকে তুলে নিয়ে চলে গেল । আনন্দপূর্ণ বিয়েবাড়ি শোকের বাড়িতে পরিণত হলো । মেয়ে লগ্নভ্রষ্টা হবে এই চিন্তায় বন্ধুর বাবা অস্থির হয়ে গেলেন আর মা কান্নাকাটি শুরু করে দিলেন । যাকে নিয়ে এত কাণ্ড সে লজ্জায় ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ দিল । তখন দাদার বন্ধু দাদাকে অনুরোধ করল আমার বোনকে বিয়ে করে আমাদের সম্মান রক্ষা কর ভাই । দাদা খুব নিরীহ ও লাজুক প্রকৃতির মানুষ । সবে রেলে চাকরী পেয়েছে । বন্ধুর বাড়ির করুন অবস্থা দেখে এক কথায় রাজী হয়ে গেল কারণ ভেবে দেখল ওরা আমাদের স্বজাতি যখন বাড়িতে অমত হবে না । দীপশিখা মেয়েটা নম্র ভদ্র স্বভাবের ।‌ বন্ধুর বাড়িতে এসে দু এক বার দেখেছে । চন্দননগর থেকে বাড়িতে খবর দিতে গেলে লগ্ন পেরিয়ে যাবে তাই খবর না দিয়েই বিয়ের পিঁড়িতে বসতে বাধ্য হলো। নির্বিঘ্নে বিয়ে মিটে গেলে পরের দিনই বৌদির দাদা ও মামা দাদা বৌদিকে নিয়ে আমাদের বাড়িতে আসলে বাবা বাড়িতে ঢোকার আগে দরজার সামনে দাঁড় করিয়ে দাদাকে জিজ্ঞাসা করলেন কোন সাহসে তুমি বাড়িতে খবর না দিয়ে বিয়ে করলে ? বৌদির মামা সবিনয়ে সমস্ত ঘটনা বাবাকে বললেন । সব শুনে বাবা জিজ্ঞাসা করলেন আপনাদের দেশ কোথায় ? বৌদির দাদা বললেন আমরা ঢাকা জেলার মানুষ । ব্যাস আগুনে ঘি পড়ল । বাবা হুংকার দিয়ে উঠলেন দেবু ?

এতো সাহস তুমি পেলে কোথা থেকে যে বাড়িতে খবর না দিয়ে একটা বাঙাল মেয়ে বিয়ে করে ঘরে আনলে ? তুমি আমাদের পরিবারের রীতিনীতি জানো না ? এক্ষুনি বেরিয়ে যাও এই বাড়ি থেকে । সবাই চুপ করে আছে কারণ মায়েরও ক্ষমতা নেই বাবার মুখের ওপর কথা বলার । সেই মুহূর্তে দাদা মাথা নীচু করে বৌদিকে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে গেছিল । দাদাকে আমরা কোনোদিন গুরুজনদের মুখের ওপর কথা বলতে দেখিনি । দাদা আর কোনো দিন এ বাড়িতে আসেনি । মা কে দেখেছি লুকিয়ে কান্নাকাটি করতে । দাদার পছন্দের খাবার রান্না হলে মা মুখে তুলতেন না । তখন আমি মনে মনে ভাবতাম বড় হয়ে ঠিক দাদার সঙ্গে যোগাযোগ করব কারণ দাদা এমন কিছু অন্যায় করেনি বরং একটা মেয়েকে লজ্জার হাত থেকে উদ্ধার করেছে । আমি উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে ঠিকানা জোগাড় করে লুকিয়ে দাদার বাড়ি গেছিলাম । দাদা আমাকে দেখে আনন্দে জড়িয়ে ধরেছিল । আমি অবাক হয়ে শুনলাম দাদা পাড়ার এক বন্ধুর কাছ থেকে বাড়ির সবার খবর নিত । বৌদি খুব ভাল মানুষ । তার কাছ থেকেই বিয়ের সব ঘটনা শুনেছিলাম । শুধু মা জানে আমি দাদার বাড়ি যাতায়াত করি । দাদা যা যা ভালোবাসে মা আমাকে দিয়ে লুকিয়ে পাঠিয়ে দিতেন । আমার মনে হয় বাড়ির লোক আজও বুঝল না বাঙাল ঘটিতে মানুষের চরিত্র বিচার করা যায় না । দেব মনে মনে ভাবে ইসস জোনাকির জন্যে না আমার দাদার মত বাড়ি ছাড়তে হয় । আমাদের পাড়ায় রজতদা এক বাঙাল পরিবারকে তার বাড়ি বিক্রি করে চলে গেলেন । সেই বাড়ির মেয়ে জোনাকির সঙ্গে পরিচয় আমার কোচিং সেন্টারে । যদিও ও আমার জুনিয়র ছিল । সেই পরিচয় থেকে নানা খুনসুটি ঝগড়া হাঁসি মজার মধ্যে কবে থেকে যেন মনে হলো আমাদের একে অপরকে খুব প্রয়োজন । একদিন জোনাকিকে বলেছিলাম দাদার মতো না আমাকেও বাড়ি ছাড়তে হয় । শুনে জোনাকি পারলে আমাকে মারতে আসে । বলে হ হ দেইখ্যা নিমু , আমি হইলাম গিয়া বাঙাল মাইয়া । আমি কাউরে ভয় পাই না বুজ্জ ? আমি লড়াই কইরা আমার পাওনা বুইজ্জা নিতা পারি । আমি বৌদির মতো অত্ত নরম মনের মাইয়্যা নই বুজ্জ ? আমি হেঁসে বললাম আমার বৌদিও কিন্তু বাঙাল মেয়ে । বৌদি বাঙাল মাইয়্যা গো কলঙ্ক। জোনাকি আবার রেগে গেলে অনর্গল বাঙাল কথা বলে এই এক মুশকিল । এ পাড়ায় মোটামুটি সবাই স্থানীয় তবে বর্তমানে কিছু ওপার বাংলার পরিবার ও ঢুকে পড়েছে । সেখানেই হয়েছে সমস্যা । সকালে চায়ের দোকানে তর্কের ঝড় ওঠে । দাদা বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে প্রায় পাঁচ বছর হয়ে গেল । এখন আমি কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে কর্পোরেট জগতে পা রেখেছি । জোনাকি কে নিয়ে খুব চিন্তায় আছি কারণ হাতিবাগানে প্রায় সব বাড়িতেই প্রথা ভেঙে বাঙাল মেয়ে বা জামাই ঘরে এসেছে কিন্তু মল্লিক বাড়ির কর্তা মানে আমার বাবা ঘোষণা করে দিয়েছেন আমি বেঁচে থাকতে এ বাড়ির নিয়ম ভঙ্গ হতে দেব না । কিন্ত ভবিতব্য খন্ডাবার ক্ষমতা মানুষের নেই । হঠাৎ একদিন পাড়ার একটি ছেলেকে দিয়ে বৌদি আমাকে খবর পাঠাল দাদা অ্যাকসিডেন্ট হয়ে মরণাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে । খবর পেয়েই খুড়তুতো ভাইকে নিয়ে হাসপাতালে দৌড়লাম । বাড়িতে এখন কাকিমারা মোটামুটি জানে যে আমি বা আমার খুড়তুতো ভাই বোনরা লুকিয়ে লুকিয়ে দাদার বাড়ি যাতায়াত করে । বৌদি আন্তরিক ব্যাবহারে সবাইকে আপন করে নিয়েছে । যাইহোক হাঁসপাতালে গিয়ে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে বুঝলাম তিনি কোনো আশা দিতে পারছেন না । কি করব ভেবে না পেয়ে আমরা বাড়ি এসে মা কাকিমা দের সব জানালাম । সব শুনে মা অন্ন জল ত্যাগ করে ঠাকুর ঘরে পড়ে থাকলেন । ওদিকে দাদাকে নিয়ে যমে মানুষে টানাটানি চলছে । বৌদি আর ভাইপো ভাইজির দিকে তাকালে খুব কষ্ট হচ্ছে । আমি পাশে আছি বলে বৌদি ভরসা পাচ্ছে । খবর পেয়ে বৌদির দাদাও এসে গেছেন । দিন দশেক এই ভাবে কেটে গেল । অবশেষে ডাক্টার বাবু বললেন এখন
বিপদ অনেকটা কেটে গেছে কিন্তু তোমার দাদা কিছুটা সুস্থ্য হলেও মানসিক ভারসাম্যহীনতা দেখা দিয়েছে । ওনাকে বাড়ি নিয়ে গিয়ে সেবাযত্ন ওষুধ পথ্য আর আপন মানুষদের সহানুভূতি পূর্ণ সাহচর্য পেলে আশা করি ভাল হয়ে যাবেন । ডাক্টার বাবু এতদিনে সব শুনেছেন তাই বললেন সব থেকে ভাল হয় যদি ওনাকে নিজেদের বাড়ি নিয়ে যেতে পারেন । ওই বাড়িতে ছোট থেকে যাদের মধ্যে থেকে উনি বড় হয়েছেন তাদের সাহচর্য পাবেন , ছোটবেলার নানা স্মৃতির কথা মনে পড়তে পারে এতে পেশেন্টের মানসিক উন্নতি হতে পারে । শুনে আমার মাথায় বাজ পড়ল , কি করব বুঝতে পারছি না । বৌদির দাদা আমার অবস্থা বুঝতে পেরে বললেন বোন দেবদত্ত কে নিয়ে আমাদের বাড়ি চল । দাদার কথা শুনে বৌদি বললো না দাদা সে হয় না । পাড়ার লোক , আত্মীয়-স্বজন নানা কথা বলবে । বৌদির চিন্তায় ক্লিষ্ট মুখ আর জোনাকির চাপে বাড়িতে ডাক্টারবাবু যা বলেছেন সব জানালাম । আগেই বলেছি বাবা খুব কঠোর প্রকৃতির মানুষ । সব শুনেই তিনি জানিয়ে দিলেন আমি আমার পূর্ব পুরুষের রীতিনীতি লঙ্ঘন করতে পারব না । বাবার কথা শুনে বাড়ির সবাই হতবাক হয়ে গেল। হাজার হোক বাড়ির বড়ো ছেলের এই মর্মান্তিক অবস্থা । বাবার কথা শুনে কাকারাও চুপ করে আছেন । আমি এই প্রথম আমার শান্ত নির্বিরোধী মিতবাক মায়ের সম্পূর্ণ অন্য রূপ দেখলাম। বাবার মুখের ওপর কঠোরভাবে জানিয়ে দিলেন আমি সারা জীবন তোমার বিরুদ্ধাচরণ করি নি । তোমার ন্যয় অন্যায় সব মাথা পেতে মেনে নিয়েছি কিন্তু আজ বলছি আমার বড় ছেলে বড় বৌমা নাতি নাতনি এই বাড়িতে আসবে । এই বাড়িতে থেকেই আমার ছেলের চিকিৎসা হবে । আমি নিজের হাতে ওর সেবা করব । এর অন্যথা হলে আমি এই বাড়ি ছেড়ে চলে যাবো । মাকে সমর্থন করে পাশে এসে দাঁড়ালেন দুই কাকিমা আর তিন পিসি। পিসিরা বাবাকে ভৎসনা করে বললেন তোমার ছেলের জীবন আগে না তোমার বংশের রীতিনীতি আগে ? বাবাকে চুপ করে থাকতে দেখে মা বললেন দেব আমাকে তোর দাদার কাছে নিয়ে চল । আমি আজ থেকে ওখানেই থাকব । মায়ের কথা শুনে বাবা হতচকিত হয়ে গেলেন কারণ তিনি মা ছাড়া একদম অচল । তারপর পাড়ায় বাড়ির সম্মান বিনষ্ট হবে । তিনি ভাবতে পারছেন না যারা মুখের ওপর কথা বলার সাহস পেতো না তারা এতো সাহস পেলো কোথা থেকে ? বাবা কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বললেন বেশ তোমরা যা ভালো বোঝো তাই করো আমার বলার কিছু নেই বলে তিনি দোতলায় নিজের ঘরে চলে গেলেন । কাকারাও মনে হল মনে শান্তি ফিরে পেলেন ।
সারা বাড়িতে আনন্দের জোয়ার এলো । ডাক্তারবাবু যেদিন হাসপাতাল থেকে ওষুধপত্র বুঝিয়ে দিয়ে দাদাকে ছেড়ে দিলেন সেদিন মা আমার সঙ্গে নিজে গিয়ে দাদা বৌদি ও ভাইপো ভাইজিকে বাড়ি নিয়ে আসলো । মা কাকিমারা বরণ করে সবাইকে ঘরে তুললেন । বৌদি আর ভাইপো ভাইজির দের মুখে হাসি দেখে আমি মনে শান্তি পেলাম ।‌ পরবর্তী সময়ে দেখেছি আমার রাশভারী বাবা তার বৌমা অন্ত প্রাণ ছিলেন আর নাতি নাতনি তার সবসময়ের সঙ্গী ছিল । তবে আমি একটা বিষয়ে উপলব্ধি করেছিলাম যে নারী শক্তি যদি একবার জাগ্রত হয় তাহলে সব অসম্ভব ও সম্ভব হতে পারে । আমি মনে মনে বিশ্বের সমগ্র নারী জাতিকে প্রণাম জানিয়ে বললাম জয় নারী শক্তির জয়।

Powered by themekiller.com