Breaking News
Home / Breaking News / কবি নুর আঙ্গেস এর গল্পের শেষ পর্ব “মাদার্সডে”

কবি নুর আঙ্গেস এর গল্পের শেষ পর্ব “মাদার্সডে”

মাদার্সডে
( শেষ -পর্ব)

সকাল ফোঁটেছে খুব সুন্দর হয়ে। ব্রেকফাস্ট শেষে সবাই ব্যস্ত। দুদোল আর রাফসান আগলে রাখা প্যাকেট দুটো বের করে। আজ তাদের দেয়া শাড়ি পরেই তাদের মা বেড়াতে যাবে। রুমে এসে দুদোল মাকে বলে।

মা, দেখতো শাড়িটা কেমন হয়েছে।

শাড়ি? দুদোলের মা অবাক চোখে প্যাকেটের দিকে তাকায়। এটা কোথা থেকে আনলি?

আমি কিনেছি মা। নিজের টাকায়। আজতো মাদার্সডে এই শাড়িটা তুমি পড়বে মা।

তুই নিজের টাকায় কিনেছিস?

হ্যাঁ মা। বাবা হাত খরছের জন্যে যে টাকা দেয়। সেখান থেকেই জমিয়ে আমি আর রাফসান । তোমাদের জন্যে গিফট কিনেছি। মা খোলে দেখো না। তোমার পছন্দ হবে তো?

শাড়িসহ ছেলেকে কাছে টেনে বুকে জড়িয়ে ধরে আদরে আদরে ভরিয়ে দেয়।

পৃথিবীর কতো বিস্ময় যে অপেক্ষা করে মানুষের জন্য। লেকের কাছে গাড়ি থামতেই । যেন অবাক চোখ সকলের। কী সুন্দর সাজানো লেক। দুপাশে সবুজের সমারোহে মাঝে বয়ে যাওয়া নীল হ্রদ। কাপ্তাইয়ের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য আছে। পানির উপরেই কাঁচঘর। এখানে মানুষ অপেক্ষা করে । ওপরে যাওয়ার জন্য। পাড় ঘেষেই আছে ছোট জেঠি আর ইঞ্জিন চালিত বোর্ট।
এখানে কিছুক্ষণ সময় কাটানোর পর ওরা চলে আসে কাপ্তাই কাছাকাছি। বাঁধের উপর থেকে প্রবল বেগে পানি নদীতে পড়ে । স্রোত হয়ে আবার তা ছোট ছোট ঢেউ।
হঠাৎ প্রশ্ন করে দুদোল।

মা তুমি বলো কাপ্তাই বাঁধ গেইট দিয়ে বন্ধ থাকে।
এখানে কয়টি গেইট আছে?

ঐ যে দেখছিস ওখানে মোট ষোলটি গেইট। প্রবল বেগে পানি যখন একশো নয় ফুট ওপরে ওঠে। তখন ওরা মেসিনের সাহায্যে কয়েকটি গেইট খোলে দেয়।

রাফসান অবাক হয়।
গেইট খোলে কী পানি বের করে দেয় আন্টি?

হ্যাঁ রাফসান দিতে হয়। নইলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রেরই ক্ষতি। আর জানো এই পানির কারণে তলিয়ে যায় কতো গ্রাম৷ ক্ষেত খামার। খাল, বিল, রাস্তা সব পানির নিচে। যেন চতুরদিকে সুমুদ্র।

আপা এখানে বেড়াতে না এলে। এই অজানা তথ্য অজানাই থেকে যেতো।

রাফসানের মায়ের কথায় মৃদু হাসে দুদোলের মা। চোখ তুলে বলেন।

একদম ঠিক আপা। মাঝে মধ্যেই এইভাবে কোথাও ঘুরে এলে। সৌন্দর্য উপভোগের সাথে মনও কিন্তু ভালো হয়।
আরও খানিকটা সময় কাটিয়ে। অস্ত যাওয়া সূর্য্যের নরম আলো গায়ে মেখে ওরা গাড়িতে ওঠে। ছোটে যাওয়া গাড়িতে এক একজনের মনের ভাবনা এক এক রকম।
দুদোল ভাবে । আবারও কতো অপেক্ষার পর মাকে কাছে পাবে। রাফসান ভাবে ফিরে যাওয়া মানে আবার একই রুটিনে জীবন চলা। রাফসানের মা ভাবে । ছেলেকে সুন্দর কিছু সময় উপহার দিয়ে নিজের ভালোলাগা। আর দুদোলের মা।
ভাবনার দুয়ারটা যেন খোলে যায়। এই যে সঙ্গ । কতগুলো মুহূর্ত। নিজের একাকিত্বের মাঝে নিজেকে ভুলে ব্যস্ত কিছুটা সময়। শুধুই স্মৃতি ধরে রাখা সময়। ওরা চলে গেলেই আবার শূন্যতায় নিজের ভিতর ডুবে থাকা। আবারও অপেক্ষা ছেলেকে কাছে পাওয়ার।

Powered by themekiller.com