অনুগল্পঃ খেলাঘর
সা।ল।মা।ড।লি।
১৯.০৯.২০২১
রিমা বিকেল থেকে বারবার ঘড়ি দেখছে,আবীরের বিকেল ৪টার মধ্যে আজ বাসায় ফিরার কথা। আজ একটি বিশেষ দিন। তাই অফিস থেকে আগে আগে বের হয়ে যাবে। ৫টা বাজে গেছে সেই কখন আবীরের আসর কোনো নামগন্ধ নেই।মনে মনে রিমার রাগ হচ্ছে এই ভেবে যে,আবীর প্রচণ্ড গতিতে বাইক চালায় তবু দেরী করছে কেন?
রিমার আজকাল খুব ভয় হয় আবীরের দূরন্ত গতিতে বাইক চালানো দেখে।আগে অবশ্য সেও আবীরের পেছনে বসে বাইকের দূরন্ত গতি ইনজয় করতো।টুসিসোনা কোলে আসার পর থেকে এখন বাইকের উদ্যম গতি খুব ভয় পায়। আবীরকে অনেক বলেছে বাইকের গতি কমিয়ে চলাতে কিন্তু কার কথা কে শুনে!আজকাল যেন গতি আরোও একটু বাড়িয়ে দিয়েছে।মেয়ের দোহাই ও শুনেনা।এ নিয়ে প্রায় আবীরের সাথে ঝগড়া হচ্ছে।সারে সাতটা বেজে গেল এখনো আবীরের দেখা নেই। দেড়ঘন্টা আগে বলেছে রাস্তায় আছে।অবশ্য আজকাল রাস্তায় জ্যামটাও হয়েছে অনেকটা অনুরোধে ঢেঁকী গেলার মতো। যাই হোক জ্যামটা মানতেই হয়।
এই বিশেষ দিনটিতে আবীর প্রতিবারের মত রিমার জন্য একগোছা রজনীগন্ধা ও কেক নিয়ে আসে এবার একটা সারপ্রাইজও দিবে বলে গেছে।রিমার যে আর তর সইছে না!
রিমার মনে পড়লো ৪ বছর আগে এই দিনটিতে সে মুন্সিগঞ্জ থেকে এই বাইকে চড়ে আবীরের সাথে ঢাকায় পালিয়ে এসে সংসার বেঁধেছিল।
বাইরে হঠাৎ এতো শোরগোল শুনে রিমা চমকে উঠলো তার মনটা কেমন কু ডাকলো।জানালার পর্দা সরিয়ে রাস্তার দিকে তাকাতেই দেখলো কয়েকজন লোক এ্যাম্বুলেন্সের ভিতর থেকে আবীরের রক্তমাখা দেহ বের করছে।রিমা চিৎকার করতে করতে এসে আবীরকে ঝাপটে ধরলো।ততক্ষণে দূরন্ত বাইকার আবীরের শরীর শান্ত,নিথর হয়ে গেছে।এ্যাম্বুলেন্সের পেছনে রেকারের উপর আবীরের দোমড়ানো মোচড়ানো দূরন্ত বাইকটাও নিশ্চুপ পড়ে আছে।