মফিজুল ইসলাম বাবুল,কচুয়াঃ
পাট এদেশের প্রধান অর্থকরী ফসল। এক সময়ে এ অর্থকরী ফসল বিদেশে রপ্তানী করে স্বর্ণের দামের ন্যায় দাম পাওযা যেত। তাই পাটের আঁশ সোনারী আঁশ হিসাবে পরিচিতি লাভ করে। চাহিদা ও মূল্য হ্রাসের কারণে পাটের চাষাবাদ অনেক কমে যায়। দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন আবার পাট চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে কৃষকরা।
বর্তমানে কচুয়ায় পাটের আঁশ ছাড়ানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা। প্রতিবছরই বর্ষা মৌসুমে গ্রাম অঞ্চলে এ পাট সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত থাকেন কৃষকরা। এসব কাঁচা পাট দীর্ঘদিন পানিতে ভিজিয়ে রেখে তা পঁচে যাওয়ার পর গাছ থেকে সোনালী আঁশ পাট সংগ্রহ করেন। তারপর উহা পানিতে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে বাজারে বিক্রি করা হয়।
গতবছর এক মন পাটের মূল্য ছিল ১৬শ থেকে ১৭শ টাকা। এ বছর ১ মন পাটের মূল্য ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা বলে জানিয়েছেন কয়েকজন কৃষক। মূল্য বৃদ্ধির কারনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলা পাট চাষিরা পূর্বের ন্যায় পাট চাষে মনোযোগী হয়ে উঠছে। এতে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী অর্থকরী ফসল পাট চাষ আবারও পুনরুজ্জীবিত হয়ে পাট জাত দ্রব্যের উৎপাদন ও ব্যবহার বৃদ্ধি পাবে বলে বিজ্ঞ মহল আশা প্রকাশ করছেন।
উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে দেখা যায়, নারী-পুরুষ মিলে রাস্তার পাশে, বাড়ির আঙ্গিনায় বসে পঁচা পাট গাছ থেকে পাটের আঁশ ছাড়ানোর কাজে ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে।
চাঁদপুর গ্রামের গ্রামের কৃষক মফিজুল ইসলাম, কড়ইয়া গ্রামের জহির, পালাখাল গ্রামের আমির হোসেন ও কাদলা গ্রামের জমির উদ্দিন জানান, ধান ও আলু চাষের পর জমি খালি না রেখে পাট চাষ করছি। বগি পাট ও সুতি পাট এ দুই জাতের পাট এই এলাকায় বেশি চাষ হয়।
কচুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সোফায়েল হোসেন জানান, গত মৌসুমে কচুয়া উপজেলা ৩শ’ ৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। চলতি মৌসুমে হয়ে ৩শ’ ১০ হেক্টর। পাট উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে ৩ হাজার কৃষকের মধ্যে সার ও বীজ বিতরণ করা হয়েছে। কচুয়ায় এ মৌসুমে হেক্টর প্রতি ৬ টন পাট উৎপাদন হবে বলে আশা করছি। এ উপজেলায় অন্তত ৭ থেকে ৮ হাজার হেক্টর জমিতে পাট উৎপাদন করা যেতে পারে। এর প্রধান কারণ এখানে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ জমিতে বোনা আমন ও আলু চাষ হয়ে থাকে। বোনা আমন ও আলু চাষের জমি পাট চাষের জন্য খুবই উপযোগী। ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকরা পাট চাষে ঝুকে পড়ছে।