Breaking News
Home / Breaking News / অফিসে অনুপস্থিত থেকে ৬ মাসের বেতন তোলেন স্বাস্থ্য সহকারী ঃ ব্যস্ত ঠিকাদারী নিয়ে

অফিসে অনুপস্থিত থেকে ৬ মাসের বেতন তোলেন স্বাস্থ্য সহকারী ঃ ব্যস্ত ঠিকাদারী নিয়ে

স্টাফ রিপোর্টার
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার
বড় মরাদোন কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সহকারী শাহ জালাল অনুপস্থিত থেকে নিয়মিত বেতন উত্তোলন করছেন। সরকারের বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে সরকারি কোষাগারের নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করার অভিযোগে পাওয়া যায়।

স্বাস্থ্য সহকারী অফিসে কাজকর্ম না করে ঠিকাদারী ব্যবসা নিয়ে ব্যস্থ। ৬ মাসে একদিনও অফিসে যাননি এ স্বাস্থ্য কর্মী। তবুও বেতন উত্তোলন করছেন নিয়মিত।
উপজেলার বড় মরাদোন কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সহকারী শাহ জালালের তার অফিসে গিয়ে দেখা যায়, দৈনিক হাজিরা খাতায় ৬ মাসে (নভেম্বর থেকে অদ্যবদি) তার কোন স্বাক্ষর নেই। নভেম্বরের আগের হাজিরা খাতা দেখতে চাইলে তা আর দেখাতে পারেনি। হয়তো সেখানেও তার স্বাক্ষর পাওয়া যাবেনা।
সরকারী চাকুরী করেও তিনি এ উপজেলার একজন প্রভাবশালী ঠিকাদার।
জানা যায় ১২ বছরে তিনি অন্তত ৩০ কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজ করেছেন বলে জানা গেছে। তার স্ত্রীর ‘রিজভিআপ’ নামের লাইসেন্সে কাজ না করে সরকারী দলের প্রতিষ্ঠিত ঠিকাদারের লাইসেন্সে কাজ করেন। আবার সরকারী দলের প্রতিষ্ঠিত ঠিকাদারদের সাথে পার্টনারশিপে কাজ করে থাকেন। আর ওইসব ঠিকাদারি কাজ দেখাশুনাতে নিয়ে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায় স্বাস্থ্য কর্মী শাহাজালের । এছাড়াও তার বিরুদ্ধে রয়েছে স্থানীয় পর্যায়ে হাজারো অভিযোগ।
স্বাস্থ্য বিভাগের উপজেলা পর্যায়ের সকল কর্মকর্তারাই জানেন শাহ জালাল নিয়মিত অফিস করেনা বরং ঠিকাদারী নিয়ে ব্যস্ত থাকেন কিন্তু তার প্রভাবের কারনে এ বিষয়ে কখনো কেউ মুখ খুলেন না।
গত ২০১২ সালে তৎসময়ের স্থানীয় এমপি’র অলিখিত এপিএস পরিচয়ে এই স্বাস্থ্য সহকারী শাহ জালাল নিজের কমিউনিটি ক্লিনিকে অফিস না করে তখন এলজিইডি, পিআইও সেকশনের কাজ ভাগ বাটোয়ারা করার নামে নিয়মিত উপজেলাতেই থাকতেন। তখন এ বিষয়ে এক সংবাদকর্মী তার বিষয়ে নিউজ করতে চাইলে তখনকার এই স্বাস্থ্য সহকারী শাহজালাল কয়েকজন রাজনৈতিক নেতাকে দিয়ে ৩ সংবাদকর্মীর সাথে অশোভন আচরন করার কারনে কেউ আর তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করতে সাহস করেনি।

সেই স্বাস্থ্য সহকারীর প্রভাব যেনো দিন দিন বেড়েই চলছে। কৌশল হিসাবে তিনি যে যখন ক্ষমতায় আসেন তিনি সেই ক্ষমতাসীনদের কাছাকাছি থাকেন।
এই কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবার আওতায় থাকা আবু বকর, মরিয়ম, জিলানীসহ কয়েকজনের সাথে কথা হলে তারা এই কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সহকারী শাহ জালালকে চিনেনই না। তবে এখানে কর্মরত বাকীদের চিনেন বলে জানান। স্বাস্থ্য সহকারী শাহ জালালের কয়েকজন সহকর্মীর সাথে কথা হলে নাম প্রকাশ নাকরা শর্তে তারা জানায়, আমরা একসাথেই চাকুরীতে যোগদান করি। প্রথম থেকেই ও একটু বেপরোয়া এবং প্রভাব কাটিয়ে চলে।আমারা অফিস করলেও ওর অফিস করতে হয়না। এমনকি ওর ভাগ্যের চাকা এতই ঘুরেছে গত কয়েক বছরে ও কয়েক কোটি টাকার মালিক হয়েগেছে।
গত ৬ মাস অফিসে আসেননি, দৈনিক হাজিরা খাতায় তার কোন স্বাক্ষর নেই এবং সরকারী চাকুরী করে তিনি কিভাবে ঠিকাদারী করেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুসরাত জাহান মিথেন জানান, শাহ জালাল অফিসে আসেনা এবং ঠিকাদারী করে দু’টোই আমি জানি। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো তবে তার পক্ষে অনেক তদবীর আসে। তার অনিয়মের কথা সিভিল সার্জন স্যারও জানেন।
স্বাস্থ্য সহকারী শাহ জালালের ঠিকাদারী করার বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) সাইফুল ইসলাম বলেন, দুর্গাপুর বাড়ী ঠিকাদার শাহজালালের এই মুহুর্তে দুইটি কাজ চলমান।একটি কালিপুর বাজারের মার্কেট অপরটি দুর্গাপুরের দাশের বাজার মার্কেট। দুইটি কাজের অর্থমূল্য ৩ কোটি টাকা। তবে ঠিকাদার শাহ জালাল যে স্বাস্থ্য বিভাগে চাকুরী করেন তাও তিনি জানেন বলে জানান। অভিযুক্ত স্বাস্থ্য সহকারী শাহ জালালের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি তার কর্মস্থল সম্পর্কে এলোমেলো উত্তর দেন। তবে তিনি যে এই মুহুর্তে ৩ কোটি টাকার ঠিকাদারী কাজ করছেন তা স্বীকার করেন।

Powered by themekiller.com