Breaking News
Home / Breaking News / ক্যান্সার নয়, এইডস নয়, বাঙালির দুরারোগ্য অসুখের নাম “হিংসা”

ক্যান্সার নয়, এইডস নয়, বাঙালির দুরারোগ্য অসুখের নাম “হিংসা”

আমাদের বর্তমান সমাজে টাকা হলো ন্যায্যতা, সাম্যতা ও মানবিক মূল্যবোধের পরিমাপক। এই অকার্যকর ও ভুল ধারণাকে মনে ধারণ করে আমরা সামনের দিকে এগোচ্ছি এবং এর ফলে ব্যক্তিগত এবং সামাজিক অনেক সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। যে ধন-সম্পত্তি, সোনা-দানা, বাড়ি-গাড়ী অর্জনের জন্য এতো লোভ ও হিংসা করছি, এই লোভ আর হিংসার একমাত্র উদেশ্য হলো সুখ অর্থাৎ সুখে থাকা।
কিন্তু আসল কথা হলো-যেটা আমরা বেশিরভাগ মানুষ বুঝি না যে, টাকা-পয়সা, ধন-সম্পত্তি আমাদেরকে সুখ দিতে পারে না। সুখ জিনিসটা আসলে মনের ব্যাপার। আজকে আমরা হিংসা বিষয়টা নিয়ে একটু আলোচনা করবো।

হিংসা কি ?
হিংসা একটি মারাত্মক আবেগ। আসলে, প্রত্যেকেই তাদের জীবনের কোনও না কোনও সময় হিংসার অভিজ্ঞতা লাভ করে। তবে, সমস্যাগুলি দেখা দেয় যখন হিংসা স্বাস্থ্যকর আবেগ থেকে অস্বাস্থ্যকর এবং অযৌক্তিক কিছুতে চলে আসে।
হিংসা একটি বিপজ্জনক আবেগ এটি আপনার মন হাইজ্যাক করতে পারে, অন্যের সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট করতে পারে, আপনার পরিবারকে ধ্বংস করতে পারে, এমনকি চরম ক্ষেত্রে খুনের দিকেও নিয়ে যেতে পারে। আপনার মনের মানুষের সাথে অন্য ছেলে বা মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক অনিয়ন্ত্রিত উদ্বেগ এবং ক্রোধ বাড়াতে পারে।
তবুও, হিংসা একটি খুব পুরানো, খুব প্রাকৃতিক এবং মানুষের স্বাভাবিক একটি আবেগ।
কেন হিংসা করছি?
অন্যের অনেক টাকা, দামি বাড়ি-গাড়ী দেখে হিংসা করছি। তার ক্ষতি কামনা করছি। নিজে অর্জনের চেষ্টা করছি না। পরিশ্রম করছি না। আবার অর্থও যে জীবনের সবকিছু নয় সেই জানচর্চাও নিজের ভিতরে নাই। এক নারী অন্য নারীর শাড়ী-গহনা দেখে হিংসা করছে। আসলে বিভিন্ন টিভি চ্যানেল ও সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রচারিত সিরিয়াল, নাটক, সিনেমা দেখে দেখে লাভ কতটুকু হয় জানিনা। তবে, মারাত্মক ক্ষতি ডেকে আনে।
হিংসা বিরক্তিকর বোধ থেকে শুরু করে এই হতে পারে যে আপনার স্বামী অন্য মহিলার প্রশংসা করছেন বা আপনার স্ত্রী অন্য পুরুষের দিকে তাকাচ্ছেন, যা আসলে নেই তা কল্পনা করতে। যেভাবেই হোক হিংসা আপনার সম্পর্কের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। আপনি হিংসুকের অংশীদার হন বা আপনার স্ত্রী যদি খুব হিংসুটে হয় তাহলে অযৌক্তিক এবং অতিরিক্ত হিংসা অবশেষে আপনার দাম্পত্য সম্পর্ককে ধ্বংস করতে পারে।
অন্যের সুখ-শান্তি ও ধন-সম্পদ বিনষ্ট বা ধ্বংস করে নিজে এর মালিক হওয়ার কামনা-বাসনাকে হিংসা বলা হয়। হিংসার পিছে পিছে আসে বিদ্বেষ। কোনো কারণে কারও প্রতি শক্রুভাবাপন্নতা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ধরে রাখার নাম বিদ্বেষ। একে অন্যের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করার বিষয়টি বদভ্যাসের অন্তর্ভুক্ত। লোভ মানুষের অধপতনের অন্যতম কারণ হিসেবে পরিগণিত হয়। যেহেতু লোভ একটি নৈতিক ক্রুটি, তাই এই বিষয়টি সর্ম্পকে জানা প্রয়োজন। লোভ মানুষের জীবন থেকে সুখ কেড়ে নেয়।
স্রষ্টার সৃষ্টি আমরা সবাই, স্রষ্টারতো কোন হিংসা নাই, সূর্য কিরণ দেয় সবার মাঝে সমান ভাবে, কে পাপি কে মহাপুরুষ সবার জন্য সমান আলো৷ আমাদের সকলের উচিত হিংসা আর লোভ পরিহার করা৷ সর্বক্ষণ মুখে সৃষ্টিকর্তাকে ডাকলেও সৃষ্টিকর্তা সাড়া দিবেনা, যতক্ষণ না পর্যন্ত হিংসা লোভ পরিহার করতে না পারি৷ স্রষ্টার সৃষ্টির সেরা জীব হয়েও হিংসার কারণে হলাম হিংসুক৷
হিংসা-বিদ্বেষের উৎপত্তি :
মানুষের হীন মনমানসিকতা, ঈর্ষাপরায়ণতা, সম্পদের মোহ, পদমর্যাদার লোভ-লালসা থেকে হিংসা-বিদ্বেষের উৎপত্তি ও বিকাশ হয়। হিংসা-বিদ্বেষ মানুষের সৎ কর্ম ও পুণ্যকে তার একান্ত অজান্তে কুরে কুরে খেয়ে ফেলে। মানুষ হিংসা-বিদ্বেষ, লোভ-লালসা, শঠতা-কপটতা, অশান্তি, হানাহানি প্রভৃতি সামাজিক অনাচারের পথ পরিহার করে পারস্পরিক ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হবে এটাই সবার কাম্য।
লোভ (ইংরেজী:Temptation) হিংসা (ইংরেজী:jealous/Envy)লোভ আর শত্রুতা থেকেই এই মনোভাবের সৃষ্টি হয়৷ সকল ধর্মে সুস্পষ্ট ভাবেই বলা আছে হিংসুক ব্যক্তি কখনো স্বর্গসুখ ভোগ করিতে পারবেনা৷
কেউ কি তাদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক হারাতে চায়? বন্ধুত্ব হলো পৃথিবীর সবথেকে মধুর সম্পর্কের মধ্যে একটি। হ্যাঁ, হিংসা হল একধরণের নিরাপত্তাহীনতা এবং অবশ্যই বন্ধুত্বকে ধ্বংস করতে পারে। যখন দুটি ব্যক্তি একে অপরকে হিংসা করে তারা একে অপরের সাথে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়। হিংসা কাউকে দারুণভাবে নিরাপত্তাহীনতা বোধ করাতে পারে।

উদাহরণ দিলে বিষয়টা পরিষ্কার হবে :

উদাহরণস্বরূপ, যদি কোনও ব্যক্তি বন্ধুর প্রতি হিংসা করে কারণ সে মনে করে যে, তার বন্ধুকে তার চেয়ে ভাল দেখাচ্ছে তাহলে সে ভাবতে শুরু করতে পারে যে, তাকে কিভাবে কুৎসিত বানানো যায় এবং ফলস্বরূপ তার বন্ধুটি নিজের সম্পর্কে নিরাপত্তাহীন বোধ করতে শুরু করে। দ্বিতীয় উদাহরণটি হল যদি কেউ তাদের বন্ধুর প্রতি ইর্ষা করে কারণ তাদের বন্ধুটি তাদের চেয়ে লম্বা।
কেউ যদি এর কারণে তাদের বন্ধুর প্রতি ইর্ষা করে তবে তা তাদের উচ্চতা সম্পর্কে নিজেকে নিরাপত্তাহীন বোধ ক

Powered by themekiller.com