এম. আর হারুনঃ
ইলিশের পোনা জাটকা রক্ষায় চাঁদপুরসহ দেশের ৪ জেলায় প্রতি বছরের এবারও অভয়াশ্রম ঘোষনা করেছে মৎস্য বিভাগ। এ সময় চাঁদপুর-শরীয়তপুর মেঘনা পদ্মাসহ, চর আলেকজান্ডার, রামগতি ও চর আন্দারমানিক জেলার জেলেদের খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে বলে জানা যায়।
পদ্মা-মেঘনা নদীতে ১ মার্চ থেকে সকল প্রকার জাল ফেলা ও ইলিশের পোনা জাটকা আহরন এবং ক্রয় বিক্রয় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে মার্চ-এপ্রিল এই দুই মাস জাটকাসহ সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার।
জাতীয় মাছ ইলিশ সম্পদ রক্ষায় জাটকা নিধন প্রতিরোধ কর্মসূচির আওতায় এই কর্মসূচি পালন করা হবে।
ইলিশের পোনা জাটকা নিধন প্রতিরোধকল্পে চাঁদপুরের ষাটনল থেকে লক্ষ্মীপুরের চরআলেকজান্ডার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার নদীতে দুই মাস সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে মৎস্য মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে চাঁদপুরের নদী সীমানা মতলবের ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবীর ৬০ কিলোমিটার।
২০০৬ সাল থেকে মার্চ-এপ্রিল চাঁদপুরের বিস্তীর্ণ নদীসীমাকে ইলিশের অভয়াশ্রম ঘোষণা করে জাটকা রক্ষা কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, চাঁদপুরে মেঘনায় মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত রয়েছে ৪৫ হাজার ৯৭৮ জন জেলে।
এসব জেলেদের মধ্যে ৪১ হাজার ১৮৯ জন ইলিশ জেলেকে নিষিদ্ধ সময়ে ৪০ কেজি করে ৪ মাস চাল দেওয়া হবে।
চাঁদপুর পুরানবাজার এলাকার জেলে সবুজ মিয়া বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময়ে আমাদের ৪০ কেজি করে চাল দেওয়া কথা থাকলেও আমরা চাল পাই ২৫-৩০ কেজি। যা দিয়ে আমাদের সংসার চলে না। সরকার যদি আমাদের চালের পাশাপাশি নগদ অর্থ সাহায্য দিত তবে আমাদের পরিবার চালাতে কিছুটা সুবিধা হতো।
চাঁদপুর হাইমচর উপজেলার কয়েকজন জেলে বলেন, আসলে প্রকৃত জেলেদের জেলেকার্ড না দিয়ে যারা অন্যান্য কাজ করে তাদেরকে কার্ড দেওয়া হয়। এর ফলে নিষেধাজ্ঞার সময়টাতে অনেক প্রকৃত জেলে কোনো সাহায্য-সহায়তা পায় না।
এতে করে তারা বাধ্য হয়ে নদীতে মাছ শিকারে নামে। প্রকৃত জেলেদের নামে জেলে কার্ড দেওয়া হলে এই কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে বলে মনে করেন তারা।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুল বাকী বলেন, আমরা জাটকা মাছ রক্ষায় সকল ধরনের কার্যক্রম ইতোমধ্যে সম্পন্ন করেছি। জাটকা মাছ ধরা রোধ করতে আমরা বদ্ধ পরিকর। কোনো অবস্থাতেই নদীতে জেলেদের মাছ শিকার করতে দেওয়া হবে না। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে শাস্তি হিসেবে কারাদণ্ড, জাল পুড়িয়ে দেওয়া, ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। এসব জরিমানা এক বা একাধিকও হতে পারে।
এ বছর নিষিদ্ধ সময়ে চাঁদপুরের এক হাজার জেলেকে বিকল্প কর্মসংস্থান হিসেবে রিকশা, ভ্যান, হাঁস-মুরগি ও সেলাই মেশিন প্রদান করা হবে বলে জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে।