Breaking News
Home / Breaking News / ঘর থেকে উঠানো হলো ২ কোটি টাকার সোনার কলস!

ঘর থেকে উঠানো হলো ২ কোটি টাকার সোনার কলস!

বিশেষ প্রতিনিধিঃ

‘ঘরের রয়েছে দু’টি সোনার কলস। সেখানে পাওয়া যাবে ২ কোটি টাকার সোনা। তবে তিন কান হলে ( ৩য় জন জানলে) সব বিফলে যাবে।’ ভন্ড ফকিরের এমন প্রতারণার ফাঁদে পড়ে গত ৮ মাস যাবত আব্দুল বারেক সরদার নামে এক ব্যক্তি খুঁইয়েছেন প্রায় ২০ লাখ টাকা। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর আজ শনিবার সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে উদ্ধার করা হয়েছে সোনালী রঙের জোরি মাখানো মাটির দলা সহ পিতলের দু’টি খালি কলস। এ ঘটনায় যুক্ত প্রতারক ওই ভন্ড ফকিরকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
আটক এই ভন্ড ফকিরের নাম ইছহাক প্রামানিক ওরফে ইছহাক ফকির (৪০)। বাড়ি ফরিদপুরের সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের শ্যামসুন্দরপুর গ্রামে। সেখানে ফকিরী আস্তানা গড়ে প্রায় এক যুগ যাবত এভাবে সে অলৌকিক ক্ষমতার ফাঁদ পেতে প্রতারণা ব্যবসা চালিয়ে আসছিলো। জ্বীনের পাশাপাশি তার এই আস্তানায় চলে কালি দেবীর সাধনাও। তার এই অপকর্মে অন্যতম এক সহযোগী নিতাই কুমার ওরফে নাইতা (৪০) নামে আরেক প্রতারক অবশ্য ঘটনার পর পালিয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, ইছহাকের এই ভন্ডামীর আস্তানায় প্রতিবছর লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে চলে বার্ষিক ওরসের আয়োজন। বহু অপকর্মের নায়ক এই ভন্ড ইছহাক প্রামানিক মাত্র মাস দেড়েক আগে শহরের ‘নিউ গার্ডেন সিটি’ নামে একটি আবাসিক হোটেল থেকে আটক হয়। অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকার অপরাধে ভ্রাম্যমান আদালতে ১৫ দিনের সাজা প্রদান করেন। তার অন্যতম সহযোগী নিতাই কুমার নাইতাকে গ্রেফতারের জোর দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী
অপরদিকে সোনার কলসের ফাঁদে প্রতারিত ওই ব্যক্তির নাম আব্দুল বারেক সরদার (৫০)। বাড়ি ফরিদপুরের সীমান্তবর্তী রাজবাড়ি জেলার সুলতানপুর গ্রামে। তার বাড়ি থেকেই ভন্ড ইছহাককে আটক করে নিয়ে আসে এলাকাবাসী।
আব্দুল বারেক সরদার সাংবাদিকদের জানান, শনিবার দুপুরেও ভন্ড ফকির ইছহাক তার বাড়িতে এসে জানায় যে, আসছে পুর্ণিমাতেই সোনায় কলস ভরে যাবে। কিন্তু তার সন্দেহ হচ্ছিলো। অনেক টাকা খুইয়ে ফেলেছেন এরই মধ্যে। স্ত্রী সন্তানেরা অধৈর্য হয়ে পড়েছিলো। অনেক ধারদেনা করে টাকা জোগাড় করেছি। পাওনাদারদের চাপে আর পারছিলাম না।
তিনি জানান, গত ৮ মাস আগে থেকে এই সোনার কলসের কাহিনী শুরু। বাড়িতে এসে বাঁশ ঝাড়ের নিকট প্রসাব করতে যায় ইছহাক। তখনই তাকে ডেকে জানায়, এখানে ‘গুপ্ত মাল’ আছে! কি মাল আছে? জানতে চাইলে ইছহাক তাকে জানায়, দু’টি সোনার কলস। প্রায় ২ কোটি টাকার ব্যাপার! তবে এই কলস উঠাতে হলে অনেক টাকা লাগবে।
ইছহাকের এমন কথায় লোভে পড়ে যান বারেক সরদার। প্রথম দফাতেই তিনি তার হাতে তুলে দেন ৩২ হাজার টাকা। এরপর গত ৮ মাস যাবত ২০ লাখ টাকা দেন। সোনার কলসের কথা তিন কান করে পাশের গ্রামের বজলু নামে এক লোক মারা গিয়েছে বলেও ভয় দেখায় ইছহাক। এজন্য কাউকে বলিনি। জানান বারেক সরদার।

Powered by themekiller.com