Breaking News
Home / Breaking News / কথা রাখলেন এসপি, খুলে নিলেন দুই পুলিশের ইউনিফর্ম

কথা রাখলেন এসপি, খুলে নিলেন দুই পুলিশের ইউনিফর্ম

গাজীপুর প্রতিনিধিঃ

দুই পুলিশ সদস্যের ইউনিফর্ম খুলে নিলেন গাজীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) শামসুন্নাহার। নিজের ঘোষণা দেওয়ার ১৬৪ দিনের মাথায় কথার সাথে কাজের মিল রাখলেন পুলিশ বিভাগের আলোচিত এই নারী পুলিশ সুপার। শুক্রবার এসপি শামসুন্নাহার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।তিনি বলেন, অপরাধী যেই হউক না কেন, তার ছাড় নেই। পুলিশ সদস্য হলেতো কোনো কথাই নাই। কোনো পুলিশ সদস্য অপরাধ করে পার পাবে না।

গাজীপুরে এসপি হিসেবে যোগ দিয়ে গত ২৮ আগষ্ট এক মতবিনিময়ে পুলিশ সুপার সামসুন্নাহার বলেছিলেন, পুলিশের কোনো সদস্য অপরাধ করলে বা জনগণকে হয়রানি করলে বিন্দু পরিমাণ ছাড় দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে ওই পুলিশের পোশাক খুলে নেওয়া হবে। আর সেই কথারই প্রতিফলন ঘটালেন তিনি।

অভিযুক্ত ওই পুলিশ সদস্যরা হলেন, গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আব্দুল্লাহ আল মামুন ও টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মুসরাফিকুর রহমান। তাদের পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। শনিবার তাদের আদালতে পাঠানো হবে। তারা দুজনই গাজীপুর জেলার ডিটেকটিভ ব্র্যাঞ্চে (ডিবি) কর্মরত ছিলেন। ওই সময় থেকেই তাদের মধ্যে সখ্যতা গড়ে উঠে। এরপর থেকে তারা দুজনে মিলে নানা অপরাধে জড়ান। আটককৃত ওই দুই পুলিশকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে এদের গ্রেফতার করা হয়।

শুক্রবার বিকেলে গাজীপুরের পুলিশ সুপার সামসুন্নাহার তাঁর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, অভিযুক্ত দুই এএসআইয়ের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা হয়েছে এবং গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সদস্যের অপরাধের কোন দায়ভার বাংলাদেশ পুলিশ নিবে না। অপরাধ করলে কেউ ছাড় পাবে না। অপরাধ করলে এটি তাদের ব্যক্তিগত দায়ভার হিসেবে নিতে হবে।

অপহরণের শিকার তিন যুবক হলেন কালিয়াকৈর উপজেলার বড়ইবাড়ি এলাকার রায়হান সরকার, লাবিব হোসেন ও শ্রীপুর উপজেলার চন্নাপাড়া এলাকার নওশাদ ইসলাম। অপহরণ করে মুক্তিপণ চাওয়ার অভিযোগে পুলিশের দুই সদস্যের নাম উল্লেখ করে শুক্রবার কালিয়াকৈর থানায় মামলা করেন রায়হান সরকার। এই মামলায় ৬-৭ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

অপহৃতের বন্ধু মো. তরিকুল্লাহ জানান, গত বুধবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে ব্যক্তিগত গাড়িতে করে তারা পাঁচ বন্ধু রাজধানীর বাণিজ্য মেলার উদ্দেশ্যে রওনা হন। বিকেল পাঁচটার দিকে তাঁরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কালিয়াকৈর উপজেলার সূত্রাপুর এলাকায় শিলা-বৃষ্টি ফিলিং স্টেশনে যান গ্যাস নিতে। গ্যাস নেওয়ার সময় তিনি (তরিবুল্লাহ) ও তার অপর বন্ধু রাকিবুল রহমান গাড়ি থেকে নেমে পাশের দোকানে চা খেতে যান।

বাকি তিনবন্ধু গাড়িতেই অবস্থান করছিলেন। এ সময় দুটি গাড়ি নিয়ে সেখানে হাজির হন এএসআই মামুন ও এএসআই মুসরাফিকুর। তাঁরা সাদা পোশাকে ছিলেন। মুসরাফিকুরের মাইক্রোবাসে সাদা পোশাকের আরও কয়েকজন লোক ছিল। তাদের অভিযোগ, তিন বন্ধুকে টেনেহিঁচড়ে গাড়ি থেকে নামিয়ে মাইক্রোবাসে তোলেন সাদা পোশাকে থাকা পুলিশ সদস্যরা।

পরে তাঁদের টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের দেওড়া এলাকায় নির্মাণাধীন উড়াল সড়কের নিচে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তিন বন্ধুকে মুক্তি দেওয়ার বিনিময়ে ৩০ লাখ টাকা দাবি করেন ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তা। দাবি করা টাকা না দিলে ‘ক্রসফায়ারে’ মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয়। পরে বেশ কিছু সময় তাঁদের সঙ্গে টাকা নিয়ে দেনদরবার হয়। একপর্যায়ে দুই এএসআই ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানান।

Powered by themekiller.com