Breaking News
Home / Breaking News / প্রতি বৃহস্পতিবার খদ্দের জোগাড় করে, জোর করে বাধ্য করা হতো যৌ’নকাজে

প্রতি বৃহস্পতিবার খদ্দের জোগাড় করে, জোর করে বাধ্য করা হতো যৌ’নকাজে

বিশেষ প্রতিনিধিঃ

সংসারের অভাব-অনটন মুছতে বিদেশে পাড়ি জমানো নারীদের জীবন কাহিনী শুনলে শিউরে উঠবেন যে কেউ। দালালের প্ররোচনায় এসব সহজ সরল নারীরা বিপদে পরে যায়। এসব দালালরা একবার বাইরে পাঠাতে পারলে আর কোন খোঁজ নেয় না। ফলে এসব নারীদের জীবন হয়ে ওঠে ঢুঁড়িস।
এরকমই এক নারী মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার রাহিমা করিম(ছদ্মনাম)। সংসারের আর্থিক অনটন কাটাতে মেয়ে রাহিমাকে বিদেশে পাঠিয়েছিলেন ভ্যানচালক বাবা। কিন্তু রাহিমাকে বিদেশের মাটিতে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। কুমারী মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় দেশে ফিরেছে খালি হাতে। অসুস্থ মেয়ের চিকিৎসা খরচ এবং তার অনাগত সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছে পরিবারটি। সামাজিকভাবেও তারা বিপর্যস্ত।
২০১৬ সালের অক্টোবরে স্থানীয় দালাল আবুল কাসেমের মাধ্যমে গৃহকর্মী হিসেবে জর্ডানে যান রাহিমা। যাওয়ার পর থেকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ। সে জানায়, জর্ডানের রাজধানী আম্মানে বিভিন্ন বাড়িতে কাজ করেছে খাওয়া চুক্তিতে। কোনো বেতন পায়নি। টেলিফোন না থাকা এবং বাড়ির মোবাইল ফোনের নম্বর ভুলে যাওয়ায় কোনো যোগাযোগ করতে পারেনি।
তিনি আরও জানান, বিপদের কথা বলেছিলেন আরেক প্রতিবেশী সোনিয়ার কাছে। আর এরই সুযোগ নেয় সোনিয়া। সোনিয়া তাকে নিয়ে যায় চাকরি দেওয়ার কথা বলে। সে রাজি হয়ে যায়। তাকে একটি দোতলা বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নিচতলায় দুটি ঘরে বাংলাদেশি, ভারতীয়, শ্রীলঙ্কার আরো প্রায় ৩০ জন মেয়ে ছিল।
প্রতি বৃহস্পতিবার খদ্দের জোগাড় করে নিয়ে আসতো সোনিয়া। রাতে বসতো মদের আসর। জোর করে বাধ্য করা হতো যৌনকাজে। তিনি প্রথমে রাজি না হওয়ায় তাকে বেধড়ক মারপিট করেছে সোনিয়া। দিনের বেলায় পায়ে শিকল পরিয়ে রাখা হতো। একদিন নরক থেকে পালিয়েও গিয়েছিলেন।
রাহিমার পরিবার থেকে মেয়েকে ফিরিয়ে দেয়ার চাপ দেয়া হলে রাহিমাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়। দুই মাস জেল খেটে গত ১৭ এপ্রিল দেশে ফিরেছেন তিনি।রাহিমা জানান, ১০ মাস তাকে বাসায় আটকে রেখে যৌনকাজে বাধ্য করা হলেও একটি টাকাও তুলে দেয়া হয়নি তার হাতে। শূন্য হাতেই তিনি বাড়ি ফিরেছেন। তিনি তার জীবনটা নষ্ট করার জন্য সোনিয়া আক্তারের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেন।
বাংলাদেশি মেয়েদের কাছ থেকে সে জানতে পারে তাদের দিয়ে যৌনবৃত্তি করানো হয়। সোনিয়ার মাধ্যমে খদ্দেররা যোগাযোগ করে। পছন্দের মেয়েকে খদ্দেরের কাছে পাঠিয়ে দেয় সোনিয়া। এ ছাড়া বাড়ির দোতলায় দুটি ঘরে ছুটির দিন মদের আসর বসানো হয়। সেখানেও যৌনকর্মে বাধ্য করা হয়।
সে জানতে পারে, সোনিয়া প্রায় ১৫ বছর ধরে জর্ডানে মেয়েদের দিয়ে এই ব্যবসা পরিচালনা করছে। জর্ডানে রাবেয়ার আরেক নাম সোনিয়া। ওই বাড়িতে পৌঁছানোর দুই দিন পরই তাকে এক খদ্দেরের কাছে যেতে বলে। রাজি না হওয়ায় বেদম মারধর করা হয়। বেশ কয়েক দিন নির্যাতনের পর একপর্যায়ে রাজি হতে বাধ্য হয়।

Powered by themekiller.com