Breaking News
Home / Breaking News / তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রীর বিয়ে বন্ধ করে বিপদে মাদ্রাসা শিক্ষক!

তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রীর বিয়ে বন্ধ করে বিপদে মাদ্রাসা শিক্ষক!

নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ

নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় তৃতীয় শ্রেণীর এক মাদ্রাসা ছাত্রীর বিয়ে বন্ধ করার চেষ্টা করে ওই এলাকার একজন মাদ্রাসা শিক্ষক হয়রানির মুখে পড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পুলিশের হেল্পলাইনে (৯৯৯) ফোন করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাহায্য নিয়ে বিয়ে থামানোর পর হাতিয়ার দারুল আরকাম ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষক তরিকুল ইসলাম শারীরিক নির্যাতনেরও শিকার হন বলে তিনি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
তরিকুল ইসলাম জানান, ‘গত সোমবার (২৮শে জানুয়ারি) মাদ্রাসায় গিয়ে জানতে পারি তৃতীয় শ্রেণীতে পড়া এক ছাত্রীর বিয়ে ঠিক হওয়ায় সে ক্লাসে আসেনি। তার অভিভাবকদের আমি বুঝিয়ে বিয়ে থামানোর চেষ্টা করি।’
তার বোঝানো সত্ত্বেও ঐ ছাত্রীর পরিবার বিয়ে থামাতে রাজী না হওয়ায় আইনি ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন তরিকুল ইসলাম, ‘শুরুতে আমি পুলিশের হেল্পলাইন ৯৯৯ এ ফোন করে ঘটনার বিস্তারিত জানাই। তারপর তাদের কাছ থেকে নম্বর নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে যোগাযোগ করি।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে এ সম্পর্কে জানানো হলে তিনি এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দেন বলে জানান তরিকুল ইসলাম।তরিকুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে বিয়ের অনুষ্ঠানটি হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু হাতিয়ার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের হস্তক্ষেপে সেদিন বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়নি। সেদিন সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজের পর মসজিদ থেকে তাকে এবং মসজিদের ইমামকে কয়েকজন যুবক ডেকে নিয়ে যায়।
ওই যুবকরা ছেলেপক্ষের লোক বলে ধারণা প্রকাশ করেন সেই মাদ্রাসা শিক্ষক। তিনি বলেন, ‘কয়েকজন যুবক একপর্যায়ে আমাদের দু্ই জনের ওপর আক্রমণ করে। তারা লোহার রড এবং লাঠিসোঁটা দিয়ে আমাদের পেটায়। পরে দুজনকে ধরে ওই ছাত্রীর বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানেও বেঁধে রেখে মারধোর করা হয়।আমাদের চিৎকার শুনে একপর্যায়ে এলাকার লোকজন আসে এবং আমাদের উদ্ধার করে।’
এরপর দুইদিন নোয়াখালী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেন তরিকুল ইসলাম। শুক্রবার সকালে হাতিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন তিনি। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুজ্জামান। এ ঘটনা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে, হাতিয়ার উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-ই-আলম জানান, অভিযোগ পাওয়ার পরে তিনি গ্রাম পুলিশ পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। প্রাথমিকভাবে পুলিশি হস্তেক্ষেপে বিয়ে সাময়িক ভাবে বন্ধ হলেও পরে আবার অন্য জায়গায় অনুষ্ঠিত হয়।
জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা, ইউনিসেফের ২০১৭ সালের হিসেব অনুযায়ী, বাংলাদেশে ৫২ শতাংশ মেয়েরই বিয়ে হয় ১৮ বছর বয়স হবার আগেই। এশিয় দেশগুলোর মধ্যে বাল্যবিবাহের হার বাংলাদেশেই সবচেয়ে বেশি। ২০২১ সালের মধ্যে এই হার এক-তৃতীয়াংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নিয়েছে সরকার। যদিও বাল্যবিবাহ নিরোধে নতুন আইনে ১৮ বছরের নিচে মেয়েদের বিয়ের সুযোগ থাকায় এ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন অনেকে।

Powered by themekiller.com