বিশেষ প্রতিনিধিঃ আমাদের প্রবাস জীবন অনেক কষ্টের। বিশেষ ভাবে যারা মধ্য প্রাচ্যে থাকে তাদের জন্য আরো বেশি কষ্টকর। প্রায় বলা যায় কি রাত কি দিন উভয় সময়ে গরম একই রকম থাকে। যদিও আমি মধ্য প্রাচ্যে নেই তবুও এই গরমের তাপমাত্রা অনুভব করেছিলাম আবুধাবিতে।
তখন স্থানীয় সময় রাত প্রায় সাড়ে তিনটা হবে। আবুধাবি হয়ে গত ৮ই আগস্ট রাত আনুমানিক সাড়ে তিনটায় আমাদের ইমিগ্রেশন ক্রস করে বাস যুগে সিসেল গামী বিমানের সামনে নামিয়ে দেয়। আমরা সবাই সিসেল এয়ারলাইন্স বিমানে উঠার জন্য সাড়িবদ্ধ ভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকি। সাড়ে তিন মিনিটের মত দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছিলো বিমানে উঠার পূর্ব পর্যন্ত। এই সাড়ে তিন মিনিট লাইনে দাঁড়িয়ে শুধু চটপট করেছি। লাইনে দাঁড়ানোর পর হটাৎ শরীরে কেমন জ্বালা পোড়া শুরু হয়। মনে হয়েছিলো কেউ জেনো সুঁই দিয়ে আঘাত করছে এমন অবস্থা। যদিও সেই মুহুর্তে ধরে নিয়েছি বিমান থেকে আসা বাতাসে হয়তো শরীরে জ্বালাপোড়া করছে। এমনটি অনুভব হওয়ার পর লাইন ছেড়ে অন্যত্রে গিয়ে দাঁড়াই। কিন্তু সেখানেও দেখছি একই অবস্থা। এমন হয়েছে যে কাউকে জিজ্ঞেস করবো তাও পারছি না। কারণ, ওই বিমানে বাংলাদেশী যাত্রী একমাত্র আমিই ছিলাম। কিছুক্ষণ পর দেখি তিন চার জন যাত্রী এক জায়গায় দাঁড়িয়ে কথা বলছে। তাদের কথা শুনে মনে হলো ওরা ইন্ডিয়ান। আর ইন্ডিয়ান ভাষায় আমি কথা না বলতে পারলেও কিছুটা বুঝি। তাই ওদের কথপোকথন শুনার জন্য তাদের নিকটে গিয়ে দাঁড়াই। তাদের কথা শুনার পর বুঝতে পারি ওদেরও আমার মতই অবস্থা। পরে বুঝলাম এমনটি বিমান বা কোনো গাড়ীর বাতাসে নয় বরং গরমের তাপমাত্রার কারনেই। সেই মুহূর্তে মনে হলো প্রিয় মানুষ গুলোর কথা, যারা পরিবার পরিজন ছেড়ে দিনের পর দিন এই গরমের মাঝে কাজ করে যাচ্ছেন; পরিবারের মুখে হাসি ফুটানোর আশায়। মনে হলো নিজের ছোট্ট ভাইয়ের কথাও। কারণ সে নিজেও এই দুবাইয়ের মাটিতে প্রায় দশ বছর কর্মরত অবস্থায় আছে।
সুস্থ থাকুক, ভালো থাকুক প্রতিটা প্রবাসী ভাই এই কামনাই করি।