Breaking News
Home / Breaking News / তালিকায় নেই সাইফুল করিম

তালিকায় নেই সাইফুল করিম

বিশেষ প্রতিনিধিঃ
আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছেন ৮০ ইয়াবা কারবারি

• যারা আত্মসমর্পণ করবে, তাদের তালিকা হচ্ছে
• আত্মসমর্পণের দিনক্ষণ-পদ্ধতি এখনো ঠিক হয়নি
• গত বছরের ৪ মে থেকে মাদকবিরোধী অভিযান শুরু
• প্রায় প্রতিদিনই বন্দুকযুদ্ধে হতাহতের ঘটনা ঘটছে
• বন্দুকযুদ্ধে শুধু কক্সবাজারেই ৩৭ জন নিহত
‘চিহ্নিত ও তালিকাভুক্ত’ ইয়াবা চোরাকারবারিদের ৮০ জন প্রথম দফায় আত্মসমর্পণ করতে পারেন। তাঁদের কক্সবাজারে পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
জেলা পুলিশ কর্মকর্তারা বলেছেন, এ সংখ্যা বাড়তেও পারে। তবে কবে নাগাদ তাঁদের আত্মসমর্পণ করানো হবে, তার দিনক্ষণ এখনো ঠিক হয়নি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, ‘যারা আত্মসমর্পণ করবে, তাদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। সেটা সম্পন্ন হওয়ার পরই আনুষ্ঠানিক আত্মসমর্পণ হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে রোববার তিনি বলেছেন, ‘যারা “সুস্থ জীবনে” ফিরতে চায়, তাদের জন্য সেই সুযোগও সৃষ্টি করতে হবে।’
গত বছরের ৪ মে থেকে মাদকবিরোধী অভিযান শুরুর পর প্রায় প্রতিদিনই ‘বন্দুকযুদ্ধে’ সন্দেহভাজন মাদক কারবারিদের হতাহতের ঘটনা ঘটছে। এ সময় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ শুধু কক্সবাজারেই ৩৭ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে টেকনাফে নিহত ব্যক্তির সংখ্যা ৩৪ জন। তাঁদের ২৩ জন টেকনাফের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা। অন্যরা বিভিন্ন অঞ্চলের।
কক্সবাজার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সর্বশেষ করা ইয়াবা ব্যবসায়ীর ১ হাজার ১৫১ জনের তালিকায় ৭৩ জন প্রভাবশালী ইয়াবা কারবারিকে (গডফাদার) চিহ্নিত করা হয়েছে। তালিকায় সাবেক সাংসদ আবদুর রহমান বদিসহ ৩৪ জন সাবেক ও বর্তমান জনপ্রতিনিধি এবং বদির ৫ ভাই, ১ বোনসহ ২৬ জন নিকটাত্মীয়ের নাম রয়েছে।
দেশব্যাপী অভিযানের পরও ইয়াবা কেনাবেচা এতটুকু বন্ধ হয়নি। এ অবস্থায় নতুন বছরের শুরুতে ইয়াবা কারবারিদের আত্মসমর্পণের সুযোগ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন বলেন, ইয়াবা ব্যবসায়ীরা নিজেরাই আত্মসমর্পণের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। কারণ, অভিযান শুরুর পর অধিকাংশই এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যান।
তিনি দাবি করেন, মিয়ানমারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ ও পরিস্থিতি স্বাভাবিক না থাকায় তাঁদের পক্ষে ইয়াবার চালান আনা সম্ভব হচ্ছে না। ইয়াবার চালানের অনুপ্রবেশ আগের তুলনায় এক-তৃতীয়াংশে নেমে এসেছে।
কারা আত্মসমর্পণ করছেন, সে ব্যাপারে জানতে চাইলে একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, কক্সবাজারে ইয়াবার বড় ব্যবসায়ী আছেন ৭৩ জন। তাঁদের বেশ কয়েকজন আত্মসমর্পণ করবেন। আর মাঠপর্যায়ের কিছু ব্যবসায়ীর নাম এ তালিকায় আছে। তবে কক্সবাজারে ইয়াবা চক্রের প্রধান হোতা সাইফুল করিম এই তালিকায় নেই বলে জানা গেছে।
অভিযানের পরই সাইফুল করিম গা ঢাকা দিয়েছেন। এখন তিনি কোথায় আছেন, তা কেউ বলতে পারছেন না। এছাড়া বড় ইয়াবা কারবারি আবদুস শুক্কুর, নুরুল হুদা, জাফর আহমেদ, শাহজাহান মিয়া, সাজেদুর রহমান, নুরুল আমিন, মৌলভী মজিবুর রহমান, নুরুল হক ভুট্টোর মতো ইয়াবা কারবারিরা এ তালিকায় আছেন কিনা, তা জানা যায়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আত্মসমর্পণের ক্ষেত্রে দুটি বিষয় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। এক. আত্মসমর্পণের সময় তাঁরা যদি ইয়াবা বড়িসহ আত্মসমর্পণ করেন, তাহলে কী হবে। দুই. তাঁদের বিরুদ্ধে থাকা মামলা ও সম্পদের বিষয়টির ফয়সালা হবে কীভাবে। দ্বিতীয় কারণটি নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা একমত হয়েছেন। তাঁরা বলছেন, ইয়াবা কারবারিদের তালিকা তৈরির পর তা সিআইডি ও দুদকের হাতে দেওয়া হবে। মামলা ও সম্পদের বিষয়টি তাঁরা খতিয়ে দেখবেন। আত্মসমর্পণ করলেই কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
ইয়াবাসহ আত্মসমর্পণ করলে কী হবে, তা নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি পুলিশ প্রশাসন। প্রচলিত আইনে বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ আটক ব্যক্তির সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড। এ কারণে বিষয়টির এখনো কোনো ফয়সালা হয়নি।

Powered by themekiller.com