অফিস প্রধান, মফিজুল ইসলাম বাবুল,কচুয়াঃ
কচুয়া উপজেলার কড়ইয়া ইউনিয়নের ডুমুরিয়া গ্রামের গৃহবধূ প্রবাসী রুবেলের স্ত্রী প্রায় ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা শান্তা আক্তারের অপমৃত্যু মেনে নিতে পাচ্ছেনা তার পরিবারের সদস্যরা। অাজ শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মৃত্যূর রহশ্য জানার জন্য এ প্রতিনিধির সরজমিনে বেরিয়ে আসে নতুন নতুন তথ্য। শান্তার রহশ্য জনক মৃত্যুর তিনদিন পরেও থামছেনা তার পরিবারের সদস্যদের আহজারী। শান্তার লাশ পোস্টমর্টাম এর পর শুক্রবার তার পিত্রালয় একই ইউনিয়নের নুলায়া গ্রামে দাপন করা হয়।
শান্তার মা খোদেজা বেগম জানান-প্রায় ৩ বছর পূর্বে ডুমুরিয়া গ্রামের হারুনুর রশিদের পুত্র বাহারাইন প্রবাসী রুবেলের সাথে বিবাহ দেয়। বিবাহের সময় তারা কোনো যৌতুক চায়নি। কিন্তু বিবাহর পর থেকে দফায় দফায় যৌতুক নেয়াসহ তার মেয়েকে নির্যাতন করত এবং তাদের এ বিয়ে শান্তার ননদ আলেয়ার জামাই কেরামত মেনে না নিয়ে সবমসময় তার মেয়েকে জালাতন করত। গত বৃহস্পতিবার সকালে হঠাৎ আমার কাছে ফোন আসে শান্তা হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারাযায়। এ কথা শুনে আমরা তার শশুর বাড়ীতে গিয়ে গলায় কালো দাগ অবস্থায় লাশ দেখতে পাই। সে হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যায়নি। তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে শান্তার মা দাবী করেছে। শান্তার পিত্রালয় গ্রাম এলাকাবাসীর পক্ষে মোঃ জহির হোসেন জানান- শান্তা খুব ভালো মেয়ে তাকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
শান্তার বৃদ্ধ দাদী শরুফা মজুমদার জানান-শান্তাকে সরিষা ক্ষেতে নিয়ে মেরে ঘরে জুলিয়ে রেখেছিল। তার মাথার চুলে সরিষার ফুল ছিল। শরুফার এ তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিনিধির সাথে ছুটে যায় ডুমুরিয়া গ্রামে একদল যুবক। এখানকার কিছু স্থানিয় লোকসহ ডুমুরিয়া পশ্চিম মাঠ নামে পরিচিত বেশ কয়েকটি সরিষা চাষাবাদের জমি ঘুরে ফিরে দেখলে নজরে পড়ে ডুমুরিয়া গ্রামের জাকির হোসেন মুন্সীর ভূমির আইলের পাশে একটুখানি স্থানে মাটিতে ঝুলিয়ে থাকা বিনষ্ট সরিষার গাছ এবং মানুষের পায়ের ছিন্ন। ধরনা করা হচ্ছে তাকে এ সরিষা ক্ষেতে এনে হত্যা করা হয়েছে। শান্তার শশুর বাড়ি এলাকার লোকজন জানান-শান্তা খুব ভালো মেয়ে ছিল। সে হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যাওয়ার কথা শুনে আমরা অনেকেই তাকে দেখতে যাই এবং লাশের গলায় কালো দাগ দেখেছে বলেও জানান।
এদিকে শান্তার শশুর বাড়ির পাশে তার পিত্রালয়ের সুফিয়া বেগম নামে এক গৃহীনি বসবাস করে। সুফিয়া বেগম জানান- আমি বুধবার সন্ধায় শান্তার সাথে ঘুমাতে আসলে তার শাশুড়িসহ আমরা ৩ জন একটি রুমে ঘুমিয়ে পড়ি । রাত অনুমান ১০ টার দিকে আমি দেখতে পাই আলেয়া এবং তার স্বামি কেরামত শান্তাকে কোলে নিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে যায় এবং তাকে নিয়ে যাবার সময় ঘরের বৈদ্যুতিক আলো বন্ধ করে দেয়।
স্থানিয় পল্লি চিকিৎসক মোঃ হানিফ মিয়া (দুলাল) জানান- শান্তা ষ্ট্রোক করেছে বলে অামার কাছে নিয়ে আসলে তার শিরা উপশিরা পাইনাই। তাকে আমার কাছে আনার আগেই দুনিয়া থেকে চলে গেছে। শান্তার শশুর বাড়ীর কাউকে এবং তার ননদ আলেয়া ও কেরামতের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে পাওয়া যায়নি। কচুয়া থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ আতাউর রহমান ভূইয়া জানান-আমরা সন্দেহ হিসেবে শান্তার শাশুড়ি দেলোয়ারা বেগমকে আটক করে কোর্টে প্রেরন করেছি এবং একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছি। পোস্টমর্টাম রিপোর্টে আসলে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। শান্তার পরিবারের সদস্যরা সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধীদের কঠোর শাস্তির দাবী করেছে।
Home / Breaking News / কচুয়ায় শান্তার অপমৃত্যূ মেনে নিতে পাচ্ছেনা তার পরিবারের সদস্যরা!! বেরিয়ে আসছে নতুন নতুন রহশ্য