স্টাফ রিপোর্টারঃ মুন্সীগঞ্জের মেঘনা নদীতে ট্রলারডুবির পঞ্চম দিনে শনিবারও নিখোঁজ ২০ শ্রমিকের সন্ধান মিলেনি। সকাল ৮টা থেকে ডুবে যাওয়া মাটি বোঝাই ট্রলারটি এখনও চিহ্নিত করার কাজ চলছে। সাইড স্ক্যান সোনারে শব্দ তরঙ্গের মাধ্যমে দু’টি টিম সকালে কাজ শুরু করেছে। সম্ভাব্য স্থানগুলো স্ক্যান করছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ট্রলারের কোন রকম সন্ধান পাওয়া যায়নি। এতে নিখোঁজ শ্রমিকদের পরিবারে ক্ষোভ বেড়েছে। ওদিকে গ্রামের বাড়িতে স্বজনদের বুকফাটা আর্তনাত যেন থামছেই না।
নৌ-বাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও বিআইডব্লিউটিএর ডুবরী দল ছাড়াও কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশ নানা তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। এদিকে ২৫০ টন ধারণ ক্ষমতার উদ্ধারকারী জাহাজ ‘প্রত্যয়’ উদ্ধার তৎপরতা শুরু করার অপেক্ষায় রয়েছে। কিন্তু ১৫০ ফুট দীর্ঘ ট্রলারটি সন্ধান না পাওয়ায় ‘প্রত্যয়’র ক্রেন ব্যবহার করতে পারছে না। তাই সকলেই এখন নদীর তলদেশের ট্রলারের সন্ধানে ব্যস্ত সময় পার করছে। নয় সদস্যের তদন্ত কমিটিও দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটনে কাজ করছে।
এদিকে ট্রলার ডুবির ঘটনায় গজারিয়া থানায় মামলা হয়েছে। শুক্রবার রাতে বেঁচে যাওয়া শ্রমিক শাহ আলম এ মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রধান আসামি ডুবে যাওয়া ট্রলারের চালক মো. হাবিব। এছাড়া ট্রলার মালিক জাকির দেওয়ান এবং অজ্ঞাত তেলের ট্যাঙ্কারের চালকেও আসামী করা হয়েছে। তবে এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। বেপরোয়াভাবে নৌযান চালিয়ে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে প্রাণহানির অপরাধে মামলাটি রুজু হয়েছে।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে সোমবার দিবাগত রাত পৌনে ৪টায় গজারিয়ার কালীপুরার কাছে মেঘনা নদীতে ৩৪ শ্রমিকসহ মাটিভর্তি ট্রলাটি তেলের ট্রেঙ্কারের ধাক্কায় ডুবে যায়। সঠিক তথ্যের অভাবে দুর্ঘটনার ২৯ ঘণ্টা পর উদ্ধার অভিযান শুরু হয়।
ঢাকা অঞ্চলের নৌপুলিশ পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির জানান, সবরকম চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ঘাতক তেলের ট্যাংকারটিও শনাক্তের কাজ অনেক এগিয়েছে।
দুর্ঘটনার পাঁচ দিন দিনেও উদ্ধারের অগ্রগতি না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে নিখোঁজ শ্রমিকের স্বজন মো. কামরুল বলেন, ‘আমাগো কষ্ট কেমনে বুঝাইমু, এত যন্ত্রপাতি দিয়াও শান্ত নদীতে একটা ট্রলারের সন্ধান করতে পাচ্ছে না, এইটা ভাবতেই পারচ্ছি না’।
নিখোঁজের আরেক স্বজন রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাই। সোহেল রানা বলেন, মেঘনার পারে আর সময় কাটছে না।