Breaking News
Home / Breaking News / অভিনয়ের নেশা: মেট্রিকও শেষ করেননি নায়িকা সুচরিতা

অভিনয়ের নেশা: মেট্রিকও শেষ করেননি নায়িকা সুচরিতা

বিনোদন ডেস্ক: ভালো শিল্পিরা অভিনয়ের প্রতি মনযোগী হবেন, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তাই বলে পড়ালেখাই ছেড়ে দিতে হবে? হ্যা এমন ঘটনাই ঘটিয়েছেন দেশের অন্যতম সু-অভিনেন্ত্রী সুচরিতা। তিনি শুধু অভিনয়ের নেশায় একাডেমিকভাবে মেট্রিকও শেষ করতে পারেননি।
কে এই সুচরিতা:
একজন বাংলাদেশী চলচ্চিত্র অভিনেত্রী। আসল নাম বেবী হেলেন। তিনি ১৯৫২ সালে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন।
অভিনয় জীবন:
১৯৬৯ সালে শিশু শিল্পী হিসেবে বাবুল ছবিতে প্রথম অভিনয় করেন। নায়িকা হিসেবে স্বীকৃতি ছবিতে প্রথম অভিনয় করেন ১৯৭২ সালে। ১৯৭৭ সালে আবদুল লতিফ বাচ্চু পরিচালিত যাদুর বাঁশী ছবিটি তাকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌছে দেয়। প্রথম শ্রেণীর নায়িকা হিসেবে জায়গা করে নেন সুচরিতা। রোমান্টিক চলচ্চিত্রে তাঁর সাথে জুটি গড়ে ওঠে ইলিয়াস কাঞ্চন, ওয়াসিম এবং উজ্জ্বলের সাথে। সুচরিতার চমৎকার শারীরিক অবয়ব এবং ফটোজেনিক চেহারা তাঁকে একটা শক্ত ভীত গড়ে দেয়। তিনি একজন সু-অভিনেত্রীও ছিলেন। ১৯৮১ সালে তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতির পুরস্কার লাভ করেন শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে।
শাবানা-নাদিমের সন্তান হিসেবেও অভিনয় করেছেন সুচরিতা। পরে নাদিমের সাথে নায়িকা হিসেবে অভিনয় করেন সুচরিতা। সর্বশেষ, প্রজন্মের পরিচিত নায়ক মান্নার নায়িকা হিসেবে কাজ করলেও এখন তিনি শাকিব খান, সাইমন সাদিকদের মায়ের চরিত্রে অভিনয় করছেন।
সুচরিতা বললেন, এফডিসিতে আমি যখন ফাইভে পড়ি তখন থেকেই যাতায়াত করি। বলা যায় তখনই এসেছি, নাদিম ভাই আমাকে কোলে তুলে নিতেন। আমি তাঁকে আঙ্কেল ডাকতাম। যখন তার নায়িকা হলাম তখন আমি কি যেন একটা প্রশ্নে জিজ্ঞেস করি, ‘আঙ্কেল এটা…তিনি আমার মুখে হাত দিয়ে থামিয়ে বললেন উঁহু এখানে আঙ্কেল বলা যাবে না। সেই থেকে আমি নাদিম ভাই বলে ডাকি।
উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র:
জীবন নৌকা, জনি, রঙ্গীন জরিনা সুন্দরী, ডাকু মনসুর, এখোনো অনেক রাত, হাঙ্গর নদী গ্রেনেড, কথা দিলাম, ত্রাস, দাঙ্গা, নাগর দোলা, দি ফাদার, বাল্য শিক্ষা, বদলা, গাদ্দার, দুনিয়াদারী, মোহাম্মদ আলী, রকি, যাদুর বাঁশী, মাস্তান, তাল বেতাল, সমাপ্তি, জানোয়ার, আলোর পথে, ছক্কা পাঞ্জা, সোনার হরিণ, সোনার তরী, আসামী, তুফান, নদের চাঁদ, ঘর-সংসার, কুদরত, সাক্ষী ও আঁখি মিলন।
শিক্ষা জীবন:
চলচ্চিত্রের প্রতি এতটাই মনোযোগী হয়ে যান যে শিক্ষাগত যোগ্যতাকে অতিক্রম করে গিয়েছে সুচরিতার অভিনয়। মেট্রিকও দেননি তিনি। সুচরিতা বলেন, অভিনয়ের প্রতি এতটাই ঝুঁকি পড়ি যে একাডেমিকভাবে আমি মেট্রিক শেষ করতে পারিনি। কিন্তু তাতে আমার কোনো কিছু যায় আসে না। আমার পড়াশোনা আমার মতোই এগিয়েছে। একাডেমিক স্বীকৃতি না থাকলেও আমি পড়াশোনা চালিয়েছি বাসায়।
সংসার জীবন:
আশির দশকের প্রথম দিকে ক্যারিয়ারের তুঙ্গে থাকা অবস্থায় প্রেমের বিয়ে হয়েছিল তার প্রয়াত নায়ক জসিমের সঙ্গে। ভালোবাসার সেই সংসারের আয়ু হয়েছিল মাত্র বছর-তিনেক।
ঢালিউডের চলচ্চিত্রের সোনালী সময়ে ‘ড্রিমগার্ল’ খ্যাত সুচরিতা দ্বিতীয়বার বিয়ের পিঁড়িতে বসেন ১৯৮৯ সালে। চলচ্চিত্র ব্যবসায়ী ও ঢাকার কয়েকটি সিনেমা হলের মালিক কেএমআর মঞ্জুর সঙ্গে সুচরিতার এই বিয়েটিও ছিল প্রেমের। তাদের সংসারে পর পর আসে ৩টি সন্তান। সন্তান আর সংসারের ব্যস্ততায় সুচরিতা একসময় ঢালিউড থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন। পরে অবশ্য আবারও চলচ্চিত্র অভিনয় শুরু করেন তিনি।
দীর্ঘদিন ধরে দুজনের মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় তারা আলাদা বসবাস করছিলেন। ২০১২ সালে কেএমআর মঞ্জুরের সঙ্গে সুচরিতার ডিভোর্স হয়। সেই সঙ্গে ভেঙে যায়, তাদের ২৩ বছরের সংসার। পরে সুচরিতা সাংবাদিকদের বলেন, কেএমআর মঞ্জুরের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নাই এক যুগেরও বেশি সময় ধরে। সম্পর্কটা কেবল টিকে ছিল কাগজে কলমেই। কেবল কাগজের কোনো সম্পর্কের মূল্য আমার কাছে নেই। এবার কাগজে-কলমে ডিভোর্স হয়ে গেল।
তিন ছেলেমেয়ে, এদের মধ্যে বড় ছেলে পড়াশোনা শেষ করে অস্ট্রেলিয়াতে চাকরি করছে। মেজ মেয়ে মালয়েশিয়াতে সদ্য জার্নালিজমে স্নাতকোত্তর শেষ করেছে। ছোট মেয়ে এবার ‘ও লেভেল’ দেবে।

Powered by themekiller.com