Breaking News
Home / Breaking News / ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. কামাল হোসেনের আচরণ ও তাঁর গাড়িবহরে হামলা নিয়ে নানামুখী আলোচনা

ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. কামাল হোসেনের আচরণ ও তাঁর গাড়িবহরে হামলা নিয়ে নানামুখী আলোচনা

বিশেষ প্রতিনিধি ::

জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনীতিতে নানা ইস্যুতে তর্ক-বিতর্ক চলছে। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে সাংবাদিকদের সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. কামাল হোসেনের আচরণ ও তাঁর গাড়িবহরে হামলা নিয়ে নানামুখী আলোচনা চলছে। সাংবাদিকতা ও রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ বিবেচনায় নিয়ে লেখা লিখেছেন সাংবাদিক কামাল আহমেদ।
বর্ষীয়ান রাজনীতিক ও আইনজ্ঞ ড. কামাল হোসেন যেসব সাংবাদিককে পয়সা খেয়ে প্রশ্ন করতে এসেছেন কি না বলে ধমক দিয়েছেন, সেটা তিনি ঠিক করেননি। তবে তার জন্য স্বল্পতম সময়ে দুঃখ প্রকাশ করে ঠিক কাজটিই করেছেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, সাংবাদিক হিসেবে আমরা ঠিক কাজটি করছি কি না? সরকার-সমর্থক হিসেবে পরিচিত ইউনিয়নের প্রতিবাদ সমাবেশ দেখে অন্তত তা মনে হয় না। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচার কমিটির সদস্য যেসব সাংবাদিক, তাঁদের কথা বাদ দিলেও প্রধানমন্ত্রীর তথ্যবিষয়ক উপদেষ্টার অংশগ্রহণ ও বক্তৃতায় বিষয়টির রাজনৈতিক রূপ স্পষ্ট হয়েছে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতিটি কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থেকে ঘটানো না হলেও এর প্রতিক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ কি আর অস্বীকার করা চলে?একজন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক কাজী আব্দুল হান্নান ফেসবুকে লিখেছেন, সাংবাদিকের কাজ খবর সংগ্রহ করা, খবর তৈরি করা নয়। বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে যেসব সাংবাদিক গিয়েছিলেন, তাঁদের কাজ ছিল কারা সেখানে গেলেন এবং সেখানে কী কী ঘটল, তার বিবরণ সংগ্রহ করে রিপোর্ট করা। নির্বাচনে কোন দল কার সঙ্গে জোট করেছে, কেন করেছে, সেটা জানার জায়গা স্মৃতিসৌধ নয়। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, একটা খবর তৈরির উদ্দেশ্য থেকে সেখানে এই প্রশ্নের অবতারণা। এই যুক্তি নাকচ করে দেওয়া সহজ নয়; বিশেষ করে প্রশ্নটি যেখানে নতুন নয়। এই প্রশ্নের উত্তর তিনি আগেও দিয়েছেন, স্পষ্টতই তা অনেকের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। স্মৃতিসৌধ এ বিষয়ে আলোচনার জায়গা নয় বলে তিনি সেখানে ওই প্রশ্নের জবাব না দেওয়ার কারণটিও ব্যাখ্যা করেছেন।
জামায়াতের সঙ্গে রাজনৈতিক সখ্যের প্রশ্ন একটি যৌক্তিক এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সন্দেহ নেই। কিন্তু জামায়াতকে নির্বাচন কমিশন নিবন্ধন না দেওয়ার পরও দলটি যে সক্রিয় আছে, তার দায় তো সবার আগে সরকারের। দশম সংসদে তো ক্ষমতাসীন জোটের বাইরে আর কেউই ছিল না। তাহলে ওই দলটিকে তারা কেন নিষিদ্ধ করেনি—এ প্রশ্নটি কজন মন্ত্রীকে বা ক্ষমতাসীন দলের নেতাকে সাংবাদিকেরা করেছেন? একবার উত্তর না পেলে দ্বিতীয়বার করেছেন? তৃতীয়বার করেছেন? বারবার করেছেন? উত্তরটা আমাদের সবার জানা। ক্ষমতাধরদের কাছ থেকে জবাবদিহি আদায় করার সামর্থ্য বা নৈতিক অবস্থান গণমাধ্যমের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশই হারিয়ে ফেলেছে। জামায়াতিদের দলে আশ্রয় দেওয়া কিংবা হেফাজতের সঙ্গে সমঝোতা, এমনকি মুক্তিযুদ্ধের সময়ে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর হয়ে যুদ্ধ করা ব্যক্তির নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করার বিষয়ে ক্ষমতাসীনদের ব্যাখ্যা আদায়ে সেই অদম্য স্পৃহার ঘাটতিটা কিন্তু বড়ই প্রকট।
‘খামোশ’ শব্দের ব্যবহার নিয়ে যাঁরা সোচ্চার হয়েছেন, তাঁরা কি মাত্র ৪৮ ঘণ্টা আগে কোনো কারণ না দেখিয়েই ৫৪টি অনলাইন পোর্টাল বন্ধ করার প্রতিবাদে কোনো কর্মসূচি পালন করেছেন? এসব পোর্টাল বন্ধ হওয়ায় বুঝি কোনো সাংবাদিকের মতপ্রকাশের পথ বন্ধ হয়নি, স্বাধীনতা খর্ব হয়নি? শনিবার রাতে ঢাকা ও ঝিনাইদহে সাংবাদিকদের ওপর হামলার খবরে কি একই প্রতিক্রিয়া আছে? ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের হুমকির বিরুদ্ধে তাঁরা কতটা সোচ্চার? মাস চারেক আগে রাষ্ট্রের মেরামত চেয়ে যে ছাত্ররা আন্দোলন করেছিল, তাদের ওপর হামলার খবর সংগ্রহের সময় হেলমেট বাহিনী যেসব সাংবাদিকের ওপর হামলা চালিয়েছিল, সেই হামলাকারীদের পরিচয় প্রকাশের পরও যে কোনো বিচার হয়নি, তার প্রতিবাদ বন্ধ হয়েছে কেন?
ড. কামালের প্রতি ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক বৈরিতাকে যাঁরা শুধু বর্তমান রাজনৈতিক পটভূমির পরিসরে বিবেচনা করছেন, তাঁরা হয় ইচ্ছাকৃতভাবে, নয়তো অজ্ঞতাপ্রসূত হয়ে ইতিহাস বিস্মৃত হচ্ছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তাঁর পাকিস্তানের বন্দিজীবনকে নিয়ে নানা ধরনের কাহিনির অবতারণা করে কেউ কেউ তাঁর মধ্যে কথিত পাকিস্তানপ্রীতির কথা প্রচার করছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাঁর রাজনৈতিক বিরোধ এবং তা কোন পর্যায়ের তিক্ততায় রূপ নিয়েছিল, সেই ইতিহাস তাঁরা আড়াল করছেন। অথচ ওই ইতিহাসেই সাক্ষ্য মেলে যে ড. কামালের প্রতি তাঁর ছেড়ে আসা দলটির বৈরিতা কখনোই কমেনি। ১৯৯১ সালের নির্বাচনের পর দলের লোকজন তাঁকে দৈহিকভাবে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করেছিলেন। আর ক্ষমতায় ফিরে আসার প্রথম মেয়াদের শেষ দিকে বস্তিবাসীদের পক্ষে আইনি সহায়তা দেওয়ার কারণে তাঁর বাড়ির সামনে বাস্তুহারা লীগের লোকজন পাঠিয়ে অস্থায়ী বস্তি বসানো হয়েছিল, তাঁর বাড়ির মূল ফটকে মানুষের বিষ্ঠা ঢেলে দেওয়া হয়েছিল। তাঁর ব্যক্তিগত জীবন, কন্যা ও তাঁর স্বামীর ব্যক্তিগত জীবন, ধর্মবিশ্বাস এবং পেশা নিয়ে বারবার কটাক্ষ করা হয়েছে। সুতরাং গণতন্ত্র

Powered by themekiller.com