Breaking News
Home / Breaking News / রাজবাড়ীতে শুষ্ক মৌসুমেও পদ্মা নদীতে ভাঙন-দিশেহারানদী পারের মানুষ

রাজবাড়ীতে শুষ্ক মৌসুমেও পদ্মা নদীতে ভাঙন-দিশেহারানদী পারের মানুষ

প্রতিনিধি প্রতিনিধি :
রাজবাড়ীতে শুষ্ক মৌসুমেও পদ্মা নদীতে ভাঙন-দিশেহারানদী পারের মানুষ রাজবাড়ীতে শুষ্ক মৌসুমেও পদ্মা নদীতে ভাঙন-দিশেহারানদী পারের মানুষ।
শুস্ক মৌসুমেও রাজবাড়ীতে পদ্মা নদীর ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে মিজানপুর ইউনিয়নের কয়েক গ্রামের বাসিন্দারা। বর্ষা মৌসুমে নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে বেশকিছু বাড়িঘর, নদী তীরবর্তী বেশকিছু এলাকা, ফসলি জমি ও জনপদ। আবার নতুন করে শুস্ক মৌসুমে শুরু হয়েছে ভাঙ্গন।

এদিকে মাত্র ২০০মিটার দূরে রয়েছে রাজবাড়ীবাসীর এক মাত্র বিনোদন কেন্দ্রটির এলাকা জুরে পাথরের বোল্ডারদ্বারা পাইলিং করা থাকলেও বর্ষা মৌসুমে তীরে বোল্ডারগুলি ধ্বসে চলে গেছে নদী গর্ভে।

আবার শুস্ক মৌসুমে ভাঙ্গন অব্যাহত থাকলে দু এক দিনের মধ্যেই অবকাশ বিনোদন কেন্দ্রটি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যাবে এবং শহর রক্ষা বাধ হুমকির সম্মুখিন পরবে বলে এলাকাবাসী মনে করছেন।

এলাকাবাসী এবং দোকানী পাষান মো-ল জানান , হটাৎ করে এই ভাঙ্গন দেখা দেয়। ভাঙ্গন রক্ষা করতে পারলে বিনোদন কেন্দ্রটি থাকবে। যদি ঠোকানো না যায় শহর রক্ষা বাধও পরবে হুমকির মুখে।।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুম আসলে জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টরা ভাঙন প্রতিরোধে প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে নেওয়া হয়নি কোন উদ্যোগ। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, বরাদ্দ পেলেই উদ্যোগ নেওয়া হবে ।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় এক দশক ধরে বর্ষা মৌসুমে পদ্মার ভাঙনে সদর উপজেলার মিজানপুর ও বরাট ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম বিলীন হয়ে আসছে। আর এ নদী ভাঙনে স্কুল, মসজিদ মাদ্রাসা, মসজিদ, ব্রিজ, কালভার্ট, বসত বাড়ি, আমবাগান ও ফসলি জমি হারিয়ে হাজার হাজার মানুষ একেবারে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো তাদের সবকিছু হারিয়ে নতুন ঠিকানা খুঁজে পাওয়ার আগেই অসময়ের এই ভাঙন তাদের বেকায়দায় ফেলেছে। শুষ্ক মৌসুমে মিজানপুর ইউনিয়নের গোদারবাজার মোস্তফার ইট ভাটার পাশে কিছু কিছূ এলাকায় এই নদী ভাঙন শুরু হয়েছে।

গোদারবাজার এলাকার চরধুঞ্চি গ্রামের মোঃ জিয়া জানান, বর্ষাকালে নদী ভাঙন দেখে অভ্যন্ত হয়েছি, কিন্তু শুষ্ক মৌসুমে নদী ভাঙনে ঘরবাড়ি বিলীন হওয়া খুব কম দেখেছি।

বৃদ্ধা আজেদা বেগম জানান, ইতোপূর্বে ভাঙনে ৩ দফা বাড়ি হারিয়েছি। এখন শুস্ক মৌসুমে পরের জমিতে কোনরকমে টিনের চালা দিয়ে বাড়ি করে বসবাস করছিলেন। কিন্তু শীতকালেও নদী ভাঙনে শেষ ঠাঁইটুকু গত রাতে পদ্মা কেড়ে নিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছ, গতবছর শুকনো মৌসুমে নদীতে অপরিকল্পিত ভাবে ড্রেজিং করার কারনেই এ অঞ্চলে বর্ষা মৌসুমে ভাঙ্গন হয়েছিল। নদী তীর রক্ষা বাঁধ তৈরীর পর বিগত ৪ থেকে ৫ বছর এ অঞ্চলের মানুষ শান্তিতে বসবাস করছিলেন। তবে গতবছর কারও কোন কথা না শুনে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিজেদের ইচ্ছেমত নদী তীর থেকে মাত্র দুইশত গজ দুর দিয়ে ড্রেজিং করেছে। আর এই ড্রেজিং করা মাটি পাবনা জেলার সিমানায় ফেলেছে। যার ফলে ভাঙ্গনের শিকার হতে হয় আমাদের। যে কারণে নদী তীরবর্তী প্রায় সকল স্থানেই ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।

মিজানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ আতিয়ার রহমান জানান, রাজবাড়ীর জেলার সবচে বড় ইউনিয়ন মিজানপুর ই-আর এই নদী ভাঙ্গনের কারনে ছোট হয়ে আসছে। শুষ্ক মৌসুমেও পদ্মায় ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। প্রতিবছর বর্ষামৌসুমেই নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে দু একটি করে গ্রাম। এভাবে যদি ভাঙ্গতে থাকে তাহলে এক সময় দেখা যাবে মিজানপুর ইউনিয়ন নামে আর কোন ইউনিয়ন থাকবে রাজবাড়ীর মানচিত্রে। নতুনভাবে ভাঙন দেখা দেওয়ায় এলাকার মানুষের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। বর্ষা মৌসুমে বেশ কিছু বাড়িঘরসহ ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে নদী গর্ভে। আবার শুস্ক মৌসুমেও ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এ মুহুর্তে ভাঙন প্রতিরোধ করতে না পারলে শহর রক্ষা বাধ পরবে হুমকির মুখে।এছাড়া ভাঙনের মুখে রয়েছে চরধুনঞ্চি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মসজিদটি।
২০০৯ সালে ৮৩ কোটি ৭৬লাখ টাকা ব্যায়ে আড়াই কিলোমিটার স্থায়ী ভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছিলো। সেই আড়াই কিলোমিটারের বেসির ভাং অংশ ভেঙ্গে চলেগেছে নদী গর্ভে। নদী ভাঙ্গনের এমন তীব্রতায় ভিটে মাটি ছাড়া হয়েছে অশংখ্য পরিবার।আবার শুস্ক মৌসুমের ভাঙ্গন অবহ্যাত থাকলে দু এক দিনের মধ্যেই বিলীন হয়ে যাবে নদীর তীরবর্তী বেস কিছু গ্রাম ও জেলা এক মাত্র বিনোদন কেন্দ্রটি।

চর ধুঞ্চি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দোলেনা শুলতানা জানান, আমার এই স্কুলটি নদীর অতি নিকটে তাই এই স্কুলটি মারাত্বক ঝুকির মধ্যে রয়েছে যে কোন মূহুর্তে ভাঙ্গনের শিকার হতে পারে। ভাঙ্গনের এমন খবর পেয়ে ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে আসছে না। অভিভাবক রাও বাচাদের স্কুলে আসতে দিচ্ছে না। তাই যত দূরত সম্ভব এই ভাঙ্গন রোধ করা জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।

রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শফিকুল ইসলাম খান জানান, এখন শুস্ক মৌসুম নধীর গতি পথ পরির্বতন হয়েছে। তাছাড়ও দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় নাব্যতা সংকটের কারনে বিআইডাব্লিউটিএ নদীতে ড্রেজিং শুরু করেছে। সে কারনেই এ ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে এই পান্তে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে সিধান্ত হয়েছে। ডিজাইন পেলেই পুড়োটা মেরামতের কাজ শুরু করা হবে।

Powered by themekiller.com