Breaking News
Home / Breaking News / দুই বাংলার বৃহত্তম নেটওয়ার্ক দৈনিক শব্দনগরের আজকের সেরা ছয় সাহিত্য

দুই বাংলার বৃহত্তম নেটওয়ার্ক দৈনিক শব্দনগরের আজকের সেরা ছয় সাহিত্য

প্রার্থনা
নার্গিস পারভীন
২০/০২/২০২৩

বিলুপ্তির পথে হাঁটিনি কখনো;
বয়ে গেছে স্রোতস্বিনী–
সময়ের ধারায় নিভু নিভু আলো-আঁধারীর মাঝে,
লুপ্ত হয়তো বা কিছুটা নিশ্চয়তা।

আলো দাও প্রভু, আলো দাও–
এ প্রানের প্রার্থনা,
আধেক জীবন করে পার
আজও সন্ধিক্ষণে আলো-আঁধারীর
ইচ্ছেরা ঘুমানো খনিজ;

প্রাণ দাও প্রভু, আরো প্রাণ–
নিরাসক্ত জীবনের আবেগঘন প্রতিচ্ছবি,
হেঁটে যায় দিনরাত ছায়াসম
নিদারুণ ব্যর্থতার হাত ধরে;
ইচ্ছে কুঁড়ির হয়না জাগরণ
কিছু মরীচিকাসম স্বপ্ন ভরে
কি যে চায় প্রাণ–বুঝিনি তা কোন কালে!

হাজার বছরের ব্যর্থতা আর বিষণ্ণতার মহীরুহে
ফোটে না ফুল,
তবু বসন্ত কড়া নাড়ে;
দিগ্বিদিক প্রচ্ছন্ন মায়ায় সেঁটে আছে
মুক্তির পরোয়ানা,
বন্ধ কপাট খোলেনি তো আজও
রাত্রির ছেলেমেয়েরা!

এসো সূর্য, এসো সাতরঙা আলোক ধারা–
মুছে দাও
শোক তাপ আর যত ব্যর্থতা,
ভেঙে দাও ঘুমের আঁধার
ক্ষুদ্র করে উচ্ছন্ন আয়ুর বাড়াবাড়ি;

ক্ষুধার হাহাকারে বাতাসের কান ভারি,
এসো হে বৈশাখ–প্রবল ঝড়ে
ছন্নছাড়া করো অনিয়মের বাড়াবাড়ি যত!

কান খুলে শোনো নবারুণ,
মনে রেখো না সংকোচ– হীনমন্যতার সমাহার,
হাতে হাত রেখে একবার বল–
এই পৃথিবী তোমার আমার,
খুলে দ্বার অবাধ চলাচলে
অবারিত মিলনে লেখো সময়ের গায়ে
হারানো দিনের সব ইস্তেহার।।

——————————————-
শিরোনাম “একুশের চেতনা”
কলমেঃরহিমা রউফ
তারিখ ঃ ২০/০২/২০২৩
একুশ! আমার চেতনাকে করে জাগরিত,
আমার বিবেক কে করে, তাড়িত- শানিত।
আমার কর্তব্য বোধের দুয়ারকে, করে উন্মোচিত,
আমার হৃদয়ে , সততার বান আনে অপরিমিত।

যেই সততার বানে, আমার ভাই দিয়েছে প্রান, কর্তব্য বোধের তাড়নায় বোন দিয়েছে সম্ভ্রম-মান।
স্বাধীনতার বায়ান্ন বছর, এখনো যে মা কাঁদছে,
পুত্র হারা,বিভীষিকাময় যন্ত্রণায় এখনো ভাসছে।

জীবনকে তুচ্ছ করে, ভাষার জন্য দিয়েছে প্রাণ,
দেশ মাতাকে মুক্ত করে,জাতিকে দিয়েছে পরিত্রান।
পৃথিবীর ইতিহাসে,এমন বীরত্বের দৃষ্টান্ত বড্ড বিরল
খুশিতে ভরে মন,নয়নের কোলে অশ্রু করে টলমল।

আমি ধন্য, আমি গর্বিত ;এদেশে জন্মেছি বলে,
আমার মা,বাংলা দেশ;বীর প্রসূতি মায়ের কোলে।আমি গর্বিত-প্রীত,বীর শহীদেরা আমার ভাই বলে,
আজ মোরা কথা বলছি,তাঁদেরই ত্যাগের ফলে।

যাঁরা ঘুমিয়ে আছে,বাংলার পবিত্র মাটির কোলে,
তোমাদের ত্যাগের মহিমা, হৃদয়ে মোদের জ্বলে।
যতোদিন বাংলাদেশ ও বাঙালী জাতি বেঁচে রবে,
তোমাদের বীরত্বের গাঁথা ইতিহাস জেগে রবে।

আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো, একুশে ফেব্রুয়ারি,
আমরা কখনো ভুলবোনা, ভুলতে বলো কি পারি?
পৃথিবীর বুকে, যতোদিন বেঁচে রবে এই বাংলাদেশ,
তোমরা থাকবে, বুকের মাঝে;থাকবে বীরের বেশ।

——————————————-

শিরোনামঃ: একুশের স্মৃতি
কলমে :- সুব্রত চক্রবর্ত্তী
তারিখ :- ২১.০২.’২৩।

আজো আসে একুশে ফেব্রুয়ারি
ফিরে ফিরে আসে স্মৃতি
আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসের মূল্যায়ন হয়
বাহান্নর সেই আত্ম বলিদানের সকাল।

ঢাকার রাজপথ হয়েছিল অবরোধ
উঠেছিল আওয়াজ ঘন ঘন
বাংলা ভাষার জন্য,এক কঠিন আন্দোলন
বাংলা ও মাতৃভাষার স্বীকৃতি চাই।

চারিদিকে ছড়িয়ে কালো মাথা
ওখানে মানুষ যেমন ছিল
ছিল নৃশংসতা ঘটানোর জন্য
নরখাদকের নিঃশব্দ বিচরণ।

হঠাৎ উঠলো আওয়াজ
চলছে এলোপাথাড়ি বুলেট
বাংলা মায়ের দামাল ছেলেরা,দেয় বুক পেতে
বাংলা ভাষার জন্য লুটিয়ে পড়লো বাংলার মাটিতে।

সালাম,বরকত,শফিউল,রফিক,জব্বর
ও সাথীরা সবাই,নীরব হয় একসময়
রাষ্ট্রসংঘ শুনে নীরব,বাংলা ভাষা স্বীকৃতি পায়
অমর একুশ পালিত হয় বিশ্বে,ভাষা ও শহীদ দিবস।

দমদম জংশন কলকাতা।

——————————————–

আমার ভাষা

নদীর আছে নিজের ভাষা সেই ভাষাতেই কথা বলে
নিজের মনে আপন বেগে নিজের পথেই এগিয়ে চলে।
ঢেউয়ের তালে তাল মিলিয়ে সাগর ও কত কথা কয় ;
পরের ভাষা নিলে বলে সেতো মোর আপন নয় !

অনেক দূরের ঐ পাহাড়টা একা একাই দাঁড়িয়ে থাকে
উন্নত শির অটল মনন চিরকালই জাগিয়ে রাখে।
লোকালয়ে, গ্রামাঞ্চলে, দূরের ঐ বনাঞ্চলে
গাছেরাও সব পাতার ভাষায় তাদের মনের কথা বলে।

উদাসী দুপুরে কৃষাণ ছেলে বাঁশির সুরে কথা বলে
তারি সুরে ফাগুন বাতাস নিজের মনে ছন্দ তোলে —

আবার দেখ দেশে দেশে ভাষার ও আছে অনেক ধারা
মনের কথা হয়না বলা মায়ের ভাষা বাংলা ছাড়া।

২০.০২.২০২৩
৭ই ফাল্গুন ১৪২৯

(ভাষা শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করে আমার এই লেখাটা প্রিয় শব্দনগরে পাঠালাম। আশা করি গৃহিত হবে এ নিবেদন) আর মাত্র কিছুটা সময়, তারপর আসবে সেই মহেন্দ্র ক্ষন

——————————————–

কবিতাঃ একুশ তুমি চির অমর
লেখকঃ মাসুম শাহ
তারিখঃ ২০.০২.২০২৩

বাংলা ভাষার জন্য দিয়েছে যারা প্রাণ
চিরস্মরণীয় হয়ে আছে তারা
শহীদ মিনারে আজ।

সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার,
অমর হয়ে আছে তারা এ-ই বাঙলায়
আরো আছে কত শ্রমিক,
যুবক, নারী, কৃষক ও জেলে.
স্মরনীয় হয়ে আছে তাঁরা মানুষের হৃদয়ে।

মায়ের ভাষাকে ভালোবেসে
বাঙালিরা রক্ত দিয়েছে ঝর ঝর
মুক্ত করেছে হায়নাদের থেকে
কেঁড়ে নেওয়া মায়ের ভাষাকে।

মনে পড়ে বায়ান্নের একুশে ফেব্রুয়ারী,
বাংলার দামাল ছেলেরা
প্রতিবাদে মুখর দৃঢ় চিত্তে,
রাজপথে শহীদ হয়েছে,
মায়ের ভাষা বাংলার জন্য।

অবশেষে পাকিস্তান সরকার বাদ্য হয়ে
মায়ের ভাষা বাংলাকে ফিরিয়ে দিয়েছে।

বায়ান্নের সেই করুন কাহিনী
রক্তান্ত রাস্তাঘাট, চারদিকে শ্লোগান,
গুল্লির আওয়াজ, বোনের শরীরে
গুল্লি লেগে দেহটা রাস্তায় পরে রয়েছে,
আজও সেই স্মৃতি বারবার মনে পড়ে।

রক্তের বিনিময়ে পেয়েছি আজ কাঙ্খিত মাতৃভাষা,
একুশ তুমি চির অমর, তুমি আমাদের ভালবাসা
চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে,
একুশ তুমি আমাদের হৃদয়ে ।

সমাপ্ত

——————————————-

একুশ স্বাধীনতার বীজমন্ত্র

ডাক্তার দেবাশীষ দাশ গুপ্ত

দেশের আন্দোলনের প্রথম পর্যায়ে দাবি ছিল জনতার অধিকার,
ওরা বন্টনে দেয়না ন্যায্যতা তাই আমরা সোচ্চার।
ছ’দফা,এগারো দফাতে বৃদ্ধি আন্দোলনের তীব্রতা।
মানুষ ছিলনা সচেতন বুঝতোনা নিজেদের প্রাপ্যতা।
ঘুমন্ত অসচেতন মানুষকে সৈনিকে পরিনত করা ছিলো দুরূহ প্রকৃতি,
ভাবনা ছিলো যা পেয়েছি যা পাবো সেটাই আমাদের নিয়তি।
বায়ান্নতে শুরু হলো মাতৃভাষার দূর্বার আন্দোলন,
ক্ষমতাসীনদের মাথায় বাজ এতটা আস্ফালন!
গুলি করে মারো পাখির মতো দাবিয়ে দাও কন্ঠ,
রফিক, জব্বারদের রক্তস্নাতে কালো বর্ণের অ,অা অক্ষর পেলো লাল বর্ণ।
ব্যথিত,ক্ষুব্ধ জনতা চোখের জলে দিলো শহীদ মিনারের কাঠামো।
নিরন্ন জনতায় গুলি চালিয়ে ক্ষমতাসীনরা করলো চরম বোকামো।
ভাষা আন্দোলন মোড় নিলো স্বাধিকার আদায়ের রুপ,
বুলেটের ভাষা পারলোনা জনতার বন্ধ করতে মুখ।
ছেলে বুড়ো সব সংগঠিত বুঝতে শিখেছে নিজেদের ভালো মন্দ,
শেখ মুজিব দিয়েছে আন্দোলনে গতি এগুতে নেই দ্বিধা দ্বন্দ্ব।
বায়ান্নতে যে বীজমন্ত্র মুজিব দিয়েছে একুশে ফেব্রুয়ারি,
সাত মার্চের স্বাধীনতার ডাকে তাই অস্ত্র হাতে ধরি।
একুশ আন্দোলনের স্রোতে পদ্মা, যমুনা, মেঘনা স্নাত অগ্নিঝড়া জয়বাংলা স্লোগান,
দেশ স্বাধীনে সব শক্তি, ত্যাগ তিতিক্ষার, আত্মবিশ্বাস দিয়েছে জোগান।

Powered by themekiller.com