Breaking News
Home / Breaking News / কবি লাজু চৌধুরীর লেখা ” কেমন আছো মর্জিনা “

কবি লাজু চৌধুরীর লেখা ” কেমন আছো মর্জিনা “

সেই মেয়েটি যাকে আমি রোজ ঘুম থেকে ওঠে দেখি–
রাজ পথে উপচে পড়া ভিড়ে নিজেকে তাল মেলাতে ব্যস্ত হয়ে পরে।
অনিশ্চিত জীবন নিয়ে পথের অলি গলি ঘুরে –
খুব কাছে যেতে চেয়েছিলাম —
কিন্তু পারিনি।

পাছে লোকে কিছু বলে সেই ভয়ে বার বার
কাছে এসেও দূরে সরে গেছি।
খুব কাছের বস্তিতেই মেয়েটি থাকে মায়াবী এক জোড়া চোখ।
বয়স কত হবে আনুমানিক ষোল বছর এর উব্দী যায়নি
মেয়েটির দৃষ্টি খুব প্রখর।
অনেক ভিরের মাঝে এক জোড়া চোখ আমার চোখের ওপর পরে।

নিষ্ঠুর এক ভাগ্যের সাথে সে জীবন যাফন করছে —
দুঃচিন্তার কাঁথা মুড়ে অন্ধকারে ডুবে থাকে।
আবার ভোরের আলোয়ে গা ঝাড়া দিয়ে বেড়িয়ে পড়ে
জীবিকার পথে।
একদিন হঠাৎ সন্ধ্যার সময় আমার বাড়ির ফেরার পথে
মেয়েটির সাথে দেখা হয়
প্রশ্ন করবো কিছু ভেবে ছিলাম –?
বরন মেয়েটি আমাকে প্রশ্ন করে স্যার আমি শুনলাম
আপনি নাকি লেখক?

আমগো মত গরিবের কথা লেখেন?
আমার কিছু কথা লেখবেন?
আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলাম এবার মেয়েটির দিকে ভালো মত লক্ষ করলাম —
মেয়টির অনেক পরিবর্তন হয়েছে নতুন লাল সবুজ পাড় করা শাড়ি।
দুকানের পাশে দুটো বেণী দুলছে।
হাতে কাঁচের চুড়ি গুলো অন্য হাত দিয়ে নেড়েচেড়ে শব্দ
করে আমার দিকে খিল খিল করে তাকিয়ে হাসছে।

হাসির শব্দে বদলে যাওয়ার ধরন আছে, বদলের নামই
জীবন।
কি অসম্ভব পরিবর্তন মেয়েটির।
একটু সুখ একটু আনন্দ এক ফোটা নিঃস্বাস নেবার
অবলম্বন খুঁজে নেয় ওরা নিজেরাই।

রাস্তার এক পাশে চায়ের দোকান থেকে এক লোক
মর্জিনা বলে মেয়েটিকে ডাকলো।
বুঝতে বাকি রইলনা আমার —
মেয়েটি রাতের আধারে দর দামে বিক্রি হয়।

হঠাৎ মুখ থেকে বেড়িয়ে গেলো কেমন আছো মর্জিনা?
নামটা আজকেই শুনলাম চঞ্চল চোখ দুটো স্থির হয়।
তারপর আমার খুব কাছে এসে দাঁড়ায়
স্যার এখন ভালো আছি।

পার্কের আধারের গলিতে দর দামে ঠিক করে নেয় আমায়।
চারিদিকে প্রশ্ন ওঠে স্যার মর্জিনাএতো রাতে কোথায় যায়??
দূরআশায় আর দূর ভাবনায় যারা জন্ম নেয় স্যার
তারা কেমন থাকে??
আমি স্যার বস্তির মাইয়া তারা কেমন থাকে?
কেমন আছে?

পার্কের গলিতে গেলে বুঝবেন স্যার কত মর্জিনারা
দর দামে বিক্রি হয়।
তারপর মর্জিনা আমার পাশ কেটে চলে যায়।
টুকিটাকি প্রশ্ন থেকে যায় এ শহরে আর কত মর্জিনা আছে???

কেমন আছো মর্জিনা
———————————–লাজু চৌধুরী

Powered by themekiller.com