Breaking News
Home / Breaking News / দুই বাংলার বৃহত্তম নেটওয়ার্ক দৈনিক শব্দনগরের আজকের সেরা ছয় সাহিত্য

দুই বাংলার বৃহত্তম নেটওয়ার্ক দৈনিক শব্দনগরের আজকের সেরা ছয় সাহিত্য

কালী কালী কপালিনী
সোনালী আদক
৪/২/২৩

সমাজটাতে আজ লেগেছে পচন, আগুন ধরেছে মনুষ্যত্বে,
দাগ লেগেছে সূর্যের কিরণে, পবিত্র যৌবন অভিশপ্তে।
ফাটল ধরেছে টোল খাওয়া মগজে,উপহাসে ভয়ঙ্কর ত্রাস,
স্যাটেলাইটের বিজ্ঞাপনে, ভিখারিণীর খসেছে অন্তর্বাস।
পাঁজরের খাঁজে লেপ্টেছে ক্ষত,ঘেয়ো কুকুরে চেটেছে ঘিলু,
দগদগে ঘায়ে ওরা ছিটিয়েছে অ্যালকোহল, সবে মাত্র বারো নীলু।
চড়া সুদে দেশ নিলামে উঠেছে, রসাতলে বিবেকের হাজতবাস,
ঝুপড়ির টিমটিমে আলোর নীচে,ভীত সন্ত্রস্তের নাভিশ্বাস।
বস্তির ফুটফুটে জুলেখা আজ, চোখে মাখে ঝুটা কাজল,
ভেবেছিলো সে হবে দিদিমণি, খদ্দের টানে তার স্বপ্নের আঁচল।
সামাল সামাল ওরে নাগা সন্যাসী, ন্যাঙটা নাচন বন্ধ কর,
আসছে ধেয়ে মারণ যন্ত্রণা, পচাগলা দেহে ফসিল স্তর।
দগদগে ঘায়ে পোকাড়া বেঁধেছে আস্তানা, দস্তানা দিয়ে চোখ ঢাকিস,
তোরা কী সব নরকের কীট, মেয়ে মানুষের মাংসের লোভে থাকিস।
ধেয়ে আসছে রণদুন্দুভি, ডঙ্কা বাজিয়ে ঐ শোনরে আকাশবাণী,
ত্রিনয়ণে ঠিকরে পড়ছে আগুন, কালী কালী কপালিনী।

——————————————–
আরেকটা বিকেল শেষে।
— শাহ আল ইমরান

কোনোএক বিকেলে, কবি আর
কবিতাগুলোর সাথে,
বন্ধ পাণ্ডুলিপিটা বিলাপ করে
রাবিয়ার হাত ধরে।
চিকচিক করে ওঠে আরেকটা গোধুলি,
আরেকটা বিকেল শেষে।।

★ অণু কবিতা
অপ্রকাশিত পাণ্ডুলিপি — কথা শুরুর শেষ কথা
রচনাকাল — ১৩/০১/২০২৩ ইংরেজি

——————————————–
কৃষ্ণচূড়ার লাল আগুন
—–🖊️ লায়ন সালেহ আহমেদ
তারিখঃ ০৪/০২/২০২৩

তুমি কখনো নীলাম্বরী,
কখনো রক্তোম্মত্তা মানস রঙ্গিনী!
কোমল মলয় সমীরণ, ফাগুনের আগুন পবন!
কুঞ্জবনে কুঞ্জকুটিরে পুষ্পিত সরব, গুল, লালা,
করবি অভিসার!

আমি দেখেছি তোমায় নীলাঞ্জনা নীলে
যেন হৃদয় সরোবরের বিকশিত কুমুদিনী!
আমি দেখেছি তোমায় আকাশের রঙে
মনোহর বর্ণচ্ছটার আভায়,
আবার লালে লাল অগ্নিরূপ কৃষ্ণচূড়ায়!
মৃদু লাল, পুষ্পিত পলাশের ডালপালায়!

যখন নীলে দেখি, ভাবি এ কী বিষাদের রঙ!
নাহ! হয়তো আকাশের বিশালতা!
আবার যখন লালে,
পুলকিত হতবিহ্বল হৃদয় তাকায় রাঙা গালে।
কৃষ্ণচূড়ার সব আভা, সব রূপ
পলাশের সম্মোহনী সুন্দর বুঝি বিধাতা
তোমাতেই দিলো ঢেলে!

আনমনে তাকাই, তাকাই আর তাকাই!
দুচোখ ভরে দেখি তোমার লাবণ্য!
যেন রবির লাবণ্যতে হারিয়ে যাই!

যখন দেখি তোমার এলোকেশী বাউলা কোঁকড়া
কমলমুকুল কুন্তল চুল,
যেন বনানী বিজনে, পাখির কূজনে
হারিয়ে ফেলি কোন হীরা- জহরত, হৃদয়নদীর কূল।

লাল উল্লাস, উচ্ছ্বাস চেনায় আমায়, জানো?
লাল এক উম্মত্ত, মাতাল বাহারী রঙ!
যেন হৃদয় ব্যকুলতায় আকুল হয়ে
টগবগিয়ে ঘোড়ার লাগাম টেনে উদ্দাম, দুর্দান্ত,
দুর্বার, দুরন্ত এক বলগা হরিণের ছুটে চলা।

চলতে চলতে চলতে হঠাৎ ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত,
লাল দিগন্তের নাগাল তবু পাইনে গো!

তবে কী এ লাল কৃষ্ণচূড়ার লাল!
এ লাল কৃষ্ণচূড়ার লাল আগুন!
তবে কী এ লাল পলাশের রাঙা ডাল!
যদি তাই হয়,
জ্বালো আগুন জ্বালো
যতো পারো ঢালো,

আমি না হয় এই ভেবে স্বান্তনা নিলুম-

“” কৃষ্ণচূড়ার লাল আগুন
জ্বেলে দিয়ে আমার বুকে,
থাকো তুমি মহাসুখে!
পলাশের মৃদু লালে
করে মহুয়া মাতাল
থাকো তুমি চিরসুখে।””

——————————————–
” সেই স্বপ্ননীড়ে ”

-বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী
তারিখ : ০৩/০২/২০২৩

হারানো অতীত
মনে পরে আজ
সবকিছু আজ স্মৃতি,
সেই দিন আর
ফিরে পাবার নয়
শুধু অনুভবে অনুভূতি।
অতীত বাল্যজীবন
ছিলো দুরন্তপনায়
নিশ্চিন্তে হারিয়ে যাওয়া,
পড়ার সময় পড়া
খেলার সময় খেলা
মায়ের বকুনি খাওয়া।
বন্ধুদের সাথে
ঘুরে বেড়ানো
প্রকৃতি অবগাহন,
সেই দিন আর
নেই আগের মতো
স্মৃতি রোমন্হন।
অতীতের মতো আর
নেই আন্তরিকতা
ডাকলেও যায়না পাওয়া,
সবকিছু ঠিক আছে
শুধু মানুষ বদলে গেছে
লেগেছে ডিজিটাল হাওয়া।
কর্মব্যস্ততার ভিড়ে
সময় হয়না আর
কাছে থেকেও সব দূরে,
তবু হৃদয়-মন আজ
ফিরে যেতে চায়
অতীতের স্বপ্ননীড়ে।

——————————————–
গল্প:

সোনাপাখির মুখ
আতাউল হাকিম আরিফ

সৌমন্তির সাথে অরণ্য অরুপের কিছুদিন যাবত বেশ টানাপোড়েন চলছে, এর মূল কারণ ইদানিং অরুপ সৌমন্তিকে একদম-ই সময় দিতে পারছেনা, কিভাবেই বা পারবে অরুপ নিজেই নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত। একটু পেছন থেকেই যদি বলি বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই তাঁদের পরিচয়, ৫ বছর ছুটিয়ে প্রেম করে অবশেষে পরিনয় সূত্রে আবদ্ধ , তাও প্রায় ১০ বছর হয়ে গেল। তাঁদের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে নাম মহুয়া। অরুপ তাঁকে সোনাপাখি নামেই ডাকে।

অরণ্য অরুপ, পেশায় একজন এনজিও কর্মকর্তা পাশাপাশি অনলাইন এক্টিভিস্ট হিসেবেও বেশ পরিচিত। পরিবেশ রক্ষায় সক্রিয়ভাবে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। টুকিটাকি গল্প-কবিতাও লিখছেন।

কিছুদিন যাবত সৌমন্তির সাথে তাঁর টানাপোড়েন চলছে , সাংসারিক নানা জটিলতায় অরণ্য অরুপ (কল্পিত নাম) পীড়িত এরমধ্যে অন্য একটি ঘটনাও তাঁকে মানসিকভাবে বির্ধস্ত করে ফেলেছে। একটি বিশেষ গং ‘র ষড়যন্ত্রে একের পর এক কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা করে আসলেও সাম্প্রতিক এর কিছু পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া তাঁকে অনেকাংশেই মানসিক ব্যাধিগ্রস্ত করে তুলেছে।

ঘটনার পরিক্রমায় জানা যায় বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের সমুদ্র উপকূলবর্তী প্রায় ১৮ কিলোমিটার এলাকায় গড়ে উঠেছে বিশাল শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড এটি জাহাজ ভাঙ্গা শিল্প হিসেবে পরিচিত, দেশ-বিদেশের পরিত্যক্ত (স্ক্র‍্যাপ) জাহাজের প্রায় ৫০ শতাংশ এখানে কাটা হয়, এই জাহাজ ভাঙ্গা শিল্প থেকে বাংলাদেশের লৌহ শিল্পের বিকাশ ঘটেছেও বলে জানা যায়, এতে একদিকে বাংলাদেশ সরকার বিপুল রাজস্ব আয় করে থাকে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরাও কোটি কোটি টাকার মুনাফা অর্জন করছে। স্থানীয়ভাবে তারা ভীষণ প্রভাবশালী, এতদ্বঞ্চলের রাজনীতিও অনেকটা তারাই নিয়ন্ত্রন করছে।

অরুপ বিষয়টি নিয়ে শুরু থেকেই বেশ কৌতুহলী ছিল, সেই সুবাদে জাহাজভাঙা ব্যবসা সম্পর্কে নানাভাবে খোঁজ খবর নিতে থাকে। সঙ্গী হিসেবে একজনকে পেয়েছে যার নাম সুপ্তি সায়লা, (কল্পিত নাম) সেও মূলত পরিবেশ রক্ষায় কাজ করছে। তারা লক্ষ্য করলো এই শিল্পের বিকাশের সাথে বেশকিছু নেতিবাচক প্রভাবও রয়েছে, বিশেষ করে জাহাজকাটার প্রেক্ষিতে ক্ষতিকর রাসয়নিক বিশেষত সীসা, পারদ, ক্রোমাইটস এর মতো পদার্থগুলোর কারণে বায়ু ও পানি মারাত্মক ভাবে দূষণ হচ্ছে। মূলত স্ক্র‍্যাপ জাহাজগুলোর অধিকাংশই ডার্টি শিপ, তেলের টাঙ্কার, বাল্ক ক্যারিয়ার , তরলীকৃত গ্যাস ক্যারিয়ার ইত্যাদির সংখ্যাই বেশি। এই দূষণ প্রক্রিয়া যদি রোধ করা না যায় এতদ্বঞ্চলের পরিবেশের উপর মারাত্মক বিপর্যয় সৃষ্টি করবে। বৃহত্তর স্বার্থে বিষয়টিকে তারা যেকোনো ভাবেই সুরাহা করতে চেয়েছিলো, ফলশ্রুতিতে স্থানীয় যারা এই শিল্পের সাথে জড়িত তাঁদের বুঝিয়ে সুজিয়ে পরিবেশ রক্ষায় সচেতনতা অবলম্বন করে জাহাজ কাটার ব্যাপারে উৎসাহিত করে, স্থানীয় ব্যবসায়ী চক্র (সিন্ডিকেট) সেটিকে কোনোভাবেই গ্রহণ করছিল না, রাষ্ট্রীয়ভাবে উল্লেখযোগ্য নীতিমালা না থাকায় খুববেশি কিছু করাও যাচ্ছিল না! কিন্তু তারা হাল ছাড়ার পাত্র নয়, প্রতিপক্ষ অনেক শক্তিশালী, নানাভাবে বাধা সৃষ্টির চেষ্টা সত্ত্বেও তারা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ফোরামে বিষয়টি নিয়ে বেশ সক্রিয় ছিলো। অনেকাংশে তারা সফল হয়েছে।

পরিবেশ বিপর্যয় রোধের পাশাপাশি অরুপ শ্রমিকদের ন্যার্য অধিকার প্রাপ্তি, শিশুশ্রম প্রতিরোধের বিষয়েও বেশ সোচ্চার ছিলো, তার সংস্থাও এই বিষয়টিতে তাঁকে বেশ সহায়তা প্রদান করেছে। লক্ষনীয় বিষয় হলো দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের অভাবগ্রস্ত মানুষের বড় একটি এখানে কাজ করে, খুব অল্প মাইনে দিয়ে তাঁদের কে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত করছে। প্রায়শ; গ্যাস বিস্ফোরণ এবং ভারী লোহার পাতে ছাপা পড়ে দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়, এমনকি মাঝেমধ্যে শ্রমিকদের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, এরমধ্যে কিছুকিছু ঘটনা নিরবে ঘটছে, যেগুলো মিডিয়া বহির্ভূত কিংবা অপ্রকাশিত। এইক্ষেত্রে বাংলাদেশের শ্রম আইন লঙ্ঘন করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তারা বিষয়টিকে নানাভাবে নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করে থাকে।

অরণ্য অরুপ ভীষণ জেদী, কিছুতেই সে হালছাড়ার পাত্র নয়, মাঝেমধ্যে নিজেকে ভীষণ অসহায় বোধ করলেও সে লক্ষ্য অর্জনে স্থির, বিবেকের তাড়নায় সে প্রতিবাদী হয়ে ওঠে , প্রভাবশালী মহলের হুমকির মুখেও সে একটা পর্যায়ে অনেকাংশে সফল হয়, এইভাবেই নানা ঘাত প্রতিঘাতে এগিয়ে যায় অরণ্য অরুপের জীবন, ঘটনার পরিক্রমায় সে যেটি হারিয়েছে সেটি হলো তাঁর ভালবাসা, সৌমন্তি, অরুপের এই বিষয়টিকে কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলনা, ধীরেধীরে তাঁদের মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক দূরত্ব তৈরি হতে থাকে….!

পরিক্রমা-২, বাংলাদেশের শ্রম আইনে কর্মরত শ্রমিকদের মৃত্যুতে মালিকপক্ষ শ্রমিকের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের বিধান রয়েছে, সম্প্রতি একটি দুর্ঘটনায় একাধিক মৃত্যুর ঘটনায় মালিকপক্ষ অন্য সব পক্ষকে ম্যানেজ করলেও অরণ্য অরুপকে কিছুতেই ম্যানেজ করতে পারছিল একদিকে মালিকপক্ষের প্রচণ্ড চাপ অন্যদিকে অন্যদিকে শ্রমিকের স্ত্রী, সন্তানের অসহায় মুখ!

অরণ্য অরুপ জানে মাঝেমধ্যে কিছুটা আপোষমূলক পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে তাঁকে এগিয়ে যেতে হবে, শক্তিশালী সিন্ডিকেটের সাথে একতরফা বিরোধিতায় তাঁর প্রাণের সংশয় রয়েছে, কৌশলে সিদ্ধ হাসিল করার বিকল্প নেই….সে যখন মালিকপক্ষের প্রস্তাব শর্ত সাপেক্ষে কিছু বিষয় মেনে নেয় ঠিক তখনি তাঁর চোখের সামনে ভেসে আসে নিহত শ্রমিক বক্করের মেয়ে ফুলির আদরনীয় মুখখানি, এই যেনো ফুলি নয় তাঁর দিকে ফ্যালফ্যাল করে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তারই আদরের কন্যা মহুয়া-সোনা পাখির মুখ!

——————————————–
.
বিষয় -কবিতা
শিরোনাম – বিদায় বেলায়
কলমে –আদিত্য কর্মকার
তারিখ – ০৩.০২.২০২৩

এসেছিল শীত হাড় কাঁপিয়ে,
যাচ্ছে আকাশ চুমে।
গাঁদার পুষ্প মলিন হয়েছে
এখন পড়েছে ঝুমে।

শিমুল, পলাশ দিচ্ছে উঁকি
শাল পিয়ালের বনে।
অম্রমুকুলে মেলা বসে গেছে
মৌমাছির গুঞ্জরণে।

শুরু হয়েছে দক্ষিণা বাতাস,
তাড়া পড়ে গেছে তার।
বসন্তের কানে সারাক্ষণ বলে
সময় হয়েছে তোমার।

অন্ধ কানাই গান ধরেছে
আকুল করা প্রাণে।
হৃদয়বিদারক সুরটি যেন
দুঃখকে টেনে আনে।

এমনি করে স্বজন হারায়ে
আসে কান্নার ঢেউ।
সান্ত্বনা পায়! জল মোছাতে
যদি পাশে থাকে কেউ।

Powered by themekiller.com