Breaking News
Home / Breaking News / দুই বাংলার বৃহত্তম নেটওয়ার্ক দৈনিক শব্দনগরের আজকের সেরা ছয় সাহিত্য

দুই বাংলার বৃহত্তম নেটওয়ার্ক দৈনিক শব্দনগরের আজকের সেরা ছয় সাহিত্য

স্মৃতি
সৈয়দা উলফাত ———————–

কুড়িয়ে নিয়েছি সব, জমা ছিল যত
পুরনো স্মৃতির দিন, বেদনার ক্ষত
পিছুটান পিছে ফেলে সীমানা ছাড়াই
তবু যেতে যেতে কেন থমকে দাঁড়াই।
উড়িয়ে দিয়েছি ঘুড়ি সুতোটুকু কেটে
পুড়িয়ে দিয়েছি চিঠি জমা বুক পকেটে
এখন পথিক হয়ে পথে পা বাড়াই
তবু যেতে যেতে কেন থমকে দাঁড়াই।
আয়নায় জেগেছিল কাজল দু চোখ
লেগেছিল লাল টিপ, স্মৃতির সূচক
তার সব ভেঙ্গে কাচ দু পায়ে মাড়াই
তবু যেতে যেতে কেন থমকে দাঁড়াই।
২২/০১/২০২৩

——————————————–
“ছোট্ট টমাস”
এইযে তোমাদের মতোই ছোট্ট একটা ছেলে টমাস। বয়স 7 কি 8।এই সময়কা্র এতটুকু বয়সের ছেলে-মেয়েরা সাধারণত যেমন দুরন্ত প্রকৃতির হয়,টমাস ছিল তেমনই এক দুরন্ত ছেলে।হয়ত একটু বেশিই দুষ্টু প্রকৃতির ছিল সে।এই ছোট্ট টমাসের দুষ্টুমিতে রাজ্য যেন মাথায় উঠত!সারাক্ষণ সে দুষ্টুমিতে ডুবে থাকত।এমনকি স্কুলে গেলে সে যেন হয়ে গেত আরো বেশি দুষ্টু,আরো বেশি দুরন্ত।তার সেই দুরন্তপনা ভাব যেন যে কাউকে পরাস্ত করতে বাধ্য।স্কুলে গিয়ে সে যেন তার সাথে আরো কিছু সহপাঠী পেত,যারা তারই মতো একই প্রকৃতির।আর সেজন্যই সে স্কুলে তার সহপাঠীদের সাথে মিলে আরো বেশি মজা করতে পারত,আরো বেশি দুষ্টুমিতে মেতে উঠতে পারত।এমনকি পুরো স্কুল তার দুরন্তপনার সাথে পেরে উঠছিল না।পুরো স্কুল যেন তার দুষ্টুমিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল।
টমাসের জীবনটা এভাবেই কেটে যাচ্ছিল দুষ্টুমি আর দুরন্তপনার এক সংমিশ্রণে।রোজ সে স্কুলে যেত এবং তার সহপাঠীদের সাথে নানা ধরনের মজা আর দুষ্টুমি করে বেড়াত।হঠাৎ একদিন স্কুল থেকে ফিরে স্কুল ব্যাগটা থেকে একটি চিঠি এবং কিছু ক্যান্ডি বের করে তার মা এর কাছে গিয়ে বলল,”জানো আম্মু,প্রিন্সিপাল আমাকে আদর করে ডেকে কিছু ক্যান্ডি দিয়েছে।আর এই যে,এই চিঠিটা তোমার জন্যে পাঠিয়েছে।এই নাও আম্মু।”
টমাসের মা ছেলেকে জিজ্ঞেস করল,”কিন্ত টমাস,তুমি কি চিঠিটা পড়ে ফেলেছ?তারপর আমাকে দিচ্ছ না তো? ”
টমাস উত্তর দিল, “না, আম্মু। আমি তোমার চিঠি পড়িনি।এমনকি খাম থেকে খুলিনি পর্যন্ত।আচ্ছা আম্মু,প্রিন্সিপাল চিঠিতে কি লিখে পাঠিয়েছে? পড়ে আমাকে শোনাও না!”
“আচ্ছা, আচ্ছা শোনাচ্ছি। তুমি ক্যান্ডিগুলো খেতে থাকো। আমি তোমাকে পড়ে শোনাচ্ছি।”
“হ্যাঁ,হ্যঁা।শোনাও আম্মু। জলদি শোনাও।”
চিঠিতে প্রিন্সিপাল কি লিখেছে, সেটা শোনার জন্যে যেন টমাসের আর তর সইছে না।তার যেন কৌতূহলের শেষ নেই চিঠিতে কি লিখা হয়েছে।
মা চিঠিখানা খুলে পড়ে কান্না করতে লাগলেন!মাকে এমনভাবে কান্না করতে দেখে টমাস বলতে লাগল,”আম্মু,তুমি এইভাবে কান্না করছ কেন?কি হয়েছে?চিঠিতে প্রিন্সিপাল কি লিখেছে?”
মা কান্না থামিয়ে,চোখ মুছতে মুছতে ছেলের কথার প্রতিউত্তরে বললেন,”আব্বু, এ কান্না আনন্দের কান্না, এ অশ্রু আনন্দের অশ্রু! ”
কথাগুলো বলেই ছেলেকে জড়িয়ে ধরে মা ছেলের কপালে চুমু খেলেন।তারপর মা বলতে লাগলেন,”আমার ভালো আব্বু।আমার ব্রিলিয়ান্ট ছেলেটা।দাঁড়াও,তোমাকে চিঠিটা পড়ে শোনাচ্ছি।”
মা আনন্দের সাথে জোড়ে জোড়ে চিৎকার করে পড়তে লাগলেন কিন্ত চিঠিতে যা লেখা ছিল তা কিন্ত নয়,নিজের মতো করে প্রিন্সিপালের লেখার ভাষা পাল্টিয়ে,”ম্যাম,আপনার ছেলে মারাত্মক ধরনের মেধাবী।ওর মেধা এতই উচ্চ পর্যায়ের যে আমাদের স্কুলে এই ছেলেকে শিক্ষা দেওয়ার মতো কোনো শিক্ষকই নেই।এমনকি এই ছোট্ট শহরে ওকে শিক্ষা দেওয়ার মতো কোনো শিক্ষকই নেই হয়তো।তাই যদি পারেন তাহলে ছেলেকে বড় শহরের কোনো স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিলে ভালো হয়।এই ছেলেটিই একদিন সারা বিশ্বের প্রচুর সুনাম অর্জন করবে!”
টমাস মাকে বলল,”আচ্ছা মা,সবই তো বুঝলাম।কিন্ত তাহলে আমাকে পড়াবে কে?আর কেউ যদি আমাকে না ই পড়ায় তাহলে আমি বিশ্বের সুনাম অর্জন ই বা কীভাবে করব?”
মা চিঠিখানা পড়া শেষ করে আবারো চুমু খেয়ে বললেন,”আরে আমার বোকা ছেলেটা।আমার এই জিনিয়াস ছেলেটাকে আমি নিজেই পড়াব।এখন থেকে আমার ছেলেটা আমার কাছেই পড়বে।কী কেমন!ঠিক বললাম তো? পড়বে তো আমার কাছে?”
ছেলে মাথা নাড়িয়ে উত্তর দিল,”হ্যাঁ,আম্মু।অবশ্যই পড়ব।”
এভাবে দেখতে দেখতে কেটে গেল অনেকটা সময়।একসময়কার এই ছোট্ট ছেলেটাই হয়ে উঠল আমেরিকার তথা সমগ্ৰ বিশ্বের অন্যতম সেরা বিজ্ঞানী!হয়ে উঠল ছোট্ট টমাস থেকে টমাস আলভা এডিসন!”
এই টমাস আলভা এডিসনের হাত ধরেই আসতে লাগল বিজ্ঞান জগতে এক একটি গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার।তাঁর এক একটি আবিষ্কার যেন বিজ্ঞান জগতে এক একটি আর্শীবাদ রূপে আবির্ভূত হতে লাগল!তাঁর হাজারো আবিষ্কারের মধ্যে অন্যতম কিছু সেরা আবিষ্কার হল বৈদ্যুতিক বাল্ব,শব্দ রেকর্ডিং,মুভি ক্যামেরা বা চলমান ছবি ইত্যাদি।
মায়ের মৃত্যুর পর একসময় টমাস মায়ের সেই ছোট্ট গ্ৰামের ছোট্ট বাড়িতে গিয়ে ঘর পরিষ্কার করার সময় ছোটবেলায় দেওয়া প্রিন্সিপালের সেই চিঠিটা পেল।ধুলোর আস্তরণে ধূসরিত হয়ে ছিল চিঠিটা।কেন যেন টমাসের চিঠিটা পড়ার জন্যে খুব আগ্রহ জাগল।টমাস চিঠিটা থেকে আস্তে আস্তে ধূলোর স্তর সরাতে লাগলেন।টমাস চিঠিটা পড়লেন।চিঠিটা পড়ার পর টমাস তার কান্না থামিয়ে রাখতে পারলেন না।তার চোখ দিয়ে টপ টপ করে পড়তে থাকল এক একটি অশ্রু।সমানে চলতেই থাকল টমাসের সেই অশ্রুধারা।
আপনারা কি জানেন,চিঠিতে কি লেখা ছিল?তাতে লেখা ছিল,
“ম্যাচ,আপনার ছেলে টমাস একজন মেন্টালি রিটার্ডেড।সে এতটাই নির্বোধ যে ওকে শিক্ষা দেওয়ার মতো আমাদের কোনো ক্ষমতা নেই।এমনকি আমি মনে করি আপনার ছেলেকে পড়াতে পারবে এমন কোনো শিক্ষক নেই।তাছাড়াও আপনার ছেলের জন্যে আমাদের স্কুলের সুনাম দিন দিন ক্ষুন্ন হবে বলে আমরা মনে করি।সুতরাং স্কুলের কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আপনার ছেলেকে স্কুল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হলো।”

লেখা:শাওন আহমেদ

——————————————-
পায়রা
মোঃ আপন ভূঁইয়া
২২/০১/২০২৩

গভীর ভাবনায় আচ্ছন্ন এই পায়রা,
পায়রাটি প্রেয়সী বিহীন, বড়ই যাযাবর!
বুকভরা আশা মিটবে প্রেম পিপাসা!
এই প্রত্যাশা, পাবে আদর, ভালোবাসা।
পায়রাটির ভালবাসা অতুলনীয়।
পায়রাটির‌ মনের ভালবাসার শক্তি অপরিসীম
ক্ষণেক্ষণে চোখে হারায় সঙ্গীনিকে
পায়রাটি প্রেম পিপাসায় কাতর,
চোখে, ঠোঁটে, মুখে, অন্তরায় জাগে
তারুণ্যের সুগন্ধি এবং স্বর্গীয় প্রেম!

ধন্যবাদ

——————————————–
)(~ পৃথিবী যখন শান্ত হবে ~)(

চন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়
দুর্গাপুর
২১/০১/২৩

পৃথিবীর সব ভয় তখন চলে যাবে
পৃথিবী যখন শান্ত হবে
তখন পড়ন্ত এক শান্ত বিকেল বেলায়
গল্প করবো তোমার সাথে।

আমি পাগলের মত তোমার সব গল্প
শুনবো বসে অল্প অল্প
আর খিলখিল করে হাসবো সব শুনে
ধ্বনিত হবে সেতারের সুর ।

প্রাণহীন সেতারে যদি থাকে এত সুর
নাজানা কত কথা সুমধুর
তাহলে তুমিও নিশ্চয়ই জানো হৃদয়ের
সব পুরানো ব্যথা ।

কিছুটা বুঝে নিতে হয় হৃদয়ের সঙ্গমে
জীবন পৃথিবীর সংগ্রামে
আমার ছবি দেখে কি ভাব জাগে না তোমার
মন সমুদ্রে ওঠে না ঢেউয়ের বাহার ?

জড়ো হলেও আমার কাছে এই জীবন্ত সমুদ্র প্রবাহে সচল কত প্রাণবন্ত
পৃথিবীর রুদ্ররূপেও শান্ত সমুদ্রের গভীরে
সেতারের জ্বালা যন্ত্রণা।

পাতার পর পাতা ইতিহাস লেখা হয়ে যাবে
পৃথিবী যখন শান্ত হবে
তোমার আর আমার জীবন লীলা নিয়ে
চলবে কত কাহিনী ।

——————————————–

বিষয়—কবিতা
শিরোনাম–আপনজন
কলমে–প্রতিমা চ্যাটার্জী
তারিখ—21.01.2023

আপনজন খুঁজতে গিয়ে
পেলাম কি কিছু?
রূপকথারা যেখানে কথা বলে
সেই তেপান্তরের মাঠের ধারে
চুপিচুপি অপেক্ষায় থাকে যে
একান্ত আপন
যার শরীরের বিন্দু বিন্দু ভালোলাগার পল্লবিত আঁখি কুঞ্জের বৃষ্টির ফোঁটা
ছোঁয়ার চেষ্টা
আর মন কেমনের
জন্মদিনে সামিল হওয়ার
অনাবিল তৃপ্তিতে ভরে ওঠা মন
অন্তিমে সবই একাকার হয়ে যায়!!
তবুও খুঁজে ফিরি
যা হারিয়েছি
সেই আপনজনের ঠিকানা
জানিনা আর পাবো কিনা
তবুও থাকবো সারাজীবন
প্রতিদিন একদিনের অপেক্ষায় !!

——————————————–
“অনস্বাদিত স্বাদ”

রুমী মজুমদার

২১/১/২৩

জীবন কে অতীতের খাতায় লিখতে গেলে
কেমন যেন একটা অনাস্বাদিত স্বাদের আলোড়ন ঘটে…
কেমন যেন অসহায়তা… হয়তো সেখানে থাকে স্মৃতির অমূল্য কিছু প্রাপ্তির প্রত্যাশার অনুরনন,
সে স্বাদ হোক যতই হোক লবনাক্ত যতই স্যাঁত স্যাঁতে,
কত স্পর্শের সুখের অভিনবতা থাকে সে খাতায় লেখা ,
থাকে নিঃশ্বাসের অপূর্ব কিছু সুগন্ধ …
একদিন ঔজ্জ্বল্যতার কাজল কালো
অক্ষরের বিন্যাসে সুশোভিত,ছিলো সেসব ছবি।
আজ ফ্যাকাসে ধুলোর ধূসরিত নিস্তব্ধতা ঘিরে আছে
আলোর অস্তিত্ব নেই অন্ধকারের শরীরের আচ্ছন্ন ,
স্পর্শের অস্তিত্বের হাত ধরে চলেছে, কিছু অসহায়তা,
অভিমানের ফেনীল জলোচ্ছ্বাসে
যন্ত্রণারা আছড়ে পড়ে…
স্মৃতিগুলো কথা বলে অনুভবের অনুরননে, মনের গভীরতায়….
কবিতার ছন্দে শরীর আজ মাটির গন্ধে আসক্ত , নিঃশ্বাসের ছোঁয়ায় জীবনকে উপলব্ধি করা,
অনুভূতির কোলাহলে জীবন আজ অসহায় ,
অন্দরে আজ জীবনের জীজ্ঞাসারা উত্তর চায়…
কিছুক্ষণের অনমনীয়তা আরও কাছে থাকার আলোড়নের ছায়া ফেলে ,
দুচোখে স্বপ্নের কাজল কথা বলতে চায়..
নিজের সাথে,
নিরবতার কিছু কথা অবশেষে তোমার কাছে আসা,
আজ আমার খুশির নিমগ্নতায় আমি ডুবে আছি তুমি কি তা জান,
আমার খুশির ব্যাথারা প্রশ্ন তোলে…
ঐচোখে দেখেছি সাগরের নীলহীরে ,
অসীম উচ্ছ্বাসেও নিভে যাওয়া নির্জনতার গ্রাসে,
কথাগুলো জীবনের সব কথা বলে যায় …।

Powered by themekiller.com