।। স্বার্থপরের জীবন বিনিময় ।।
– আব্দুল্লাহ আল মামুন রিটন
যতদূর চোখ যায় বড় কোন গাছপালা নেই৷ শুধু ছোট ছোট ঘন সবুজ ঘাসের বিস্তীর্ণ ভূমি৷ খুবি ছোট্ট উলঙ্গ একটা ছেলে আমার হাত ধরে হাঁটছে৷ আমরা বহুক্ষণ ধরে হাঁটতে হাঁটতে একটা একটু উঁচু গোল টিলার উপর পৌঁছে গেছি৷ ছোট্ট ছেলেটি হঠাৎই আমাকে দাঁড় করিয়ে বললঃ
“এটাই সেই পবিত্র জায়গা৷ এখানেই আমরা আমাদের আত্মার বিনিময় করবো৷”
ছেলেটি কথা শেষ করেই ও ওর বুকের ভিতর হাতটা অনায়াসে ঢুকিয়ে দিয়ে তার কচি হৃৎপিণ্ড টা বেড় করে আমার সামনে ধরলোঃ
“জলদি করো৷ সময় পাওয়া যাবে না৷ এবার তুমি তোমার বয়ষ্ক মৃতপ্রায় হৃৎপিণ্ড টা বেড় করো৷”
ছোট্ট ছেলেটির কথা মতোই আমিও আমার বুকের ভিতর হাত ঢুকিয়ে দিয়ে আমার বয়সের ভারে কুঁচকে যাওয়া হৃৎপিণ্ড টা বের করে আনলাম এবং ছেলেটির বাড়িয়ে দেয়া হৃৎপিণ্ড টা আমার বুকের ভিতর ঢুকিয়ে দিলাম৷
ছেলেটি আমার হৃৎপিণ্ড টি নিয়ে খুব কষ্টে হাঁফাতে হাঁফাতে একটি গর্ত খুঁড়ে পুঁতে দিলো৷ আমি হতভম্ব হয়ে জানতে চাইলামঃ
“তুমি আমার হৃৎপিণ্ড টা তোমার বুকে সেট করে না দিয়ে পুঁতে রাখলে কেন, তুমি বাঁচবে কী করে?”
ছেলেটি খুব কষ্টেও মৃদ হেসে বললোঃ “ওটা নিয়ে আমি হয়ত আর দুই দিন বাঁচতাম৷ ওটার তো মেয়াদ শেষ৷ পৃথিবীর মত স্বার্থপরদের জায়গায় আমি যেতে চাইনা এবং তোমার আরও কিছু স্বার্থপর হবার বাকি আছে বলেই আমি এই বিনিময় করলাম৷ এবার আমি যাই তবে….”
ছট্ট উলঙ্গ ছেলেটি কথা শেষ হতেই মাটিতে পড়ে গেল এবং মুহুর্তেই হাওয়া হয়ে গেল। আমি নিরুপায়ের মত বাধ্য হয়ে আমার আমার ফেরার পথ ধরলাম৷ যে পথটা চলে গেছে স্বার্থপরদের পৃথিবীর দিকে৷ আমি ফিরলাম নতুন করে স্বার্থপর হতে৷
__________ রিটন