Breaking News
Home / Breaking News / দুই বাংলার বৃহত্তম নেটওয়ার্ক দৈনিক শব্দনগরের আজকের সেরা ছয় সাহিত্য

দুই বাংলার বৃহত্তম নেটওয়ার্ক দৈনিক শব্দনগরের আজকের সেরা ছয় সাহিত্য

বেদনারা অমলিন”
রফিকুল ইসলাম

চাঁদকে নিয়ে কত উপমা কত কাব্যের ব্যঞ্জনা
যে চাঁদ রাত জেগে স্নিগ্ধ জোছনা বিলায়
যে চাঁদের জোছনা রূপের এতো বন্দনা
তবুও সূর্য রাহু গ্রাসে মাতে বুনো উল্লাসে
চাঁদের বুকে আঁকা আছে সে বেদনার আল্পনা।
সে কলঙ্করেখা বুকে নিয়ে আজও আকাশে ভাসে
অশুভরাতের সমস্ত অন্ধকার শুষে নিয়ে
পৃথিবীকে আলো দেয়,
ভরা পূর্ণিমা চাঁদে কারো মরা প্রেম জাগে।
রাতের অনুপম রূপালি জোছনা গায়ে মেখে
বেদনার কবিতারা শিশিরের মতো ঝরে,
এখানে চাঁদ ও নারী রূপালি রাতের নগরে।
বিরহী চকোর চাঁদের মুগ্ধতায় অসীমে উড়ে যাক,
কেউ তো চেয়েছিল একদিন চাঁদের কলঙ্ক দাগ
তিল হয়ে তার প্রিয়তির গালে থাক।
এ বিশ্ব জগতে কত বঞ্চিত মানুষের কান্নায়
নিস্তবদ্ধতা ভেঙে শত সহস্র নদী বয়ে যায়,
নদী ছুটে যায় সুখ সন্ধানে সাগর সঙ্গমে।
অসমাপ্ত প্রেমের অভিমানে চাঁদ
প্রতিবিম্ব ছায়া ফেলে সমুদ্রের স্ফীত করতলে,
শোকার্ত সমুদ্র ঢেউ আছড়ে পড়ে বালুকার চরে
চাঁদ ও সাগর বেদনার জোয়ার ভাটা খেলে চলে
বিষাদের লোনা নীল জলে।
মহাসমুদ্রের হাহাকার শুনে উড়ে যায় গাঙচিল
বেদনারা চিরকাল অমলিন,
সাগর জলে হয় কি কখনো বেদনা বিলীন!

——————————————–

পোস্ট অনলি শব্দনগরে
অধিকারিণী
নুর এমডি চৌধুরী
ছোটগল্প
বেশ দিন লক্ষ করছি একটা ছোট্ট মেয়ে রোজ ভোরে বকুল ফুলের গাছটার নীচে এসে কিছুক্ষণ দাঁড়ায়। এদিক সেদিক তাকায় কি যেন কি খেয়াল করে তারপর ঝড়ে পড়া ফুলগুলো দ্রুততার সহিত জামায় ভরে পালিয়ে যায়।
ভাবছি নিশ্চয়ই মেয়েটি কোন মালিনী হবে। পরদিন প্রাতে বেলকনিতে দাঁড়িয়ে রই। যথা সময়ে মেয়েটিও এসে হাজির হয় ফুল গাছটির নীচে। যখন এদিক সেদিক তাকিয়ে কি যেন কি খেয়াল করতে থাকে ঠিক তখনি আমি দ্রুততার সহিত দু’তলার সিঁড়ি বেয়ে নীচে নেমে যাই।
মেয়েটি ততক্ষণে মাথা নিচু করে ফুল কুড়চ্ছিল। যখনই মাথাটা উঁচু করে তাকাল দেখল অদ্ভুত ভাবে এই আমিটাকে। ভীষণ ভয় পাচ্ছে যেন সে। আমি মৃদু হাসি হেসে বলি, ভয় পেয়োনা। তোমার নাম কি শুনি? ভয়ে ভয়েই নামটি বলে, আরাধ্য। নামটি বেশ সুন্দর কিন্তু একজন মালিনীর এতো সুন্দর নাম হয় কি করে। ভাবনায় পড়ি ফের ভাবি মালিনীর কি সাধ নেই যে সুন্দর নামের অধিকারিণী হতে। তাছাড়া নামের তো কোন নিষেধ নেই নিষেধ তো শুধু কামের।
বলি, খুব সুন্দর নাম তোমার। কে রেখেছেন এই নামটি? বলে জানিনা বলেই চোখ দু’টো আড়াল করে নেয়। বুঝলাম মেয়েটি কষ্ট পেয়েছে খুব। তারপর যতই প্রশ্ন করছিলাম ঠিক ততই কঠিন বাস্তবতাকে অনুধাবন করছিলাম।
মেয়েটি বাবা মা হারা। দুঃসম্পর্কের খালা রাহেলার কাছে থাকে। রাহেলা অন্যের বাসায় কাজ করে। তবে রোগে শোকে এখন সে শয্যাশায়ী। ঘরে খাবার নেই ঔষধ নেই তাই আরাধ্য মালিনীর কাজ করে। এই ঝরা বকুল ফুল কুড়িয়ে মালা গাথে তারপর গাড়িতে গাড়িতে বিক্রি করে যে পয়সা পায় তাই দিয়ে তাদের কোন রকম সংসার চলে।
আমি আরাধ্যর মুখ থেকে কথাগুলো শুনছিলাম আর বন্ধু তামিম রাজের জীবনের গল্পের সংগে মিলাচ্ছিলাম। তামিম রাজ আমার কলেজ বন্ধু। বেশ বড় লোকের ছেলে। প্রেম করে বিয়ে করে এক গরীব ঘরের মেয়ে আরজুমনোয়ারাকে কিন্তু তার বাবা মা স্ত্রীকে ঘরে তুললেও মনের কোঠায় স্থান দেয়নি কখনও। নানা ভাবে অত্যাচারিত হতো আরজুমান। যতটুকু অত্যাচারিত হতো তার বিন্দুমাত্রও বন্ধু তামিম রাজকে জানতে দিতো না।
একজন ভদ্র মেয়ে আরজুমান। তাই স্বামীর মনে কষ্ট পাক কিংবা সংসারে তাদের মাঝে দ্বন্দ্ব সংঘাত হোক আরজুমান তা কখনই চাইতো না আর একারণেই তার সরলতার সুযোগ পেয়ে শশুর শাশুড়ি দিনে দিনে এতোটাই নির্মম আচরণের সূত্রপাত করতে থাকে যে কল্পনাকেও হার মানায়।
আরজুমান এর গর্ভে যখন সন্তান আসে কৌশলে বন্ধু তামিম রাজকে তার বাবা মা কানাডায় পাঠিয়ে দেয়। শুরু হয় তার উপর আরও দিগুণ প্রহার। রাত দিন অন্তঃসত্ত্বা অবস্থাতেই কাজ করে সে। কাজের মেয়ের সাথেই হয় তার থাকা খাওয়া। কাজের মেয়ের মতই তার অবস্থান।
তামিম রাজ যখন বিদেশ চলে যাবে তার আগমুহূর্তে আমাকে তার বাসায় নিমন্ত্রণ করেছিল। আমিও সস্ত্রীক রাতের খাবারে অংশ নিয়েছিলাম। সেদিন খেয়াল করেছিলাম তামিম রাজের মাঝে সেই আগের আভিজাত্যের ছাপটা যেন বেশ মলিনতায় ছেয়ে গেছে। বলেছিলামও কিরে দুস তোকে এমন দেখাচ্ছে কেন? সে হেসেই উড়িয়ে দিয়েছিল সেদিন। বলেছিল বিয়েতে বেশ ঝামেলা গেছেরে দুস তাই কাউকে ইনভাইট না করেই বিয়েটা সেরে ফেলেছি। বলেই স্ত্রী আরজুমানকে ডেকে পরিচয় করিয়ে দেয়। বেশি একটা সময় দেয় না আরজুমান।
যখন চলে আসি তখনও যখন আরজুমানের দেখা না পেলাম যথারীতি বন্ধু তামিম রাজকে বলেছিলাম, কীরে দুস এতোটা বড়লোকের মেয়েকে বিয়ে করলি যে আমাদের পাত্তাই দিলোনা। এই কঠিন কথাটাকে আর তামিম হেসে উড়িয়ে দিতে পারলো না। টলমলে চোখ দেখে কিছুটা আন্দাজে নিয়েছিলাম এখানে কিছু একটা প্রবলেম রয়েছে। তামিমও বলল ফোনে কথা হবে। ভালো থাকিস কথা হবে বলেই গাড়িতে চেপে বসলাম।
আমার স্ত্রী এতক্ষণ চুপচাপ ছিল। গাড়িতে বসেই বড় একটা দম ছেড়ে বলল, বাচা গেলরে বাবা কি অস্থির মাঝে ছিলাম। আমিও সাই দিয়ে বললাম, সত্যিই বলেছ।
জীবনের প্রয়োজনে অর্থ আর অর্থের পেছনে ছুটে চলতে গিয়ে মানুষ যে কত কিছু হারায় তা সে টের পায় না। টের পায় তখন তখন অভাবে পড়ে। আমরা জানি অর্থনৈতিক সংকটই বুঝি অভাব। না, তা নয় সবচেয়ে বড় অভাব মানুষের জীবনে ভালোবাসা স্নেহ মায়া। সুতোর একদিকে টান পড়লে আরেকটা দিক যেমন ছিঁড়ে যায় তেমনি সংসার জীবনের প্রথম ধাক্কায় আমরা কিছু পেলেও অনেক কিছুকে হারাতে বসি।
তামিম রাজ বিদেশ চলে গেছে কবে জানিনা। কেমন আছে সেও জানিনা। তার ফোন দেওয়ার কথা ছিল সেও দেয়নি। তারপর যখন সে আমাকে জানিয়ে যখন তখন সব শেষ।
আরজুমানকে তার শশুর শাশুড়ী চরিত্রহীনা অপবাদ দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দিলে আরজুমান পূর্ব পরিচিত হত দরিদ্র স্বামী সন্তানহীনা রেবেকার আশ্রমে ঠাই নেয়। দিন যেতে থাকে আরজুমানের শরীরের অবস্থা খারাপ হতে থাকে। গর্ভাবস্থায় যে খাবার চিকিৎসার প্রয়োজন তার কোনটাই সে পায় না। এমনকি তিন বেলা ডাল ভাত খেয়ে জীবন ধারণ করবে সেও মাঝে মধ্যে জুটেনা। এভাবেই দিন পেরোতে থাকে।
এদিকে শশুর শাশুড়ীর দেওয়া অপবাদের কথা আরজুমানের বাবা মার কানেও পৌঁছে দিয়েছে তার শশুর শাশুড়ী। একদিন আরজুমান মাকে ফোন দিয়ে বলিতেছিল মাগো, অনেক মিথ্যে বলেছি এতদিন তোমাকে আজ একান্ত সত্যটাই বলবো আমি ভালো নেই মা কোন দিন ভালো ছিলাম ওনা। আমার জীবনটা যেন অগ্নি পরীক্ষার মত বারবার কঠিন পরীক্ষায় অবতীর্ণ হচ্ছি।
মা তার কোন কথাই শোনলনা। পাষাণ মানুষের মত সাব বলে দিল কলঙ্কিনী তোর কোন কথাই আমি বিশ্বাস করবোনা তুই আমাদের জাত মেরেছিস আমাদের উপর কলঙ্কের কালিমা লেপন করেছিস। যা গলায় দড়ি দিয়ে মর বলেই সেই যে ফোনটা রেখে দিয়েছে আর কোনদিন কারও সাথে শত চেষ্টা করেও যোগাযোগ করতে পারেনি আরজুমান।
যেদিন ঘর থেকে বের করে দেয়া হয় দু’দিন পর আরজুমান ফোন করেছিল স্বামীকে বলেছিল স্বামী, আজ আমি আর কোন কথাই গোপন রাখবনা। সব খুলে বলব। কিন্তু হায় অভাগা যেদিকে চায় সাগর শুকিয়ে আয়। আরজুমানের অবস্থাও তাই হল।
তামিম রাজ ইতিমধ্যে জেনে গিয়েছে আরজুমান চরিত্রহীনা। তাই আরজুমানকে সাফ জানিয়ে দিলো কোন চরিত্রহীনা নারী আমার স্ত্রী হতে পারেনা। অনেক কাকুতি মিনতি করে গর্ভে থাকা সন্তানের কসম খেয়েও তামিম রাজকে বিশ্বাস করাতে পারেনি যেদিন। বরং এমন একটা অপবাদ ছুড়ে দেয় তামিম যেন পুরো আকাশটা আরজুমানের মাথায় উপর ভেঙে পড়ে।
বিনা মেঘেই বজ্রপাত হতে থাকে তার দেহজুড়ে। কান্না শুকিয়ে যায় চোখে যেন তিমির অন্ধকার দেখতে থাকে আরজুমান।জীবনের উত্থান পতনের কত বিচিত্রতা যার জীবনে এসেছে কেবল সেই জানে জীবনটা কখন কতটা দুর্বিষহ হয়ে উঠেতে পারে একটা নারীরজীবনে। সরলা আরজুমান বাচতে চায় কেবল বাচাতে চায় তার গর্ভে আসা সন্তানকে। বিধাতাকে প্রতিনিয়ত ডেকে বলে ওগো বিধাতা, তুমি আমাকে সাহস দাও বোকে শক্তি দাও তোমার এই কঠিন পরীক্ষা ক্ষণে আমি যেন ধর হারা না হই।
স্বামীকে কিন্তু মা যে সব কথা বলেছে তাতে তার মনে হয়েছে গলায় দড়ি দেওয়া উচিত কিন্তু না সন্তানের কথা ভেবে আরজুমান সকল অত্যাচার নির্দ্বিধায় সয়ে যাচ্ছে। আরজুমান একদিন সন্তানের প্রসব ব্যথা উঠে সন্তান জন্ম দিয়ে পাড়ি জমায় চিরস্থায়ী ঠিকানায়।
সন্তানের নাম রাখে রেবেকা আরাধ্য। কষ্টে বিস্ট করে নিজ সন্তান স্নেহে আরাধ্যকে লালনপালন করতে থাকে রেবেকা।
তামিম রাজ ব্যস্ততা মাথায় চাপিয়ে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছে। কয়েক বছর পর রজনীর দ্বিপ্রহরে আমার মোবাইল ফোনটা বেজে উঠলে আমি হিমশিম খেয়ে উঠি না জানি কার কি হল। পরিচিত কোন নাম্বার নয় একটা বিদেশী নাম্বার থেকে ফোন। তবু ভয় ব্যবসার কোন মন্দ খবর কিনা। ফোনটা রিসিভ করি। কান্না কণ্ঠ সম্বোধনটায় মনে হল খুব কাছের কেউ। এক পর্যায়ে চিনতে পারি।
চলবে.…

——————————————–

৷৷ ঐ ছেলেটা ৷৷
…………………………………
গৌতম মণ্ডল

ঐ ছেলেটা,
ছটপটা টা ৷
উসকো মাথা
ফোক্ লা দাঁতা ৷
ঐ ছেলেটা –
ধূলা মাখা ৷
ময়লা গা তোর
নোংরা দু – পা ৷

ঐ ছেলেটা –
চললি কোথা ?
বাঁশের লাটাই
মাঞ্জা সুতা ৷
উড়াস ঘুড়ি
নীল আকাশে ৷
ছোট্ট চোখে
স্বপ্ন ভাসে ৷
গঙ্গা ফড়িং
ধরিস নাকি ?
উড়ছে রঙিন
পজ্জাপতি !

ঝোপের আড়ে
কিচির – মিচির
দুই শালিকের
ঝগড়া – ঝাঁটি !
ধানের শীষ
চট্ কে ছিঁড়ে
মাঠের ধারে
বেড়াস ঘুরে ৷
রাখালিয়া —
বাঁশির সুরে ৷
ডাকছে মা তোর
একলা ঘরে ৷
যেই না ডাকে
নামটি ধ’রে ,
মন ছুটে যায়
মায়ের তরে ৷
কইরে খোকোন —
ছুটলি কোথা ?
ঘুচলো না তোর
দুষ্টুমিটা ৷

……………………………………………….
তাং- ০১/১২/২০২২
দাসপুর, ঘাটাল , পশ্চিম মেদিনীপুর ৷

——————————————-

অসীমের তরে
কামরুল হাসান রিয়াদ
১৬ই নভেম্বর, ২০২২খ্রি.

এক অনন্ত পথে নৌকো বেয়ে চলছি যেন
মাঝ নদীতে আমি, না পারের কাছে, জানিনা।
চারিদিকে তাকিয়ে কোন কিনারার কিছুই দেখছিনা
না কোন নৌকো, না চর, কিচ্ছুনা
আমি শুধু বেয়েই চলেছি যেন।
আমি কোথায় যাচ্ছি, কোন দিকে যাচ্ছি, সীমানা
কিছুই বুঝছিনা।
মনের মাঝে শুধু এক বিন্দু আশা
এই অনন্ত পথে দিন কি রাত সব সমান লাগছে
আলো থাকলেও আমার হয়ত তাকাতে বারণ
তাই দিনের সূর্যের আলো নাকি রাতের ঘোর অন্ধকার
সবই সমান এখন।
কোন দিকে যাচ্ছি, তীর কোথায় আছে জানিনা
দিক না জানা পথিকের কাছে উত্তর-দক্ষিণ সবই সমান
তারা ঝলমলে জোছনাও দেখিনা,
দেখতে চাইতে পারিনা
আমি তাকালেই সমস্যা
তাই চোখ খোলা নাকি বন্ধ কিছুই যায় আসেনা
আমি শুধু অন্ধের মত অন্তহীন সীমানায় বন্ধ
হাত বাড়িয়ে জোছনা ধরার সাহস আমার নেই
আজকাল অনেক ভয় পাই আমি
যে পথের দিশায় তোমায় পাওয়া যাবে
সে পথেই ছুটতে চেয়েছি
চেয়েছি অনন্তের সীমান্ত ছুঁয়ে হলেও তোমায়
ব্যথারাও এখন যেন সীদরাতুল মুনতাহায়
শুধু আরেকটু পথ বাকি
ততক্ষণ নাহয় এভাবেই থাকি
আঁধারের অতল হতেই বুঝি আসলো আহবান
যা ছিল আমার তা সবই করেছি দান
যদি এতেও না বুঝো তুমি না ই ভরে প্রাণ
তবে তোমার তরেই হোক জীবনাবসান।

——————————————–

“হায়রে আমরা”
সুনীল বণিক।
০১/১২/২০২২
****************
আমরা জানিনা কি পেয়ে
কি হারালাম,
সময় কোথায়, তেমন ভেবে
দেখার আজ।
জলের স্রোতের মতো জীবন,
যন্ত্রের মতো জীবন,
পাওয়ার নেশায় হারাই সত্য,
মিথ্যা কে অবলম্বন করে
জীবন নিঃস্ব।
নিজেকে লুকিয়ে অন্যকে
তালাশ করি প্রতিনিয়ত।
খোঁজার তাগিদে শেষ হয় দিন,
শেষ হয় সফর।
ফলাফল শুধু হতাশা, শূন্যতা।
এই সবজান্তা যুগে আমরা
হই ভিখারী পরোক্ষ ভাবে।
কারণ ছেড়ে অকারণে ছুটি,
লক্ষ ছেড়ে উপলক্ষে চলি।
জীবন সাজাই মেকি হাসি দিয়ে।
হায়ে রে আমরা আর আমাদের
এই ছোট্ট জীবন।।

——————————————-

সেই আকাশটা

দীপঙ্কর দত্ত

নীপার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকতাম বলে,
নীপা প্রায়শই বলতো,
বোকার মত আমার চোখের দিকে চেয়ে কি দেখ?
আমি ওকে কোনদিন কারণ টা বলতে পারিনি,
বা বলিনি ইচ্ছে করেই,
তাহলে আমার আকাশটা মেঘে ভরে যেত।
নীপার চোখে আমি দেখতুম একটা সুনীল আকাশ,
যেখানে মেঘের ভীড় ছিল না,
রোদে ঝলমল করতো,
শুক্লপক্ষের পূর্ণ চাঁদটা যেন
একমুখ হাসি নিয়ে আমাকে ডাকতো,
কৃষ্ণপক্ষের রাতে অগুন্তি তারারা জ্বলজ্বল চোখে মিটিমিটি চেয়ে থাকতো,
সেই ছোটবেলা থেকে যে আকাশটাকে ছুঁতে কতবার দিগন্তে ছুটে যেতাম,
সেই আকাশটাই যেন দেখতে পেতাম নীপার চোখে,
আমার হাতের নাগালে।
নীপা আজ বহুদূরে,
আমার সেই আকাশটাকে আর দেখতে পাইনে,
মাথার উপর এখন শুধু মেঘের ঘনঘটা।

1/12/2022
কলকাতা।

Powered by themekiller.com