Breaking News
Home / Breaking News / দুই বাংলার বৃহত্তম নেটওয়ার্ক দৈনিক শব্দনগরের আজকের সেরা ছয় সাহিত্য

দুই বাংলার বৃহত্তম নেটওয়ার্ক দৈনিক শব্দনগরের আজকের সেরা ছয় সাহিত্য

শিরোনাম – কস্তূরীফুল
কলমে – এম এইচ নাপু
তারিখ – ২৬/১০/২০২২ইং

অযত্ন অবহেলায় খালবিল নদীনালায়
সারাটা বছর ভাসে জলে,
ফিরে না তাকায় কেউ দু পায়ে মাড়ায়
তারে আগাছার ছলে।

ফুটে ফুল তারও শাখে মোহনীয় রূপে
পুণ্যের চাঁদ যেন মুখটিপে হাসে,
আলো আর আঁধরের মায়াবী এই ক্ষণে
প্রেয়সীর মুখশ্রী মুগ্ধতায় ভাসে।

কুয়াশায় ভেঁজা পাপড়ি চুয়ে মুক্তা যেন ঝরে
প্রভাত প্রাতে শরৎকালে
স্নিগ্ধতায় ভরে মন মুগ্ধতায় বাঁধা পড়ে আঁখি,
বিমোহিত হই মোহজালে।

নিষ্প্রাণ নাই ঘ্রাণ তবুও রাঙায় হৃদয় মায়াবিনী
রূপের প্রসরা দেহ জুড়ে,
হাসনাহেনা শিউলি বকুল, শেফালিও হারায়
নিজ কূল আজ নতশিরে।

যৌবন তবুও অনাদরে কাটে সেই ফুলের
কদর নাহি কভু জোটে,
বৈরী ভ্রমর বেড়ায় ঘুরে বুক চিরে যায় উড়ে
মধু নাহি তার কভু লুটে।

এই শরতেই ফুটে সেই দেখিতে নয়নাভিরাম,
রূপের ছটায় ছড়ায় আলো কস্তূরী তার নাম।

——————————————–
হেমন্তের গান
মিতা পোদ্দার
তারিখঃ২৬/১০/২০২২খ্রিঃ

ভাদ্র,আশ্বিন শেষে এবার
হেমন্ত হলো শুরু,
প্রকৃতি -প্রেমী জীবনানন্দ
কাব‍্যের মহাগুরু।

ফসলের ক্ষেত ভরেছে আজ
মাঠের হলুদ ধান,
গৃহস্থের বাড়ি গল্পে চলে
ধান কাটার অভিযান।

ধান গাছের বুড়ো পাতায়
ভোরের শিশির জমে,
নবান্নের সাড়া জেগেছে পাড়ায়
কৃষকের পরিশ্রমে।

ফড়িং পাখি মনের সুখে
উড়ছে দলবলে,
ঘরে ঘরে আজ আনন্দ উৎসব
খুশি টলমলে।

গাঁয়ের যত হাওরড় -বাওর
শুকায় আপন মনে,
ছোট ছোট মাছ ধরতে
ব‍্যস্ত জনেজনে।

আনন্দ গানে চলো মাতি
ছন্দ সুর নিয়ে,
হেমন্তকে বরণ করি
এস সবে এগিয়ে।

——————————————–

হেমন্ত সম্ভার
আজিজুল হক, ২৬|১০|২০২২
শিউলি শাখে, বরই গাছে ফুলের মাতামাতি
কাঠ গোলাপ আর কাঁঠাল চাঁপার গন্ধে –
ব্যস্ত মৌটুসি।

হিমেল হাওয়ার ভরদিয়ে -অন্নপূর্ণা এলো –
ভরা হেমন্ত প্রিয়তির সাজে, মাঠে মাঠে
ফসলের ধূম –উন্মাদনায় উড়ে গেছে ঘুম।

সবুজ ধানের শিষে লেগেছে সোনালী রং
নবান্নের সুবাসে জুড়াই কৃষকের প্রাণ -মনের
আঙ্গিনায়, কৃষাণীর খুশির সীমা নাই।

সোনা সোনা রোদ মাখে, শ্যামা শালিকের ঝাঁক
কাদাজলে চুনোপুঁটির খোঁজে একপায়ে দাঁড়িয়ে
ঋষি বক।
রাতের আকাশে আবছা -মায়াবি জ্যোৎস্নায়,
ভেঁজা -ঘোমটায়, নির্ঘুম জাগে বিরহি চাঁদ –
অজান্তে অগোচরে পেতেছে মায়ার ফাঁদ।

প্রকৃতির বন্ধনে সৌজন্য আমন্ত্রণ-
নবান্নের পিঠাপুলির স্বাদ আস্বাদনে –
সবার নিমন্ত্রণ।

——————————————–

ময়ূরাক্ষী
ছোট গল্প
( একটি মিষ্টি প্রেমের গল্প)
( গল্পটি পড়ার অনুরোধ রইলো, আশা করি ভালো লাগবে)

“এবড়ো খেবড়ো পাথুরে ধাপ বেয়ে পাহাড়ী ছোট টিলার উপরে উঠে এলাম দুজনে, আর তখনই যেন আমাদের অভিবাদন জানিয়ে বিদায় নিচ্ছে টুকটুকে লাল সূর্যটা যেন পলাশের পাপড়ি ছড়িয়ে, পাকা চেরী ফলের মতো টুপ করে খসে পড়ল, পাহাড়ের পশ্চিম আড়ালে।
উপর দিকের পাহাড়ের কোনো গোপন উৎস থেকে বেরিয়ে সুন্দরী ময়ূরাক্ষী নদী খিলখিল করে হাসতে হাসতে খলবলিয়ে বয়ে চলেছে আমাদের পাশ দিয়ে, নীচের দিকে, জলের রঙ এখন লজ্জা রাঙ্গা লাল, সে যেন, ঢলন্ত সূর্যের রঙেই আজ রঙিন, শৃঙ্গারে সাজিয়েছে নিজেকে, আর ত্রিকুট পাহাড়ের পুর্ব চুড়ায় বসে পঞ্চদশী পূর্ণিমা, শশীকলার মতো প্রস্ফুটিত করছে নিজেকে, ভবঘুরে বাতাস খোঁজ নিয়ে যাচ্ছে, গোপন অভিসারিকার মতো সন্ধ্যা নামছে নুপুর পড়ে গুটি গুটি পায়ে, এই টিলার উপর ।

একটা ছাতিম গাছের গোড়ায় ঠেস দিয়ে বসে ময়ূরাক্ষী পায়ে ঘুঙুর বাঁধতে ব্যস্ত এখন, ঝাড়খন্ডের এই প্রত্যন্ত পাহাড়ি অঞ্চলের ছোট্ট ছোট্ট দশ বারোটা আদিবাসী জনপদ আছে, তার সবচেয়ে সুন্দরী, বিদূষী, কৃষ্ণকলি এই ময়ূরাক্ষী, গ্রাম প্রধানের বা মোড়লের কন্যা।
আর আমি সমুদ্র। বখাটে বাউন্ডুলে এক সুরকার, দিন রাত বাঁশি বাজাই নিজ খেয়ালে, আর ময়ূরাক্ষী বলে, আমার সুরে নাকি জাদূ আছে। আমি বলি, ময়ূরাক্ষী তোমার ভালোবাসায় জাদু আছে, তোমার ভালোবাসায় আমার সুর বেঁচে আছে, আমার তো আর কিছুই নেই।
অবশ্য দুর্দান্ত প্রতাপ গ্রাম প্রধান’ও শেষ পর্যন্ত একমাত্র সন্তান ময়ূরাক্ষীর জেদ আর আমাদের ভালোবাসার কাছে নতি স্বীকার করে নিয়েছে বাধ্য হয়ে।

উড়িষ্যা নৃত্য শিল্পীর সাজে ময়ূরাক্ষী’কে সংযুক্তা পাণি গ্রাহীর মতো লাগছে, দুধ সাদা রূপোলী সালোয়ারের উপর সোনালী আঁচল আর জমির কটকি সিল্ক শাড়ি,।
হাতের আঙুলে মোহিনী মুদ্রা, পায়ের নূপুরে যেন গজগামিনীর চাল। চঞ্চল চোখে গোপন অভিসারিকার
কটাক্ষ। একটা চৌকো গোল পাথরের উপর বসে আছে ময়ূরাক্ষী, চাঁদের আলোয় ওর সৌন্দর্যে যেন চার চাঁদ লেগে আছে, মাথার চুলে যেন সাতটি তারার তিমির ।চোখ ফেরাতে পারছি না।
” মীনাক্ষী তুমি, ময়ূরাক্ষী তুমি,মৃগনয়নার মতো তুমি চঞ্চল;
আমার ছিল ভ্রমরের গতি বিভ্রম, সুরের বিস্তার আর চলাচল।”

নৃত্য আর সুরের মূর্ছনায় মগ্ন ছিলাম দুজনে, যখন মুগ্ধতার রেশ কাটলো, দেখলাম মেঘেদের মায়াবী আড়াল থেকে ঘোমটা সরিয়ে চাঁদ হাসছে গালে টোল ফেলে, রূপোলি আলোয় ঝলমল করছে নৈশ প্রকৃতি, কয়েক পশলা বৃষ্টি হয়েছিল অনেক ক্ষণ আগে, বাতাসে এখনো তার সোঁদা গন্ধ লেগে আছে।
দুরের বাতাস বয়ে আনছে নাম না জানা বনফুলের
ভিজে সুগন্ধি। একটা বড় পাথরের উপর বসেছিলাম,
ময়ূরাক্ষী এসে বসলো আমার পিঠে পিঠ ঠেকিয়ে, পায়ের ঘুঙূর খুলছে,
এতক্ষণ ধ্রুপদী নৃত্যের ছন্দে কথা বলছিল তার পায়ের নূপুর , এখন ক্লান্ত ওরা দু’জনে, প্রেমের এই নির্জনে এখন শুধুই নীরবতা, শুনছি নীরবতার ও
নাকি আলাদা ভাষা আছে! সত্যি?
শুধু দুটো হৃদয়ের চুপ কথা, রূপকথা হয়ে উঁকি দিয়ে যাচ্ছে পাহাড়ী এই টিলায়।

ময়ূরাক্ষী আর আমার খুব পছন্দের গন্তব্য এই টিলা।
ত্রিকুট পাহাড়ের উপত্যকায় অনেক টিলার মধ্যে
এটি আমাদের অঘোষিত অমরাবতী, রাজধানী, আর ময়ূরাক্ষী যেন ইন্দ্রানী। টিলার চারপাশে প্রচুর লতা গুল্ম জাতীয় গাছ , বনফুল ছেয়ে থাকে সারা বছর, হাজার রঙীন প্রজাপতি আর মৌ-লোভী মৌমাছির অবাধ আনাগোনা,আর আডডাখানা,
আমি বলি ফুলের উপত্যকা।
টিলায় ওঠার চড়াইয়ের আঁকাবাঁকা সরু শুড়ি পথের
দুধার বেয়ে নেমে আসছে পাহাড়ের জটা থেকে
দুটি ক্ষীন কায়া স্বচ্ছ জলধারা , বয়ে আনছে রংবেরঙের নুড়ি পাথর। আদর করে ময়ূরাক্ষী নাম দিয়েছে অলকানন্দা আর মন্দাকিনী।
কিছু দূর নেমে আসার পর ভয়ে হাত ধরাধরি করে ঝাঁপ দিয়েছে , এক কাকচক্ষু টলমলে হ্রদে,
যার উৎস সন্ধানে মাঝে মাঝে আমরা নৌকা ভাসাই।

অনেক নীচে জোছনায় বড় মায়াবী লাগছে সবুজ ঘেরা আমাদের ছোট জনপদ। সেদিকে মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে, আমার পিঠে হেলান দিয়ে ময়ূরাক্ষী মৃদু স্বরে বলল,
মনে নেই বয়সের কোন সন্ধিক্ষণ থেকে আমার জীবনের সঞ্চার পথে তুমি ধ্রুবতারা হয়ে গিয়েছিলে।
মনে নেই সেই কবেকার, আমার অভ্যন্তরের আদিম গুহায়, সুপ্ত হয়ে ছিল গোপনে, তোমাকে ভালোবাসার অকৃত্রিম,নিরলস প্রচেষ্টা, তা নিরবিচ্ছিন্ন নিরন্তর চলছে আজ’ও,তা ফিকে হয়নি
আরো গাঢ় হয়েছে ক্রমশঃ। আর’ও ঘন হয়ে বলল ময়ূরাক্ষী, আমার আজন্ম সহচরী, বাগদত্তা।
আমি মৃদু হেসে বললাম, তাই!
অস্ফুটে বলল ও, হাঁ গো মশাই।

এই মোম জোছনায় রাত যেন পিছলে পিছলে যাচ্ছে এই ফুলের উপত্যকায়, ময়ূরাক্ষীর শরীরের পাপড়ি খুলে যাচ্ছে ,আর আমি গোপন ওলি’পথে ফুসফুসে ভরে নিচ্ছি তার নৈস্বর্গিক পারিজাত সুগন্ধি।

ময়ূরাক্ষীর অন্তরের আকাশ মহল থেকে
আলো চুঁইয়ে চুঁইয়ে পরছে,আর আমি শরীরের কোষে কোষে আর প্রকোষ্ঠে ভরে নিচ্ছি এখন
তার জোছনা নদীর ছলাৎ ছলাৎ।
তোমার অন্তঃ সলিলা ফল্গুধারায় ভিজিয়ে নিচ্ছি
ময়ূরাক্ষী, আমার ঊষর জমি।
যেখানে সৃজন হয়েছে এই কবিতার।

আমার কাঁধে থুতনি রেখে আমার পিছনে বসেছিল ময়ূরাক্ষী, ওর হাত ধরে সামনে বসিয়ে বললাম,
কি ভাবছো মৌ!এত চুপচাপ হয়ে গেলে যে বড়!?
‘ মৌ বলল, আচ্ছা সমুদ্র, আমরা যদি এই পাহাড়ী পথ বেয়ে অনেক দূরে কোথাও চলে যাই কেমন হবে!? দূর কোনো পাহাড়িয়া গ্রামে, বললাম,
তুমি নদী,কবে আর স্থির থেকেছো; বয়ে দূরে যাওয়াই’তো তার স্বভাব বললাম মৃদু হেসে,
ময়ূরাক্ষীর সৃজনের উৎস ভূমি এই ত্রিকুট পাহাড়।
তবে তার শেষ গন্তব্য কিন্তু সমুদ্র, আমাতে মিলন তোমার ভবিতব্য ,তা যতোই দূরে যাওনা বয়ে!

ময়ূরাক্ষী উদাস গলায় বলল, জানো সমুদ্র মাঝে মাঝে মনে হয়, আমার বুকের ভেতর এক মৃদু ভাষী নদী বয়ে চলেছে, তার উপচে পড়া যৌবন ভার নিয়ে,
আমার অন্তঃ সলিলা ইছামতির স্রোতে , তোমাকে ভাসিয়ে নিয়ে যেতে চাই, তুমি যাবে আমার সঙ্গে!?
বললাম,তা মন্দ নয়, এই স্রোতে ফেঁসে ভেসে যেতে।

ময়ূরাক্ষী বলল, চলে যাব তোমাকে নিয়ে,দূর কোনো পাহাড়িয়া গ্রামের একবারে ভিতরে, যেখানে গাঢ় সবুজ পাহাড়ের উপর ঝুঁকে থাকা আকাশের নীলাভ আকর্ষক রঙে মুগ্ধ হবো নতুন করে, দূর দূর পর্যন্ত ছড়ানো নীরবতায় শিখে নেবো নৈঃশব্দ্যের সহজে পাঠ, পাহাড়ি চড়াইয়ে ফুঁটে থাকা অজস্র বনফুলের সৌন্দর্যে বিস্মিত হবো নতুন করে,
পিচ স্ট্রবেরি চেরি কুড়িয়ে নেবো মুঠো মুঠো,
কোনো পাহাড়ী উৎড়াইয়ের বাঁকে,

পাহাড়ের কুন্ডতে জমানো টলটলে জলের খনি
পড়ন্ত বিকেলে পাহাড়ী শুড়িপথ বেয়ে নেমে আসা কলসি মাথায় আদিবাসী রমনী, আর ভেড়ার কাফিলা তাড়িয়ে ফেরা শেষ মেষ পালক।
আর তখুনি টুকটুকে সূর্য টা টুপ করে খসে পড়বে পাকা চেরি ফলের মতো পাহাড়ের আড়ালে, আর হামাগুড়ি দিয়ে নেমে আসবে, গাঢ় অন্ধকার।

উত্তরের পাইন, ওক, ফারের বন থেকে অতর্কিতে নেমে আসা হিমেল হাওয়া, যখন কাঁপিয়ে দেবে আমাদের সন্ধ্যা গুলো,গনগনে কাঠের আগুনে সেঁকে নেবো বাজরার রুটি আর ছোলে টিকিয়া, ওক কাঠ দিয়ে বানানো আমাদের ছোট্ট কুটির, সেই শীতার্ত রাত গুলোতে ফায়ার প্লেসের আগুনের পাশে মুখোমুখি বসে,রেড ওয়াইনে চুমুক মারবো আর আবৃত্তি করবো
রবার্ট ফ্রস্টের সেই অসাধারণ লাইন,
“আই হ্যাভ মাইলস্ টু গো, বিফোর আই স্লিপ”
তুমি যাবে আমার সঙ্গে?

এতক্ষণ ময়ূরাক্ষীর ইচ্ছে গুলো ইচ্ছে নদী হয়ে শ্রুতি মধুর কলকল শব্দ সিন্ধুর মতো বয়ে যাচ্ছিল,
আর আমার বাঁশিতে বিলম্বিত রাতের সুর ‘মিয়া মলহার’ বাজছিল; “সাঁইয়া বিনা ক্যাইসে বিতায়ূ রাঁতিয়া”
বাঁশি থামিয়ে মৃদু হেসে বললাম, না গিয়ে উপায় আছে সখি, Because, love is like a river
A never ending stream ……..
মৌ তোমাকে রসেটীর কবিতার একটা পংক্তি আবৃত্তি করে শোনাই ” দি ব্লেসেড ডোমোজেল লিন্ড আউট/
ফ্রম দি গোল্ড বার অফ হেভেন/হার আইজ্ ওয়ার ডিপার দ্যান দি ডেপ্থ/অব ওয়াটার্স স্টিলড অ্যাট ইভেন।”

পশ্চিমে প্রস্থান মূখী চাঁদ তখনো অবশিষ্ট জোছনা
বিলিয়ে দিচ্ছিলো এই উপত্যকায়, তরল জোছনা পান করে খুশিতে বৃক্ষরাজি বিদায় সম্ভাষণ জানাচ্ছিল , মিহি বাতাস টিলার তোরন দ্বারে নহবত সাজিয়ে আছে, স্বাগত জানাতে, নিশাচর প্রহরী পাখিরা জানান দিয়ে গেল , সে আসছে, ……!?
আকাশের নীল সরোবর থেকে টলটলে শিশির বিন্দু
ফুলের মখমলি পাপড়ি গুলো ধুয়ে দিচ্ছিলো, আর হেসে দুষ্টুমি করছিল, কুমারী কলি দের সাথে,
চুপিসারে বলছিল ওহে কুসুম কুমারী, এবার ওঠো
সে আসছে!?………
আমরাও উঠলাম, এসে দাঁড়ালাম একদম টিলার পূর্ব দিকের কিনারায়, মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে রইলাম,
এক সোনালী জ্যোতি পুঞ্জ ভরে গেল , ছড়িয়ে পড়লো টিলার সবখানে। তারপর ধীরে ধীরে টিলার গা বেয়ে নিচে নামতে লাগলো, সুপ্রভাত জানাতে।
এবার আমি আর ময়ূরাক্ষীও নিচের দিকে বয়ে চললাম, হাত ধরাধরি করে, আমাদের বাস্তব গন্তব্যের পথে, অলকানন্দা আর মন্দাকিনীর পাশ দিয়ে।
নামতে নামতে ফিসফিস করে ময়ূরাক্ষী কে বললাম,
“তোমার মৃদু ভাষী নদীতে ভাসালাম
আমার ভালোবাসার নৌকা,
জানিনা কোথায় গন্তব্য!
তোমার স্বচ্ছ সৌন্দর্যে নিহিত
হয়তো আমার ভবিতব্য।”

হারাধন দাস
২৭.১০.২২

——————————————-

বিভাগ -কবিতা
শিরোনাম-স্বার্থপর
কলমে-প্রদীপ কুমার পাল
তারিখ -২৭-১০-২০২২ খ্রিস্টাব্দ
“”””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””
স্বার্থের বেড়াজালে মোরা সবাই বন্দি।
স্বার্থ ফুরালে কেটে পড়ি,করি যে সন্ধি।।

সার্বভৌম!কেন ধাও মোর পাছে পাছে।
দিয়েছি উজাড়ি সব,কিছু নেই কাছে।।

আপনার আমানত রেখেছি বেষ্টিয়া।
নিবৃত্তির স্বভাবের সার্বভৌম ক্রিয়া।।

নিশ্চিহ্ন তুষারে ব’সে আপনার মনে।
নিরঞ্জন প্রহরের জপমালা গুণে।।

ভুঞ্জেছি জাগর স্বপ্নে,সংসর্গ তোমার।
একমাত্র তারা-জ্বলা গাঢ় অন্ধকার।।

ভেবেছি বিহবল,বা তুমি ঘুমঘোরে।
রুদ্ধকণ্ঠে করি প্রিয় সম্বোধন মোরে।।

উচ্ছ্বসিত আবেশে কেটেছে অশ্রুনীরে।
রুদ্ধশ্বাস গৃহ হতে ছুটেছি বাহিরে।।

ডুবে গেছে সঙ্গে সঙ্গে মোহের জোয়ারে।
শিক্ষা -দীক্ষা, ভূগোল, বিজ্ঞান একেবারে।।

সর্বস্বান্ত গৌরব! আরও কিছু চাও।
আকাঙ্খায়,ক্লান্ত আমি,অব্যহতি দাও।।

মুছেছে আমার ভবিষ্যৎ দৈব্য ডাকে।
দুর্লভ যৌবণ আজ পঙ্কের বিপাকে।।

অবলুপ্ত বিনষ্ট স্বর্গের ধ্বংস স্তুপে।
অতীতের লগ্নভ্রষ্ট পথ,চুপে চুপে।।

ছেড়ে গেছে অন্তর্যামী অন্তর আমার।
আশা নাই,ভাষা নাই,কেবল ধিক্কার।।

অরাজক, রিক্ত মর্মে মাথা কুটে মরে।
সর্বশেষ,রাখি নাই সঞ্চরণ করে।।

নিশ্চিত ঘুমের আগে যদ্যপি তখন।
দৈবাৎ স্মরণ করি,আজিকার জীবন।।

প্রয়োজন শেষে মানুষেরা স্বার্থপর।
আত্মীয়স্বজন, হিতৈষী ভাই তৎপর।।

“””””””””””””””””””””””” নাটোর””””””””””””””””””””
রচনাকাল -বুধবার
০৫ অক্টোবর ২০২২ খ্রিস্টাব্দ
২০ আশ্বিন ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

——————————————–
তুমি কি বৃষ্টি দেখছ আজ?
সালামুজ্জামান
২৪/১০/২০২২

মধ্যরাত থেকেই গুড়িগুড়ি বৃষ্টি!
এখন সকাল প্রায়ই ৯টা বাজে,
বৃষ্টি কিন্তু চলছে বিরামহীনভাবে।

বেশ শীত শীত লাগছে,
খালি গায়ে থাকতে না পেরে একটু
উষ্ণতার জন্য মোটা গেঞ্জি পড়লাম।

আর বারবার ঘুরেফিরেই তোমাকে
অনুভব করছি!

আমরা দু’জনেই ছিলাম ভীষণ বৃষ্টি
প্রিয়।

স্থান কাল পাত্র ভেদে আজ হয়তোবা
অনেক কিছুই অপ্রিয়…!

প্রকৃতি তাঁর আপন গতিতে
গ্রীষ্ম,বর্ষা,শরৎ,হেমন্ত,শীত,বসন্ত
আজও সেই একই নিয়মে চলমান
রেখেছে।

দুর্ভাগ্য আমি-তুমি প্রকৃতিতেই বসবাস,
এবং প্রকৃতিরই শ্রেষ্ঠ বস্তু হয়েও নিজেদের
প্রকৃতির মতো করে সাজাতে পারলাম না..!

সকাল ৮টা ৫৬মিনিট ঢাকা,বাংলাদেশ।

Powered by themekiller.com