Breaking News
Home / Breaking News / দুই বাংলার বৃহত্তম নেটওয়ার্ক দৈনিক শব্দনগরের আজকের সেরা ছয় সাহিত্য

দুই বাংলার বৃহত্তম নেটওয়ার্ক দৈনিক শব্দনগরের আজকের সেরা ছয় সাহিত্য

ইঁদুর ও হাতির গল্প
সানোয়ার হোসেন

একটা ইঁদুর, একদিন আপেল খেতে খেতে, ভুল বসত আপেল গাছ থেকে নিচে পড়ে যায়। পড়ে গিয়ে ইঁদুররে সমস্ত শরীর হাতির মলে মেখে যায়।
বেশ উঁচু থেকে পড়ে যাওয়ায় ইঁদুর শরীরে ভীষণ ব্যথা উপলব্ধি করছে। এমতাবস্থায় ইঁদুরটি হেঁটে হেঁটে ব্যথায় জীর্ণ শরীর নিয়ে ক্লান্ত হয়ে এক গাছের নিচে বসলো। পাশেই পুকুর, ইঁদুরটি ভাবলো একটু জিরিয়ে নিয়ে গোসল করে শরীর পরিষ্কার করবে। ঠিক এমন সময় গাছের অপর দিক থেকে একটি হাতি তার মলের গন্ধ পেয়ে খুঁজতে লাগলো, সে মলের উপর বসে আছে কি না? খুঁজতে খুঁজতে হাতিটিটি দেখতে পেলো একটি ইঁদুর ময়লা শরীর নিয়ে গাছের গোড়ায় শুয়ে আছে।
হাতি ঘৃণায় ছিঃ ছিঃ হোয়াক্ হোয়াক্ করতে লাগলো। এবং ইঁদুর কে বলতে লাগলো, শালা মেথর! আপেল খেতে খেতে শেষ পর্যন্ত আমার মল খেতে শুরু করলি?
ছিঃ, দূর হো শালা, যাঃ তা এখান থেকে?
হাতির গালমন্দ শুনে ইঁদুরটি খুব ভারাক্রান্ত মন নিয়ে চলে গেলো।
গিয়ে গোসল করে পয়পরিস্কার হলো। এবং কিছুদিনের মধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠলো। সুস্থ হবার পর ইঁদুরটি আবার ‌গাছে গাছে দৌড়াদৌড়ি করতে লাগলো। একদিন সন্ধ্যায় ইঁদুরটি শুনতে পেল, জঙ্গল থেকে ভেসে আসছে সেই হাতির কান্না। হাতির কান্না শুনে ইঁদুরটি নিশ্চিত হলো, হাতিটি কোনো না কোনো বিপদে পরেছে। মনে মনে ভাবলো, শালা মরে যাক্। শরীরে শক্তি আছে বলেই সে বনের রাজা সেজেছে। যাকে খুশি মারবে। বনের সব গাছ , গাছের সব ফল একাই খাবে! আর সবাই না খেয়ে থাকবে? সেদিন তো আমাকে মেথর বলেছে! এবার মর!
ক্ষোভে ইঁদুরটি ঘরে ফিরতে যাচ্ছে। এমন সময় ইঁদুরে কি মনে হলো, ইঁদুরটি ছুটে গেলো হাতির কাছে। যেয়ে দেখলো। অনেক গুলো শিকারী মিলে হাতিটির পায়ে দড়ি বেঁধে জালে আটকিয়ে ফেলেছে,এবং শিকারীরা তীর ছুড়ে হাতি কে কাবু করার চেষ্টা করছে। দেখে ইঁদুরটির ভীষণ মায়া হলো। তাই গাছে উঠে তার হিরের মতো ধারালো দাঁত দিয়ে দড়ি গুলো কেটে দিলো। হাতিটি মাটিতে দাড়াতেই ভয়ে পালানো সব গুলো শিকারী, তারপর ধীরে ধীরে পায়ের বাধ কেটে দিলো ইঁদুরটি। এ যাত্রায় হাতি কে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচালেন ইঁদুর।
জঙ্গলে গিয়ে হাতিটি সেদিনের ব্যবহারের কারণে ইঁদুরে কাছে ক্ষমা চাইলো। ইঁদুরটিও ক্ষমা করে দিলো।
মিলে মিশে আনন্দে আবার বাস করতে লাগলো সবাই।

বিঃদ্রঃ
১. কাউকে আঘাত করার আগে, তার সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিন।
২.কারো সম্পর্কে না জেনেই আবলতাবল বলা ঠিক নয়।
৩.কাউকে অপমান করার আগে একবার ভেবে দেখুন তার সাহায্য আপনাকে কোনো বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারে।
৪. কাউকে দুর্বল ভাবা ঠিক নয়, তার ক্ষুদ্র শক্তি আপনার মহা শক্তিকে হার মানাতে পারে(যেমন হাতি তার শক্তি দিয়ে জাল কেটে বের হতে পারেননি, ছোট্ট ইঁদুরে শক্তি পেরেছে।)
৫. কেউ আঘাত করলে তর্কে না জরিয়ে মুখ বুজে সেখান থেকে সরে আসুন, একদিন সে নিজেই ভুল বুঝতে পেরে আপনার কাছে ক্ষমা চাইবে।

——————————————–
২২/১০/২০২২ ইং
হালের ছড়া
আতাউর রহমান নোমান

ব্যবসায়ীরা চালাক অতি বটে
আমলা নেতা সবাই তাদের জোটে
লাভের আশায় টাকার নেশায় অন্ধ
দুই মুখে রয় নীতি কথার ছন্দ।

পিঁয়াজ রসুন লঙ্কা চিনি ডালে
ডঙ্কা বাজে দামের তালে তালে
চালের বাজার ঘুরতে গিয়ে দেখি
আমি অধম আমড়া কাঠের ঢেঁকি।

তেলের কথা বাদ দিয়েছি আগে
এসব রাখা বড়লোকের ভাগে
খোরমা পোলাও স্বর্গে নাকি থাকে
নিসর্গে সব সাততলাতে রাখে।

মাছের বাজার রাজার বাড়ির গেটে
লাথি মেরে সাধারনের পেটে
বসতে দেখি খেয়াল খুশি মতে
নুন ছিটিয়ে দিন দুখীদের ক্ষতে।

কালের গরু সব জনতা মিলে
মরচে ডুবে শুন্য জলের ঝিলে
অনটনের সাগর দিবে পাড়ি
সেই ভাবনা অনেক দূরের ফাঁড়ি।

——————————————–

২২.১০.২২.
বাংলা গাঁয়ের পাখি
এম.আর.মনজু

বাংলাদেশের মায়ের কোলে
আমি গানের পাখি
রাত পেরোলেই রোজ সকালে
করি ডাকা ডাকি।

লাল রঙা ঐ রোদের আলো
পুর্বাকাশে উঠে
অলস ভেঙে আমরা শিশু
স্কুলে যাই ছুটে।

ছুটি শেষে ক্লান্ত হয়ে
যখন ফিরি ঘরে
গোঁধুলীতে রঙিন ঘুড়ি
উড়াই আকাশ ‘পরে।

বাংলা আমার মায়ের ভূমি
আমি মায়ের ছা’
শত বাধা এলে পরেও
ছাড়বোনা আর গাঁ।

——————————————–

তোমার মতো
-মাহফুজা রহমান
২২-১০-২০২২

তোমার মতো সৃষ্টি সৃজনে
হবোই বড়ো কবি;
তোমার মতোই ভাববো ভীষণ
আঁকবো সব ছবি!

এই পৃথিবীর কানায় কানায়
মানুষ দেখতে যাই;
সবার দুখে হাসে ভীষণ
অনেক এমন পাই!

সবই আনবো কলমে তুলে
তোমার মতো ঠিক;
যখন যাবে জ্ঞানী গুণী চলে
হারিয়ে আপন দিক!

তুমি আমার জীবন পাখি
বেঁচে থাকার জান;
তোমায় না পেলে মন বলে
হারাবে আমার প্রাণ!

টাঙ্গাইল,ঢাকা,বাংলাদেশ
রচনাকাল-২১.১০.২০২২

——————————————–
কবিতা
রূপসী বাংলার কবি
জীবনানন্দ
ডাঃ বিভাস চন্দ্র বিশ্বাস
রচনা- ১৬/০২/২০২০
তাং – ২২/১০/২০২২

(১)

এই রূপসী বাংলার রূপের আধারে
জীবনানন্দ দাস যে রূপ প্রতিচ্ছবি ,
প্রথম ঝরা পালক লিখনী আকারে
এ বাংলার আঙিনায় আধুনিক কবি !

প্রেমের বাঁধনে নীলু এলে বরিশালে
এই সবুজ-বাংলার রূপ ভালোবেসে ,
প্রিয়তমা লাবন্যার প্রেম-তরী-পালে
দেখালে জলধি ওই শঙ্খচিল বেশে !

কখনো নির্জনতায় কখনো সুদূরে
ধূসর পান্ডুলিপিতে প্রাণের বাংলায় ,
তিমির- হরণ-প্রভা সকল অন্তরে
খুশির হিল্লোলে যেন মুগ্ধ মহিমায় !

পিতা সর্বানন্দ মাতা কুসুম কুমারী
মঙ্গলকামনা তরে চির যে তোমারি !

(২)

একাধারে সাহিত্যিক কবি দার্শনিক
ওই ইংরেজি বাংলাতে শ্রদ্ধেয় শিক্ষক ,
শিক্ষাগত যোগ্যতায় এম এ সার্বিক
একাডেমী পুরস্কার সাহিত্যে প্রাপক ।

প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ যে বেলা-অবেলা
কালবেলা ও সাতটি তারার তিমির ,
বনলতা সেন যেন বিস্মৃতির খেলা
মহা পৃথিবী কাব্যেই উত্তাল অধীর !

পত্রিকায় শিহরিত কালি ও কলমে
কিংবা কল্লোলে কবির প্রথম প্রকাশ ,
ক্লিনটন বি সিলি যে আপনার কর্মে
নান্দনিক প্রতিভায় গল্প-উপন্যাস ।

তোমার তুলনা তুমি ভুলিতে না পারি
এ শহীদ ফেব্রুয়ারি জনম তোমারি !

(৩)

প্রেমের মাধুরী দিয়ে ফুটালে লেখনী
নব-আধুনিকতায় পুষ্পিত কাননে ,
অরূপ-ময়ূর-নৃত্যে ভরালে বনানী
পরিশোভিত বসন্তে বাংলার আননে !

শালিক হুতুম পেঁচা মোহিত অন্তরে
হারালে যে কল্পনায় মনের অজান্তে ,
সুদূর সিংহল থেকে মালয় সাগরে
সূক্ষ্ম অবয়বে হাঁটি কাব্য প্রাণবন্তে !

কবির কল্পনা শক্তি এতো যে মধুর
প্রেমেরস কাব্যতেই ভরানো ভুবন ,
বাংলার ভাষাতে কবি ফুটাল যে সুর
জন্ম মৃত্যুর প্রাঙ্গণে সার্থক জীবন !

স্মরণে জানাই শ্রদ্ধা ঝরা আঁখিনীরে
আবার এসো হে ফিরে এ ধরনীতীরে !!

**************বিসিবি*************

——————————————–

#অগাধ_খুশির_খোঁজে
#সুজাতা_দে

আমার একটাও দাদা ছিলনা।
না অলকেশদা,না তিমিরদা..
একটু শক্ত কাঁধ,একটু ভরসার হাত..
তারা দাদা ঠিকই, কিন্তু দাদা নয়।

আমার একটাও দাদা ছিলনা।
পাইনি স্নেহের শাসন;জোটেনি তিরস্কার;
একটু দাবি অথবা একটু আবদার..
দাদা নেই,একাই লড়ো বলতো মা।

আমার একটাও দাদা ছিলনা।
দাদা-বোনে খুনসুটি হুটোপুটি…
রামগাঁট্টা চুলটানা মাথায় চাঁটি;
এসবের অভাবে গম্ভীর বনে গেলাম।

আমার একটাও দাদা ছিলনা।
একটু চোখে চোখ একটুকু উষ্ণ ছোঁয়া
বন্ধুদের বড়ো স্কুলের; কোচিং ক্লাসের দাদা-
একটুখানি ইশারা;একটা উড়োচিঠি।

আমার একটাও দাদা ছিলনা।
স্টাইলে পোষাকে কখনো টমবয় সাজায়নি মা।
মনে শিকল ছেঁড়ার ডাক,জেতার জেদ…
পথে নামি-সাইকেলে ঘুরপাক।

আমার একটাও দাদা ছিলনা।
ড্যাশিং পুশিং; ধরা-করা কর্মযোগে..
নাইবা থাকুক দাদাগিরি,আমি-ই দাদা;
দায়দায়িত্ব-ধর্মকর্ম-দানেধ্যানে।

বোন-ই এখন দাদার দাদা; সর্বসহায়…
ছুটতে থাকি-অভাব ঢাকি, নেই যেখানে;
হয়নি শেখা দাদাগিরি;তাঁবেদারি-
দুঃখ মনে ফুটলে হাসি;অগাধ খুশি।

Powered by themekiller.com