Breaking News
Home / Breaking News / দুই বাংলার বৃহত্তম নেটওয়ার্ক দৈনিক শব্দনগরের আজকের সেরা ছয় সাহিত্য

দুই বাংলার বৃহত্তম নেটওয়ার্ক দৈনিক শব্দনগরের আজকের সেরা ছয় সাহিত্য

কবিতা -ভালোবাসার প্রতিক
লেখক – নাইস হোসেন
তারিখ – ২১.০৯.২০২২

অন্যায় দেখিলে কেমন করে
বলো থাকিতে পারি চুপ
আমি তো তরুণ তাজা এক যুবক
শুকিয়ে যাওয়া নয় তো কূপ।

ভালোবাসি বড্ড মানুষ কে
মানুষের চেয়ে নই কিছু অধিক
রক্তে দেখি কোথাও লেখা নেই নাম
আমি হিন্দু, মুসলিম, না শিখ।

হৃৎপিণ্ড পরীক্ষা করে যদি দেখো
পাবে না সেখানে ধর্মের নাম
ধর্ম হিংসা নয় ভালোবাসতে শেখায়
ধর্মই দিয়েছে মানুষের দাম।

কত কবি লিখে গেলো সাম্যের গান
বেঁধে রেখেছিলো একই ডোরে
সেই ডোর ছিঁড়ে দিতে চায় যেন কারা
ধর্মের সাথে আফিম মেশানো এখন ঘোরে।

——————————————–

উপেক্ষিত
অভিজিৎ ব্যানার্জী
মাত্রাবৃত্ত ছন্দ (৬+৬/৬+৬/৬+২)
২১/০৯/২০২২
========================
কত ব্যথা জমে বুকের সেতারে
কত সুর ভাসে মনের বেতারে
নেই তার মাপকাঠি,
হীরা ছুঁড়ে ফেলি কাঁচ ভেবে তারে
সুখ খুঁজে ফিরি দুখ শুধু বাড়ে
তপ্ত বালুতে হাঁটি।

কত কাশ ফুটে নদীর দু’ধারে
সমীরণ সুখে হেলায় মাথা’রে
ব্যথা বুকে কাঁদে নদী,
কুলু-কুলু ধ্বনি কান্নার শুনি
শারদীয়া আসে গায় আগমনী
ব্যথা-বহে নিরবধি।

কবির কলমে জাগে রূপ-রস
কবির জীবন তবু কর্কশ
অবহেলা তার সাথি,
রামধনু রং দেখে চেয়ে থাকা
খুশির মোড়কে দুখ ঢেকে রাখা
আঁধারে জ্বলে না বাতি!

——————————————–
একটি রাত
( শেষ-পর্ব)

মেয়েকে স্কুলে দিয়ে সিহাবের ঘরে আসে অনু। দরজা জানালা খোলে পর্দা সরায়। আলোতে ভরে ওঠে শুবার ঘর। সাথে বাতাস। পৈতৃক সুত্রে বাড়িটা পাওয়াতে অনু অনেকটা চিন্তামুক্ত। মাস শেষে ভাড়া গুনার ঝামেলা নেই।
এই ওঠো সিহাবের কপালে হাত রাখে অনু।

নিতু কি স্কুলে?

হ্যাঁ এইতো দিয়ে এলাম।

মেয়েকি আমাকে ভুলতে বসলো নাকি। কাছেই আসেনা।

কিসব বলোনা। তুমিতো বেশির ভাগ ঘুমিয়েই থাকো। আসলেও হয়তো বুঝতে পারোনা।

অনুর কাঁধেই হাত দিয়ে অনেক কষ্টে হুইল চেয়ারে বসে সিহাব। ওয়াশ রুমের দরজাটা ঠেলে বন্ধ করে অনু। দাঁত মেজে মুখ ধুইয়ে দেয়। অগের চাইতেও অনেক রোগা। এলোমেলো চুল, সরু দুটো পা, বুকের পাঁজর বের হয়ে আসা যেন একটি জীবন্ত কংকাল। মনের ভিতর কষ্টের ঝড় বয় অনুর। সিহাবের দিন কি শেষ হয়ে এলো।

আজ কি গোসল করবে? গতোকাল ও কিন্তু গা মুছা হয়নি।

শীত করে যে, সিহাবের আপত্তি।

গরম পানি দিয়ে করাবো। বারান্দায় রোদে বসলে শীত ভাবটা আর থাকবেনা। দুর্বল শরীর তাই তোমার ওরকম মনে হয়।

বেশ তবে তাই দাও।

গায়ে সাবান মেখে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে দেয় অনু। ধোয়া পায়জামা আর পাঞ্জাবী গায়ে পড়িয়ে চেয়ারটা ঠেলে গ্রীল বারান্দায় নিয়ে আসে।
চুলটাও বড় হয়ে এলো। কাটাতে হবে। পরিপাটি করে চুল আছড়ায় অনু। টেলকম পাউডার ছড়ায় সারা পিঠে।

আমাকে নিয়ে তোমার খুব ভাবনা তাইনা অনু? কখন আছি কখন নেই। নিতু তুমি কাকে অবলম্ব করে বেঁচে থাকবে।

বেশ কথা কইছো তো। অসুখ বুঝি কারও হয়না।
সিহাবের কানের কাছে মুখ নামায় অনু।
ডিম কি পোচ করে দিবো। নাকি ওমলেট করে পাউরুটিতে মাখন দিবো।
হয়তো বা একটু অতি আশা সিহাব যদি আলতো ঠোঁট ছুঁয়ায়।

সংসারে তোমার কোন অভিযোগ ছিলোনা। অথবা কোন আবদার। মনে পরে অনু এই ছয় বছরের সংসারে আমরা কোথাও দুরে বেড়াতে যাইনি। আবার কাছে বসে ভালবাসাবাসির কোন গল্পও করিনি। আমার এই অসুখ তোমাকে আমার অনেক কাছে নিয়ে এসেছে। আমার আবার নতুন করে বাঁচতে ইচ্ছে করে।

সিহাবের মুখে হাত চাপা দেয় অনু। এবার চুপ করোত। ঔষধ খাবার সময় বুঝি পার হলো।

দুরে কোথাও পেটানো ঘণ্টির আওয়াজ আসে ঢং ঢং। রাত দুটোর সংকেত কানে আসে। চোখ থেকে কি ঘুম ছুটি নিলো। বিছানা ছেড়ে ওঠে দাঁড়ায় অনু। সবুজ আলোয় ভরে আছে ঘর। চেয়ারটা টেনে আনে জানালার কাছে। ঘরে বাইরে আলো আঁধারে মাখামাখি। আকাশে লক্ষ তারার প্রদীপ। বাতি নিভিয়ে আরাম করে বসে অনু। জমাট বাঁধা ভাবনাগুলো বুক চিড়ে আসে চোখে নদী হয়ে। সংগীহীন জীবন শুধু বোঝা নয় যেন তার চেয়েও আরো বেশিকিছু। দিন যায় দিনের নিয়মে। ছোট্ট নিতু বড় হয় আদরে সোহাগে শাসনে। অনুর ভিষণ একাকিত্ত্বের সংগী হয় অয়ন। সিহাবের শূন্যস্থান অয়ন পরন করতে চাইলেও অনু তা হতে দেয়নি। সীমারেখাটা থাকে বন্ধুত্ব পর্যন্তই। আর কিছু নয়। কলেজে পড়া নিতু অয়নের এই আসা যাওয়া মা-য়ের সাথে গল্প করা অকারণে হাসাহাসিকেও মেনে নেয়নি। অয়নকে কিছু না বললেও। প্রতিবাদ জানিয়েছে কথা না বলে। নিতু একবার ও ভাবেনি মা-য়ের কথা। জীবনের প্রতিটি ঘণ্টা যেন অসহনীয় এক একটি দিন। জীবন থেকে বিদায় নেয় বর্ষার ঘন রাত শরৎএর ভোর হেমন্তের সকাল। বসন্তের আগমন সেতো শরীরে শিহরণ তুলবেই। মনের শাসনে তাকে হার মানতেই হয়। সিহাব নিতুর পাশাপাশি মনের কোন এক কুঠোরিতে অয়নকে যেন কিছুতেই অস্বীকার করতে পারেনা অনু। অনুও কি তবে চাইতে শুরু করলো অয়নকে। কেন অয়নের রাগ করা অভিমান করা এতোসব বুকে বাজে। কেন ভাবেনা স্ত্রী না থাকলে ও ছেলে দীপু আছে। মনের বহতা নদী একটু ক্ষনের বুঝি থেমেছিলো। সেই থেমে থাকাটাই হলো কাল। বেশকিছু দিন অয়নের অনুপস্থিতি অনুকে ভাবায়। ভালো আছেতো অয়ন। বাইরে বৃষ্টি ঝড়া বিকেল, আকাশে মেঘের গর্জন সবকিছুকে উপেক্ষা করে অনু আসে অয়নের ঘরে একেবারে সন্ধ্যার সময়টায়। অবাক চোখে চায় অয়ন।

তুমি?

কেন আসতে মানা আছে নাকি।

ভিজে গেছো যে।

শাড়ির আঁচলে মুখ মুছে অনু।
কেমন আছো?

সেটা জানতেই এতদূর এলে?

কিছু কিনাকাটা ছিলো। ভাবলাম যাওয়ার পথে তোমাকে দেখে যাই।

যেভাবেই আসো এসেছো তো। সেটাই কি বড় পাওয়া নয়।

ফটিককে দেখছিনা রান্না ঘরে নাকি ছুটিতে।

ফটিকের বাবা হাসপাতালে। তাই দেখেছো না।

ব্যস্ত হয় অয়ন। তুমি চা খাবে অনু?

সে পরে হবে। অনেক দিন তোমার দেখা নেই। যাওয়াটা কি বন্ধ করলে অয়ন?

না অনু। বলতে পারো নিজেকে আড়াল করছি।

আগামী সপ্তাহে নিতুর ফ্লাইট। ওর সাথে দেখা করবে না।

দিনগুলো সব কেমন করে পার হলো বলতো। সেই ছোট্ট নিতু কখন হেসেখেলে বড় হলো। স্কুল, কলেজ, বিয়ে নিতুর নতুন সংসার। এখন আর আমাকে প্রয়োজনই নেই নিতুর।
হ্যাঁ অনু নিতু চলে যাওয়ার পর তুমি একা থাকবে। সেই সময়টার কথা কি ও একবার ও ভেবেছে?

এবার আমি ওঠবো অয়ন। নিতু যাওয়ার দিন তুমি আসবে। আমি অপেক্ষায় থাকবো।

তোমার এখনো চা খাওয়া হয়নি। বসবে না আর একটু।

চা-টা আমিই করে আনছি। অনু ওঠে কিচেনে যায়। গ্যাস জ্বেলে চাএর কেতলি বসায়। দুধ চিনি রাখে কাপে। অয়ন এসে দাঁড়ায় কাছঘেষে। আলতো হাতে কাঁধ ছুঁয়।

আমাদের দিন কি শেষ হয়ে গেলো অনু। শরীরের নয় মনের একজন সংগী প্রয়োজন একথা কি অস্বীকার করতে পারো। এইবার তোমার ভার বইবার অধিকারটুকু দাও।

ঘুরে দাঁড়ায় অনু। বহুদিন পর আজ আবার ভালবাসার নদী বয়ে যায় শরীরে। এই একটু স্পর্শ যেন বদলে দেয় নিজেকে। কতোদিন কতরাত শুধু এই একটু চাওয়া থেকে বঞ্চিত। অনু পারবে অয়নের কথা রাখতে। দুহাতে অয়নকে জড়িয়ে মাথা রাখে বুকে। আষাঢ়ের বৃষ্টি নামে চোখে মুখে বুকে।

নিতুর বিয়ের পর থেকে বদলটা টের পায় অনু। চুপচাপ বসে থাকা। অকারণে রেগে যাওয়া। নির্ঘুম রাত পার করা। অয়নের আসা যাওয়া থাকলে ও কথা হতো খুব কম। ক্রমশ দুর্বল অনুকে অয়নই নিয়ে আসে এই মানসিক হাসপাতালে ডাক্তারের পরার্মশে।
মাথার যন্ত্রনা কি আবার বেড়ে গেলো। হাত দিয়ে কপাল চেপে ধরে অনু। বাইরে আঁধার পেড়িয়ে আবছা আলোর আভাস। আবার নতুন করে আর একটি দিনের শুরু। সিহাব কি অনুর পথ চেয়ে আছে। মনের মাঝে কথার ঝড়।
এ অন্যায় অয়ন বড় বেশি অন্যায়। তোমাকে নিয়ে স্বপ্নের যে ঘর আমি রচনা করেছি। তার বেশি আর কামনা করোনা। অয়ন তুমি এসোনা। না- না- না এ হতে পারেনা। আমাকে আমার মতো থাকতে দাও। ভোর রাতের তীব্র চিৎকারে ছয় নাম্বার কেবিনে ছোটে আসে শিষ্টার মৃদুলা।

——————————————-

তারা
রূপক বরন বড়ুয়া

একলা হলে একলা ছাদে দাঁড়িয়ে মা’কে খুঁজেছি
মা এখন তারাদের বন্ধু আমরা তো অচিন
নোনাজল উড়ে যায় বাতাসের কাছাকাছি
রিক্ততা জমা হয় হিমবাহ বুকে।
তবু তারাদের সাথে মানুষের সম্পর্ক বড়ই প্রাচীন।

তারাদের চোখ নেই!জল গড়াবে সাগরে
আলো আছে, আছে প্রতিভা পরাগ
দূরের আলোকবর্ষ মেখে নেমে আসে আঁধারে
চোখের প্রজ্ঞায় রাখে আলোকের রাগ
আত্মবিশ্বাস রাখে বিরাগে সপ্তর্ষির ধ্যান।

তারা’রা মানুষের বন্ধু তারা মানুক না মানুক
অন্তরাল হলে মানুষেরা আত্মীয়তা খোঁজে
তারাদের পরিবারে,তারা’রা জানুক না জানুক।

Copyright 18/9/2022 @RBB 952

——————————————–

শিরোনাম : তোমার নাম
কলম : সুরজিৎ পাল
তারিখ : ২১.৯.২০২

মদিরা’য় দেখ আজ উঠেছে তুফান,
নেশাগ্রস্ত চোখ…..
দেখে, গেলাসে আগুন,
শিখার ঝলকে তোমার ঠোটের লালিমা’র শান।
অশ্রুনদীর সুদুর ধারায়- সুনামি জাগায় গ্লাসে প্রাণ,
এ এক বিদ্ধস্ত গ্লানিমা’র নাম।
লাভা উদগীরণ এর রঙিন জৌলুসে – প্রস্ফুটিত তোমার রূপ,
একি পরী ! নাকি দেবীর বিমুর্ত স্বরূপ।
মদিরা জাগ্রত,জীবন পেতে চায়, স্পর্শ… তোমার নৈসর্গিক গরিমায়।
স্বপ্নীল দেহ ভাঁজে দৃষ্টি কেন্দ্রীভূত,
উপলব্ধিতে চিত্ত- চঞ্চল- চকিত- চপলতায় অভিভূত।
তোমার ছায়ায় দেখি হাজার কিরণ,
আমার হৃদয়ের হয় না যন্ত্রণা নিবারণ।
তুমি কি সবার স্বপ্নের পরী হতে পার?
সবার আলিঙ্গনে আবদ্ধ হতে পার?
যে চাহুনি আমায় নেশা ধরায়
জানি সেই রক্ষা করবে আমায়।
সবার চিন্তায় তোমার সান্নিধ্যের বেশি দাম,
আমার নেশায় জেগে থাক তোমার নাম।

——————————————–

শরতের দিন এলে
নির্মল দাশ ঝুঁটন
তারিখ– ২১/০৯/২০২২ইং

ঢ্যাং কুড়া কুড় ঢ্যাং কুড়া কুড়,
ঢাকের তালে তালে তালে
কচিকাঁচা নাচে দোলে,
নবীন প্রবীণ সবাই মিলে,
আনন্দে রঙ মেখে খেলে,
শরতের দিন এলে।।

জল পদ্মও পাপড়ি মেলে,
শরৎ এলে ঝিলের জলে,
শিউলি ফুটে রাত্রী হলে,
ঝিঝি পোকা দলে দলে,
কাশ বনে হাওয়ায় দোলে,
শরতের দিন এলে।।

ঢ্যাং কুড়া কুড় ঢ্যাং কুড়া কুড়,
বাজে, মায়ের আগমনী সুরে।

জুই মালতী হাসনাহেনা,
হরেক ফুলের আনাগুনা,
শরৎ এলে তুলে ফনা,
সবুজ ঘাসে শিশির কণা,
স্নিগ্ধ শান্তিতে আনমনা,
শরতের দিন এলে।।

Powered by themekiller.com