Breaking News
Home / Breaking News / দুই বাংলার বৃহত্তম নেটওয়ার্ক দৈনিক শব্দনগরের আজকের সেরা ছয় সাহিত্য

দুই বাংলার বৃহত্তম নেটওয়ার্ক দৈনিক শব্দনগরের আজকের সেরা ছয় সাহিত্য

বিভাগ :- কবিতা
শিরোনাম :- অপেক্ষা
কলমে:- স্মরজিৎ দত্ত
তারিখ :-১৭/০৫/২০২২

অপেক্ষা
স্মরজিৎ দত্ত

আমি সুমি
বার্ধক‍্য বয়সে এসে
অপেক্ষা করছি।
রোগের ভারে ক্লান্ত আজ;
ছেলে বৌমা নিয়ে ছোট্ট সংসার।
ঘরের দেওয়ালে ঝোলানো
ঝোলানো অনিসের ছবি।
তাকিয়ে কখনো হাসী,
কখনো করি চরম অভিমান।
তবে প্রতি ক্ষণেই বলি,
তোমার অপেক্ষা করানো কি
আজও একই ভাবে বজায় রাখবে।

স্কুল লাইভে পরিচয়,
সদ‍্য কিশোরীতে পা দেওয়া
নতুন উদ্দমী তখন আমি।
স্পোর্টসের মাঠেই প্রথম পরিচয়;
আরাইশো মিটার লং রেসে
দৌড়চ্ছি তখন আমি।
বেশ অনেকটা এগিয়ে গিয়েছি,
তুমি হঠাৎ ঠিক পেছনে চলে
চলে এসে আমায় বললে;
স্লো স্লো দম রাখতে পারবে না
এখনোও দু পাক বাকি।
আমি বলেছিলাম তুমি,
তুমি জিতে যাবে তো!
উত্তরে বলেছিলে তুমি
দেখইনা, অপেক্ষা করো
ফল নিজেই দেখতে পাবে।
শেষ রাউন্ডে প্রায় দু-মিটার
দুরত্ব রেখে ভিক্ট্রি স্পটে
আমাকে পৌছতে সাহায্য করেছিলে।
সেই মূহুর্তে আনন্দ হলেও
পরে কষ্ট হয়েছিল ভিক্ট্রি স্তম্ভে
যখন দাড়িয়ে পুরস্কার নিচ্ছিলাম;
বার বার মাঠের ধারে
তোমার দাড়িয়ে অপেক্ষাকে
করছিলাম প্রত্যক্ষ বার বার;
ওটাই শুরু তোমার অপেক্ষা।

তারপর কখনও বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষা,
কখনও কলেজের ক্যানটিনে,
কখনও নিজের বাড়িতে তোমাকে
তোমাকে নিমন্ত্রন করেও,
নিস্তার মেলেনি আমার অপেক্ষা।
তুমি জেলা বা রাজ‍্যের
কোন প্রতিযোগিতায় পুরস্কার জিতেই
ফোন দিতে আমায়;
তখনও বলতে সুমি,
অপেক্ষা করো সামনেই
মেয়েদের একটা প্রতিযোগিতা আসছে;
আমি ফিরেই তোমায় নিয়ে
প্র‍্যাকটিস নামবো।
শুধু সময়ের অপেক্ষা,
তুমিও জিতে আসবে, আসবেই।

খেলা জানার দৌলতে তোমার চাকরিও জুটল একটা;
এদিকে তখন আমিও তিরিশ।
বাবা অবসর নেবেন,
তাই মা বাবার ইচ্ছে আমাকে বিয়ে দেবে।
তোমাকে বললাম সে কথা,
সেদিনও তুমি আমায় বললে
বেশ অপেক্ষা করো দুটো মাস;
সামনের মাসেই আমার একটা প্রমোশন আছে,
তারপরেই তোমাদের বাড়িতে যাব
ফাইনাল করব আমাদের বিয়ে।

যদিও সন্তান আসতে দেরি করতে হয়নি বা অপেক্ষা;
এক বছরের মাথাতেই আমাদের সন্তান এসেছিল।
এরপর আরো অনেকবার অপেক্ষা
তোমার মুখে শুনেছি;
তবে আমার ক্ষেত্রে নয়,
আমাদের সন্তানের ক্ষেত্রে।

আমার মতন তোমার ছেলেও বুঝতে
পেরে গিয়েছিল বাবার অপেক্ষার কৌশল।
তাই তেমন সমস্যা কখনও হয়নি
তবে হঠাৎ করে তোমার চলে যাওয়া,
সামান্য কদিনের জ্বরে;
আমাকে অপেক্ষা করিয়ে তোমার
না ফেরার দেশে চিরতরে।
তোমার প্রাণবায়ু বেরিয়ে যাবার আগে,
হাত তুলে কিছু বলবার ভঙ্গিমা করেছিলে
তাও ছিল অপেক্ষার দিশা;
সেই অপেক্ষাই আজও আমি করছি।
জানি,তুমি বলতে
আমি চলে গেলে তোমায় বেশিদিন একা থাকতে দেবো না।
ওই আশাতেই আজও তাকিয়ে থাকি তোমার ছবিতে;
এ অপেক্ষা বড় কঠিন,
এবার কি নিয়ে যাওয়া যায় না তোমার কাছে!
নাকি আরও অপেক্ষা।

——————————————–
শিরোনাম:বিশ্বকবি স্মরণে
কলমে:হাফসাতুননাহার সুরভি
তাং ১৭/০৫/২০২২ইং

২৫শে বৈশাখ উদয় হলো নবগত এক রবি,
কালের ব্যবধানে,সাহিত্যের ভুবন সেই বিশ্বকবি।
রবির আলো ছড়িয়ে পড়ে দিকে দিকে,
ব্যথাভার,নিশি তমসা হয়ে গেল ফিকে।
নীল মন,নীলাকাশ সেথায় শঙ্খ চিলের মেলা,
অজানায় ভেসে যাওয়া নিথর লক্ষীন্দর
ভাসায় ফেরার ভেলা।
শেষের কবিতায় ফেলে আসা দিন পিছু ডাকে,
পড়ন্ত বিকেলে হংস মিথুন যেমন দিঘি জলে
খেলা করে ঝাঁকে ঝাঁকে।
তুমি কভু বিনোদিনী বা আশালতার
নয়তো কমলা হেমিলীনির,
কত বঞ্চিতা পথ চেয়ে ছিল
ছিল তোমার করুণা অধির।

হে চির সুখী তুমি তো ছিলে মহান,
তুমি শুননি আর্তনাদ ভরা আহবান।
অফুরন্ত প্রেম করিলে দান,বুঝিলে মর্মব্যথা,
মর্মবাণী শুনেছো,শুননি আর্তের জীবন গাঁথা।
তাই তো দান রাখিবার পাত্র ভেঙ্গে হল চুরমার,
আঁজলায় আছে যেটুকু,
সেটুকুই পাড়ি দিব বিশ্ব পারাপার।

——————————————–

ইলশেগুঁড়ি
শুভ্রা দে

ভালোবাসার শুন্য আকাশে
নরম হাতের আলতো আবেশ–
নতুন রকম পুরানো অভ্যাস,
শহর জুড়ে ইলশেগুঁড়ি
ভাঙা কাঁচে জলছবি–
অন্তরেতে অভিমানের নতুন চিঠি
ঝুপ ঝুপ ঝুপ সিক্ত মাটি,
নরম গালে ঝরে পড়ে
শ্রাবন যখন জড়িয়ে ধরে,
টুপ টাপ টুপ পদ্ম পাতা
মন দুয়ারে গহন ফোঁটা-
রাতের লজ্জা হারিয়ে গেল
এবার বুঝি বন্যা এলো
শহর আজ অগোছালো
রূপকথারা সব জলীয় বাষ্প
ঝরাপাতার অঝরা স্বপ্ন।

——————————————–
বিষয়..কবিতা
নীলখাম(১১)
কবি..দীপ ছড়াকার(প্রদীপ)
তারিখ..জ্যৈষ্ঠ ২/১৪২৯
************************
মানব মনের ইচ্ছা দিবস
ভাড়ায় ত্রিভুবন,
আতেলমুখী মেকি আলোয়ে
নিকষ আবাহন!
সূত্র ভাবে,ইচ্ছে দিবস
কোন কুলীনের কার্য,
বাকি দিনের দিবস তবে
কোন মানেতে ধার্য?
লক্ষ দিবস কাঁদে যখন
নিরাশ মনের বাঁকে,
ইচ্ছে দিবস পালনকারী
তখন কোথায় থাকে?
শিশু-বুড়ি কাঁদে যখন
যোণি ফাঁটার জ্বালায়,
দিবস বক্তা কোথায় তখন
কোন সে দিবস শালায়?
দুধে শিশুর কচি হাতে
কালশিটে সেই দাগ, কোন দিবসে দেয় মুছিয়ে
ভালোবাসার রাগ?
পড়ার বেলায় কচি হাতে
ও সব কিসের বোঝা,
কোন দিবসে শিশুর মাথায়
ইটের জোগাড় সোজা?
হোকনা তবে দিবস পালন
পথের কোনে কোনে,
দাঁত কেলিয়ে ভরুক ভান্ডার
চোলাই রসের ধনে।
কর্ম কারণ লয় বাঁধা আজ
চটির রতন রসে,
তাই কলরব দিবস দিবস
মাতঙ্গিনীর বশে।
পিতৃ-দিবস,মাতৃ-দিবস
একটি দিনের জন্যে,
বাকি সময় কোন অমরায়
খুঁজছি তাঁদের হন্যে?
খুঁজছি না তো অতীত আদর
ভক্তি রসের স্বাদে,
বরং মাকে টানছে দড়ি
দিবস তুলে কাঁধে।
দিনে দিনে বাড়ছে যতই
দিবস পালন বহর,
মুখোশ প্রতাপ ততই যেন
স্থবির নদীর লহর?
তার মানে কি দিবদ গুলি
ঝরায় পাপের স্খলন,
গান্ধীবাদীর চরকা কাটা
একটি দিনের চলন?
আশ্রমের ওই গরাদ ধরা
কত অসহায় মুখ,
আর মঞ্চে পুত্র নেতা সুজন
গাইছে দিবস সুখ।
নয় কেনো তা পিতা-মাতা
জ্যান্ত শিলাজিৎ,
মহীরুহ শিখর চূড়ায়
স্বেদস্রুতির ভিত?
হয়না কেনো পিতা-মাতা
ভক্তি যোগের থান,
পলকা মোমের মুখোশ বাতি
পাচ্ছে ঠুনকো মান?
সূত্রদীপে সকল দিবস
মানটা পাবে সেদিন,
আমৃত্যু ঘরে ঘরে
দিবস পালন যেদিন।
মায়ের কোলে পড়বে শিশু
পিতার কোলে গান,
সেদিন ঘরে সকল দিবস
সাজবে পাবে মান।
ঠিক সেদিনই কর্ম কলম
লিখবে দিবস বাক্য,
জগৎ সভার নীল খামেতে
থাকবে ভক্তি সাক্ষ্য।

——————————————–

“তুই ”
বর্ণালী চক্রবর্তী।
“””””””::::::::::::

অকারণেই ভালোবাসি তোকে ।
আমার মনখারাপে,একাকীত্বের হঠাৎ লেখা কাব্যকথা জুড়ে‐
তোরই হাতে হাত রেখেছি অনুভবে।
কোনোদিনও চোখ রাখিনি স্বপ্ন মদির চোখে,
শুনিনি তোর একটি কথাও কানে,
তবু দিবস রাতে তোর কবিতা ছুঁয়ে যেত মন
অনুভূতির আবেগ নিয়ে একান্ত আপন।

এখন ভালোবাসার কারণ হাজার খানেক।
তোর দুঃখবিলাস মন, রাগ অনুরাগ
দু-চার কথা অথবা এক দীর্ঘ নিরুদ্দেশ;
সবের মাঝেই ‘ তুই ‘ জড়ানো আবেশ।
তোর ছুঁড়ে দেওয়া তীর,তোর দূরে ঠেলে ফেলা
তোর সকল রকম আঘাত,আমার রক্ত ঝরা,
সব স্রোতস্বিনী হয়ে মেশে তোরই মোহনায়,
আমার কথাই বলে, তোর মন-কলমের পাতায়।

সেই কাব্য কথামালা আমি কণ্ঠে পড়ি রোজ,
আমার প্রত্যেক নিশ্বাসে নাম লেখা হয় তোর,
আমার আনন্দ অঙ্গনে তুই সাজানো রঙ্গন,
আমার গন্ধরাজের ডালে যেন ভ্রমর আলিঙ্গন।
আমার সীমন্তে যে সিঁদুর সে তোরই দুঃখ লালি
আমায় ছুঁয়ে থাকিস তুই যেমন চাঁদের গায়ে কালি।
তোর শিশির উপস্থিতি আমার হৃদয় পদ্মপাতায়
রোদের ঝিলিক মেখে প্রেম রামধনু রঙ ছড়ায়।
একলা থাকার মাঝে ভিড়ের মাঝেও তুই
তোর জন্যেই বাঁচা তুই তুই আর তুই।
আমার সকল স্বপ্ন ঘোর যেন ফুলেল গুলিস্তান,
তোকেই ভালোবাসি কারণ অকারণ।

——————————————–

কবিতাঃ অনুশোচনা
কবিঃ বর্ণ

তারিখঃ ১৭/০৫/২০২২ইং
সময়ঃ ১৩:৪০ ঘটিকা

জগতের মাঝে যা ছিল বারণ,
যা ছিল অকৃত্য-
অকাতরে হায় করে গেছি করে,
উদ্দাম নৃত্য।

অহমিকা ভরে দিন পাত করে,
দশকে বছরে মাসে-
হৃদয়ে জমেছে পরতে পরতে,
পঁচা কীটে ফাংগাসে।

যা ছিল ক্ষতির সমূহ কারণ,
জেনেশুনে আমি ফের-
এমন ক্ষতির কাজ করে গেছি,
ভালো কাজ হতে ঢের।

বাধা মানি নাই,ডাক শুনিনিকো,
ফিরিনি পেছনে কভূ-
যার দ্বারা হুশিয়ার করে গেছে,
নিমেষে নিমেষে প্রভু।

শুভাশিস নিয়ে এসেছিল যারা,
সোহাগে হৃদয় খুলে-
হায়রে না বুঝে হারে রে রে করে,
তাড়িয়ে দিয়েছি ভুলে।

যতদিনে আজি বুঝেছি সকলই,
ধরা খেল যত ভ্রম-
ভেসে এল চোখে বিফল আমার,
সারাজীবনের শ্রম।

ততদিনে হায় নাই নাই আর,
তিলেক সময়ও বাকি-
আপনাতে ভুলে নির্বোধ আমি,
নিজেরে দিয়েছি ফাঁকি।

শেষে পায় মিছে বাগানে ফুটেছে,
গোলাপের কণ্টক-
এতদিনে বোধ জেগেছে আমার,
খুলেছে মনের চোখ।

দিনে দিনে যত করে গেছি পাপ,
গেছি যত লোভ করে-
এ জগতে ভোগ করে যেতে হবে,
অক্ষরে অক্ষরে।

——-*****——-

——————————————–

Powered by themekiller.com