সেদিন হরতাল ছিলো
-মো.হুমায়ুন কবির
কুহেলি, আমাদের কথা ছিলো
শনি, সনি, দশ-
অর্থাৎ, শনিবার সনি সিনেমা হলের সামনে
সকাল দশটায় আমাদের দেখা হবে,
কিন্তু আগের রাতে হঠাৎ ঘোষণা হলো-
শনিবার হরতাল।
তখন মোবাইল আসেনি এ দেশে
আমি রাত দশটায়
রাস্তার ধারের কয়েনবক্সে চার সিকি ফেলে
তোমাদের বাসার ল্যান্ডফোনে তোমাকে জানালাম,
তুমি বললে- ইতোমধ্যে তুমিও জেনে গেছো
কতোইনা আফসোস হচ্ছিলো দুজনেরই।
সেদিন আমাদের জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের
পত্রপল্লবের মর্মর ধ্বনি শোনার কথা ছিলো,
কথা ছিলো দুজন কোমল মৃত্তিকার সংগীত শুনবো
শুনবো বাতাসে ভেসে আসা সাগরের আস্ফালন
আকাশ নীল হওয়ার গল্প।
কুহেলি, আমাদের অরণ্যে যাওয়া হলোনা আর।
পরে তুমি বলেছিলে: আমরা একদিন ঠিকই
ঘাসের শিশির বিন্দু দেখবো
সেই গোল ঝর্ণায় ফুটে থাকা
লাল শাপলার না বলা কথা শুনবো
জোড়া শালিক দেখে খুশি হয়ে বলে উঠবো:
এই দ্যাখো দ্যাখো, কী মায়াবি শালিকের জুটি
আমরাও….তাইনা অর্ক?
আমি বললাম: ততোদিন বৃক্ষগুলো বাঁচবেতো?
তুমি মিহি ঠোঁটে বলেছিলে:
আমার বুকের উষ্ণতা দিয়ে বাঁচিয়ে রাখবো।
আমি তোমার নীল দৃষ্টির গহীন ভেতর
তাকিয়ে দেখলাম-
স্বপ্নের এক গভীর সমুদ্র সেখানে খেলা করছে,
আর কী এক আকুলতায় বারবার
বালুকাময় তটে এসে আছরে পড়ছে
অজস্র চঞ্চল জলরাশি।
কুহেলি, অরণ্যে আর যাওয়া হয়নি আমাদের।