“কনডেম সেল”
নাসরীন আক্তার বীনা
বিয়েটা পারিবারিক ভাবেই হয়েছিলো,
এরপর মেনে নাও মানিয়ে নাও এ কেটেছে পাঁচ বছর।
মানিয়ে নেয়ার সীমা অতিক্রম করে চলার পথ হয়েছে আলাদা,
তিন বছরের কন্যা নিয়ে তেইশ বছরের ঠিকানায় ফেরা।
আমি কর্মজীবী নারী, অভাবও নেই, বেশি কিছুর প্রত্যাশাও নেই,
শুভু সমাজের ভ্রুকুটি উপেক্ষা করে, মুখোশ পরা হায়নাদের থেকে রক্ষা পাওয়া।
ভালোই কেটে গেল কয়েকটি দিন,
আস্তে আস্তে চারপাশের দৃশ্যপট পাল্টাতে শুরু করে।
সম্পর্কগুলো যেন নতুন রুপের আবির্ভাব,
সময়ের সাথে সাথে হারিয়ে যেতে থাকলো স্বাধীনতা।
পারিবারিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেই, নেই কোন মত প্রকাশের স্বাধীনতা,
বছর পাঁচেক আগেও পারিবারিক অনুষ্ঠানের সকল দ্বায়িত্বে ছিল যে,
আজ শুধু কাজের লোকের ভুমিকা।
নতুন আত্মীয়দের সাথে পরিচিত হওয়া বা কথা বলা বারণ,
এ যে নিজ বাড়িতে পরবাসী,
কোন শুভ অনুষ্ঠানে উপস্থিতি কাম্য নয় কারো,
কর্ম সুত্রে কোথাও যাওয়া,কারো সাথে কথা বলা
সবকিছুতেই জবাবদিহিতা ছোট বড় সকলের কাছে।
চলন, বলন ওঠা- বসা সবকিছু নিয়ন্ত্রণাধীন,
পোশাক বা সাজসজ্জার ও বহু বিধি নিষেধ।
আপনজনের কাছেও যেন এক ভারি বোঝা,
এ যে জীবন্মৃত।
মেয়েটি বড় হচ্ছে ধীরে ধীরে,
সে বুঝতে পারে এখানে আমরা অনাহুত।
সে যেতে চায় অন্য কোথাও,এখান থেকে অনেক দুরে,
চারপাশের মুখোশধারী হায়নাদের ধারনা তার নেই।
এ সমাজ একজন সিঙ্গেল মাদারকে নিরাপত্তা দিতে পারেনা।
তাই সংসার ভাঙ্গা মেয়েদের অতি প্রিয় বাবার বাড়িও হয়ে যায় কনডেম সেল।