Breaking News
Home / Breaking News / দুই বাংলার বৃহত্তম নেটওয়ার্ক শব্দনগরের দৈনিক সেরা চার সাহিত্য

দুই বাংলার বৃহত্তম নেটওয়ার্ক শব্দনগরের দৈনিক সেরা চার সাহিত্য

“রুমুর স্মৃতিকথা”

লেখিকা : সোহিনী ঘোষ

০৬/০২/২০২২

সেই ছোট রুমু আজ জীবনের অনেকটা কাটিয়ে এসে প্রান্তদেশে এসে দাঁড়িয়েছে। জীবনের হিসেবে নিকেশ করতে বসে যখন একা নিঃসঙ্গ থাকে। সারাদিন সংসার করবে এটাই ছোট থেকে সে ভেবে এসেছে। মা বাবা দু-জনে শিক্ষকতা করতেন। বাবা-মা কে তেমন ভাবে পায় নি রুমু। কারণ সারাদিন ব্যস্ততার পর আবার টিউশন পড়ানো। এসব নিয়েই সময় কেটে গেছে মা-বাবার।

তাই যখন থেকে রুমু বুঝতে শিখেছে তখন থেকেই সে ভেবে নিয়েছে সে কেবলই সংসার করবে। আর সংসারের প্রত্যেকের জন্য সে সময় দেবে। নিজের পুরোটা বিলিয়ে দেবে সংসারের প্রত্যেকের জন্য।

একা বসে থাকার সময় বড় একটা পায় নি এতদিন কারণ মেয়েকে বড় করেছে। অনেকটা পড়াশুনো শিখেছে সে কিন্তু কাজে লাগায় নি। হয়ত রুমু চাইলে কিছু একটা করতে পারত। কিন্তু তার ছোটবেলাটা বড় নিঃসঙ্গতায় কেটেছে। ছোটবেলায় সবাই তাকে খুব ভালবাসত। মনে কোন জটিলতা ছিল না রুমুর আজও নেই।

সেই ছোট্টবেলার বান্ধবী আজ ফোন করে হঠাৎ। খুব ভালো লাগে রুমুর। মা-বাবা কে হারিয়ে ফেলেছে অনেকদিন। তাই ঐসব বন্ধু-বান্ধবীরা ফোন করলে যখন বাবা-মায়ের কথা ওঠে বা না উঠলেও মনে হয় সেই ছোটবেলাটা আবার ফিরে এসেছে। কত স্মৃতি, কত অনুভূতি ছোটবেলার কত ছোট ছোট ভালোলাগা সব মনে পড়ে যায়। বান্ধবী মনে করায় রুমুর মনে পড়ে যায় অনেক কিছু যা সে ভুলেই গিয়েছিল এতদিন।

ছোটবেলার বন্ধু বান্ধবীরা সব আজও আছে কথা হয় দেখা হয়। তখনি সেই ছোটবেলাটা উঁকি দেয়। আজ সবার সন্তানেরাই বিবাহযোগ্য প্রায়। নিজেদের অতীত দিনগুলোর স্মৃতির ঝাঁপি ঘাটতে ঘাটতে কখনো খুব আনন্দে হেসে ওঠে আবার কখনো বা মনটা খারাপ হয়ে যায় রুমুর।

দিনগুলো আর কোনোদিন ফিরে আসবে না তাদের জীবনে। সবাই একদিন দেখা করবে ঠিক করে। দেখাও করে একদিন কত যে ভাললাগা জমা হয় তাদের মনে সেটাই অনেকদিন বেঁচে থাকার রসদ।

সেই দিনের রুমু, রীতা,গোপা আজ প্রত্যেকেই সংসারী। কেউই তারা চাকরি করে না। হারিয়ে গিয়েছিল মন থেকে গোপা। গোপার পাড়ার একজন আবার রুমুর কলেজের বান্ধবী। তার থেকেই ফোন নম্বর পেয়ে ফোন করে রুমুকে, রুমু চমকে যায়। কতদিন পর যেন মনটা আনন্দে ভরে ওঠে।

বড় হবার পর অনেক বন্ধু হয় ঠিকই কিন্তু সেই ছোটবেলা ক্লাস ১ মানে ৫ বছর বয়স সেই সময়। ছোট ছোট শিশুদের বুদ্ধি কিছুই নেই শুধুই আনন্দ। শিশুর মনে থাকে না কোনো চিন্তা, কোনো কুটিলতা। সে তখন থাকে ভগবানের দূত।

ওই সময় ধীরে ধীরে বড় হওয়া সেই বন্ধুত্ব যেন মনে হয় বাবা মায়ের অন্য রূপ। জানি সবাই হয়ত একমত হবেন না। তাও রুমুর মনে হয় যেন বাবা মায়ের অনুভূতি। যদিও সম্ভব নয় তবুও যদি হয় সেই ছোটবেলাটা ফিরে পেতে চায় রুমু।

—————————————–
ওরাও কবি নাম দখল করে
মোঃ হারুন অর রশিদ প্রধান।

কেনো?
ওরা কবি নাম দখল করে!!
যাদের হৃদয়ও দেহ সহায়তা করে না,
নিজে মহৎ নয়, তারা পাঠক মহলকে কি শেখাবে?

কেনো?
ওরা কবি নাম দখল করে!!
দেখি নিজেদের মাঝে নিজেরা আক্রমণ করে?
চরিত্রে কাদা ছিটে, তা সাধারণ – গুণি দেখে?

কেনো?
ওরা কবি নাম দখল করে?
সহযোগিতা করতে নারাজ, উল্টে ঠেলে?
নিজেকে প্রকাশ করতে কার্পণ্য করে।

কেনো?
লেখার বেলায় অক্ষর কে ব্যবহার করে কাঁদে
জামার ভিতরে স্বয়ং অসাধু সে নিজেকে মোটা করে?
ছিঃ বাহিরে মানবতার জাহির করে।

কেনো?
সম্মান শুধু নিতে চায় কেনো, দিতে শেখা লাগবে তো?
তা না হলে চলবে কি করে, রাত দিন পার্থক্য কিসে?
ওরাও কবি নাম দাবি করে, কেনো?


——————————————

সুর সম্রাজ্ঞী লতাজীর স্মরণে
কলমে-, মনোজ ভট্টাচার্য্য
তারিখ-০৬/০২/২০২২
>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>
দু-হাজার বাইশ সালের ৬ই ফেব্রুয়ারি,
রত্নগর্ভা লতামঙ্গেসকর গেলেন মোদের ছাড়ি।।

সরস্বতী মাতার বর পুত্রী রইল না আর ভবে,
সরস্বতী মাতা গেলেন নিয়ে,
তাঁকে স্বর্গপুরে।।

সারা দেশজুড়ে শোকের ছায়া,
মায়ার বাঁধনে বেঁধে দিয়ে,
চির নিদ্রার দেশে চলে গেলে,
আমাদের কে কাঁদিয়ে!!

সুখ-দুঃখের সাথী ছিলে তুমি,
হতাশা ক্লান্তির মাঝেও জানি,
তোমার কন্ঠের গানের ডালি,
ভুলিয়ে দিতো সব অভিমান ই।।

গানে ভুবন ভরিয়ে দিলে
ওগো সুর-সম্রাজ্ঞি,
সুরের জাদু ছড়িয়ে দিয়ে,
কোথায় গেলে চলি।।

শ্রীরামকৃষ্ণ বিবেকানন্দের পরম ভক্ত তুমি,
ওনাদের কৃপাতে তোমার কন্ঠ হতে,
সুধাবারি পড়িয়াছে ঝরি।।

দেশভক্তি তোমার ছিল ষোল আনা,
তোমার গানে তুমি বুঝিয়ে ছিলে তাহা,
যখন তুমি অসুস্থ ছিলে,
তোমার আরোগ্য কামনা করে,
প্রার্থনা করেছিল অনেক মানুষে, ভালোবেসে।।

দাদাসাহেব ফালকে, ভারতরত্ন, দিয়েছিল তোমারে,
পদ্মবিভূষণ,পদ্মভূষণ,
মহারাষ্ট্র ভূষণে ভূষিত হলে, এন টি আর জাতীয় পুরস্কারেও
ভূষিত করলো দেশ তোমারে।

প্লেব্যাক সিঙ্গার তুমি, ফিল্মফেয়ারে আজীবন সম্মাননাও পেয়েছো জানি,
৩৬টি আঞ্চলিক ও বিদেশী ভাষাতে,
গান রেকর্ডিং তোমারি কন্ঠে।
অভিভূত করেছ তুমি যে মোদের,
তোমার তুলনা তুমিই নিজে।।

নিয়ে গেলো তোমার নিথর দেহ,
মুম্বাইয়ের পথ দিয়ে,
অগণিত লোকের মাঝ খান দিয়ে,
জাতীয় পতাকাতে মুড়ে,
রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দিয়ে।।

মুম্বাইয়ের ওই শিবাজী পার্কে,
শেষকৃত্য তোমার হল যে সমাপন,
অগণিত মানুষ কাঁদছে দেখো,
সবাই তোমার আপন।।

বিরানব্বই বছর বয়সে,
আমাদের ছেড়ে চলে গেলে তুমি নিরবে।
নিয়তির হাতে বাঁধা যে আমরা সবাই,
তাইতো মোদের কিছুই করার নাই!!

তবে তুমি অমর রবে অনাদি অনন্তকাল ধরে,
তোমার কন্ঠের গানে গানে,
রইবে বেঁচে হৃদ মাঝারে,
আগামী প্রজন্ম তোমার কন্ঠের গান শুনে,
শিক্ষা নেবে , রইবে তুমি তাদের মধ্যেও বেঁচে,
চিরকাল ধরে,

ধীর-স্থির-নম্র-ভদ্র হে মহামানবী,
কোকিল কন্ঠি তুমি,
গভীর শ্রদ্ধা রইলো জেনো,
যেখানেই থাকো তুমি,
ভক্তিপূর্ণ প্রণাম নিও হে সুরো- সরস্বতী,
সুখে ও শান্তিতে থেকো তুমি,
এই কামনা করি।।

——————————————-

তুমি শুধু অপেক্ষা করো!
—আমিনুল হক নজরুল।

তুমি ভাবতেই পারো না-
কিসের সংকেত জানান দিয়ে যায় এই কবিতা,
তুমি অপেক্ষা করো!
শামুকের মত গুঁটিয়ে নিয়ে নিচ্ছি নিজেকে,
জলোচ্ছাসের মত ভেসে আসবে বার্তা তোমার পাঠে,
তোমার কর্ণ কুঠরিতে।
তুমি অপেক্ষা করো চাঁদ!

তুমি বরং সাদা মনের মানুষ খোঁজে যাও!
যে দেবে তোমাকে বসন্ত,
যে দেবে তোমার গানে সুর কোকিলের মত।
তবে জেনে নিও;
তার সেই পিয়ানোর উপর রেখে যাব আমার কবিতার মানবীয় স্বরলিপি।

যদি কেউ তোমার শয্যা কক্ষের দ্বারে পা টিপে টিপে গিয়ে তোমার আদুরে শরীরে
জড়িয়ে দেয় তার নকশি কম্বল,
তুমি জানিও;
সেই কম্বলে থাকবে পুড়ে যাওয়া আমার কলিজার ঘ্রান,
আর এই পাগলের আহত প্রেম পুড়ে উড়বে দীর্ঘশ্বাসের ধোঁয়ায়।
তুমি শুধু অপেক্ষা করো!

একাকী রাত হতে খুব সকাল অবধি,
যতক্ষণ না তুমি জেগে উঠেছো-
তোমার ক্লান্ত শরীরকে আমি পাহাড়া দেই যাতে কারো নজর না পড়ে,
তারপর,যখন তুমি ব্যাস্ত হয়ে যাও দিনের আলোয়-
আমি ছুটে চলি আমার আর্তনাদকে কবিতায় বদলে দিয়ে,
উন্মাদনার প্রান্তে হীরেকাটা ছুরি দিয়ে কবিতাকে ছিন্ন ভিন্ন করি,
আহা!এক চাঁদের শোকে,
আহা!এক ঢুক সুখের জন্য,
এক দীর্ঘশ্বাস ভরা হৃদয় জ্বালিয়ে দিয়ে।

তুমি শুধু অপেক্ষা করো!
তবে -তোমাকে আমার দরকার নেই!
তোমাকে আমার প্রয়োজন নেই!
যে কোন ক্ষেত্রেই এখন তোমার স্থান দিতে চাই না।

আমার পথের শেষ খুব সন্নিকটে,
তোমাকে এই জাহান্নামে বসাবার কোনো আসন তৈরী করিনি,
আমি জানি-
হঠাৎ ফেটে পড়ব আমি কর্কশ চীৎকারে!
তুমি শুধু অপেক্ষা করো চাঁদ!

——————————————-

Powered by themekiller.com