Breaking News
Home / Uncategorized / কবি শ্যামল ব্যানার্জীর কবিতা “হঠাৎ মনে করে”

কবি শ্যামল ব্যানার্জীর কবিতা “হঠাৎ মনে করে”

শ্যামল ব্যানার্জী
কবিতা — হঠাৎ মনে করে।
১২/ ১০/২০২১

দুরাভাষের ওপারে কেউ অপেক্ষা করছে।
এমন অসময় কেই বা ফোন করতে পারে।
জানার ইচ্ছেটা ক্রমশ কৌতুহলী মনে দোলা দিয়ে গেলো।
— কে বলছেন?
— আমায় মনে পড়ছে কবি?
সেই স্বর। ইথারের বুক চিড়ে ভলকানো লাভা স্রোত গড়িয়ে গেলো
বুকের ভেতর দিয়ে অতল খাদের কিনারায়।
জমাট অন্ধকারে আলো যেন ছড়িয়ে দিলো
সেই স্বর,
অনেক অনেক দিনের চেনা
রক্ত ধমনী দিয়ে বয়ে যাওয়া এক কোজাগরী চাঁদ।।
— কেমন আছো কবি?
নিরুত্তর আমি। নির্বাক শব্দহীন দ্যেতনায়।
— কি এত ভাবছো..কবি?
অবাক হচ্ছো বুঝি, এতদিন পর
কেন এলাম আবার.. এমনি গো এমনি।
আসলে, কেন জানিনা, আজ খুব মিস করছিলাম গো তোমায়।
ভীষণ পড়ছে মনে।
তাই তো এলেম বলতে কথা হৃদয় উজাড় করে।
এবার তুমি তো কিছু বলো।
—– আমি কি বলতে পারি বলোতো। তুমি তো আমায় চেনো
এক ছন্নছাড়া, বেখায়ালী চিরকালের বাউন্ডুলে আমি।
আমার আবার হয় নাকি কোনো খবর ।
আমি একি আছি। শুধু বদলেছে সময় আর সময়ের সাথে তুমি।
সে হেসে উঠলো। মনে হলো, স্পষ্ট অনুভব করতে পারছি, সে হাসির অনুরনন ছড়িয়ে গেলো আমার ঘরের ভেতর।
ঐ যে টেবিল, খাট, দেওয়ালটাও যেন হাসছে আর আমায় ছুয়ে যাচ্ছে অনন্য অনুভুতির দোলায়।
হাসি থামিয়ে এবার সে বললে,
তাই বুঝি? কি করে বুঝলে?
বললাম , —–
তোমার ডাকে আজ আর সেই গভীরতা নেই।
তুমি তো ডাকলে না আমায় সেই আগের মতো করে।
—- কেন কবি?
—- কত সহজেই ভুলে গেছো।
আমি বলবো না। তুমি মনে করো।
ওপারে এবার নিস্তব্ধতা। মুহূর্তে সময় থমকে দাঁড়িয়ে গেলো। তারপর —-
ভেসে এলো উদাসী এক কান্না ভেজা গলা—–
বুঝেছি। আমার পাগল কবি– বলিনি বলে হয়েছে অভিমান।
বেশতো, নাহয় এবার বলি।
যাক সে কথা, এখনো কি ড্রিংক করো? কবিতা কি লিখছো আগের মতন।?
কাকে শোনাও তোমার কবিতা গুচ্ছ?
কেউ কি এসেছে তোমার জীবনে এখন?
আমি উদাসীন ভাবে বললাম,
— এ কথার হয়না জবাব কোনো
তুমি ভালো করে জানো, আমার সে ইচ্ছে ছিলো না কোনো দিন।
তাইতো, তুমি আর আমি শর্ত মত আজ
বেপরোয়া স্বাধীন।
তুমি তোমার মতো আমার পথ করে দিয়ে গেছো
অন্তহীন।
অবশেষে দেখা হবে জানি। আবার কোনোদিন,
বৈশাখী ঝড় হয়ে আসবে তুমি হঠাৎই করে
একদিন।
আমাকে পাবে আগেরই মতন কবিতার ঘরে
না হয় সেদিনও বসবো দুজন মুখোমুখি
যদি অবসর থাকে।

প্রিয়াঙ্কা তুমি কি দেখছো?
দেখেছো কি নেবুলার ছায়াপথে ,
আমার এক বে-নামি রাত বিজ্ঞাপন দিয়েছিলো,–
ভালোবাসা চাই, ধ্রুপদী ভালোবাসা।
অসংখ্য, অজস্র ভালোবাসা গোলাপ ছড়িয়ে দিলো আকাশগঙ্গা পথে,
প্রত্যুত্তরে, আতরে আতরে বাতাস আবিষ্ট তখন,
মন দেখলো, শরীর বিছানো জোৎস্না নিহারে
এক নারী,
ভালোবাসা হতে চেয়েছিলো
ভীরু দীপের মতন, উন্মাদ হাওয়ায়।
যদিও বিজ্ঞাপন ছিলো,তবু্ও ভালোবাসা এসেছিলো, নির্বাক শব্দহীন পায়ে,
অবগুণ্ঠিত আঁচলে বেঁধে শিশিরের সিক্ত অনুরাগে,
বাধন না মানা নীরব উচ্ছ্বাসে, মৌন মুখর রাতে।
আমার সে রাত বিজ্ঞাপনে ভরা ছিলো,
ধ্রুপদী ঢঙে।
প্রিয়াঙ্কা, তুমি এলে… ভালোবাসা এলো সে রাতে
বিজ্ঞাপনে সারা দিয়ে।
আমার বেনামি এক রাত ভরিয়ে দিলে,
সহস্র আরব্য উপন্যাসের উপাখ্যানে।

Powered by themekiller.com