Breaking News
Home / Breaking News / কবি সন্দীপ বাউল এর ছোট গল্প ” পুণ্য “

কবি সন্দীপ বাউল এর ছোট গল্প ” পুণ্য “

শিরোনাম – পুণ্য (ছোট গল্প)

কলমে – সন্দীপ বাউল ।(২/১/২২)

সময়টা গ্রীষ্মকাল। মাটি ফাঁটা হাঁ করা মুখ। জনপ্রাণী কদাচিৎ দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। রাস্তায় দু – একটা দোকান খোলা ছাড়া সবই বন্ধ। ওদের বয়স কতই বা হবে? বারো কি তেরো। পড়াশোনা বলতে, পয়সার হিসাব করে নেওয়া মাত্র। ওদের বয়সী ছেলে মেয়েরা যখন ওদের সামনেই স্কুলে যায়, ওদের নিরীহ চোখ দুটো, যতদূর সম্ভব ওদের দেখতে থাকে। মেনে নিয়েই খুশি হয়, যা হয়তো তাদের ভাগ্যে লেখা নেই। সেই এক থলি, আর নোংরা, আবর্জনার মধ্যে জীবন খোঁজা। মানে প্লাস্টিক, শিশি, বোতলেই ধ্যান রাখা ।
ঠিক মতো পয়সা ঘরে না দিলে, এক বেলা অভুক্ত থাকতে হয়।
আজ সকাল গড়িয়ে দুপুর হতে চললো। তেষ্টায় বুকের ছাতি জ্বলছে। যদি একটু জল পাওয়া যেতো, পেট ভরে জল খেয়ে নিতো।
দোকানের সামনে দাঁড়ালে, দোকানের ইজ্জত খারাপ হয়ে যাবে বলে, দূর দূর করে এক প্রকার তাড়িয়ে দেয়।
কিন্তু পিপাসার কাছে ওদের শরীর আজ হার মানতে চলেছে। পা কিছুতেই চলছে না। যদি একটু জল..
শুকনো গলায় চাতক পাখির ডাক।
একটু জল..
হঠাৎ..
একজন বলে উঠলো, আরে তোরা চিনতে পারছিস?
এই সেই বাড়ি না..
সকলের চোখ তখন সেই আলিশান বাড়ির দিকে..
.. “মনে পড়ছে তোদের, সে কি খাওয়া। কি যত্ন। ঘরের মালিকের, নিজের হাতেই পরিবেশন। মনে পড়ছে” ?
সবার চোখে যেন, আগাম বৃষ্টির বিদ্যুৎ চমকে উঠলো।
.. বল সে কত খাওয়া..
একজন বলে উঠলো, কেন কত ফটো উঠেছিল, সেটা তো বল?
হ্যাঁ, তবে নিজেদের t v তে কেমন কালো, কালো লাগাতে, আমাদের নতুন জামা, প্যান্ট দিয়েছিল তা ভুলে গেলি?
তারপরে আমাদের সবার কাকুর সাথে, কতই না ফটো..
.. হ্যাঁ, আমাদের মতোই কত বন্ধুদের সাথে পরিচয় হয়েছিল, তাই না বল?
আর হ্যাঁ, আমাদের সাথে কথা বলে, অনেকে কাগজে কি যেন লিখেছিল তাই না?

এইভাবে এক আশার আশায় কখন যে বাড়িটার সামনে চলে এসেছিল, তা নিজেরাই জানতো না।
সামনে দাঁড়াতেই কুকুরের সে বিশাল আওয়াজ।
ভয়ে এক পা পিছিয়ে এলো। কিন্তু সবার দৃঢ় বিশ্বাস, কাকু খুব ভালো মানুষ। মনের সাহস জুগিয়ে এক পা এগোতেই..
বাড়ির দারোয়ান লাঠি হাতে,..
…. কি, কি চাই? ভাগ এখান থেকে.. চুরি করার মতলব?
সে লাঠি নিয়ে মারতে আসা।
.. না, না আমরা চোর নই ।বিশ্বাস করো।
একটু জল চাই ।কেউ এক ফোঁটা জল দিচ্ছে না। তেষ্টায় মাথা ঘুরছে।
যদি একটু জল..
দারোয়ানকে কে যেন, বাড়ির ভেতর থেকে ডাক দিল।
সকলের মুখে ক্ষুধার্ত এক হাসি।
কিছুক্ষণ পর, দারোয়ান এসে বললো, “বাবু এখন আরাম করছেন। এখন বিরক্ত করতে বারণ করেছেন। পরে আসতে বলেছেন। এখন যাও…
যাও, যাও, যাও।
শব্দ সংখ্যা ৩৬৮

Powered by themekiller.com