অবান্তর
অনমিত্র সান্যাল
১৯/১২/২০২১
গল্প বলছিলো অতীন…
এক রাজার তিন রাণী..
( উত্তর বাগানের উপর আকাশে তখন চম্পাই রঙ…)
দুজন বিধবা,একজনের স্বামী নেই…
রাজার তিন ছেলে…
(পুবধারে পুকুরের পাশে বাঁশঝাড়,কচি কচি পাতার ফাঁকে উঠলো মস্ত চাঁদ,)
দু-টো বোকা একটার বুদ্ধি নেই…ওরা গেল মাছ ধরতে…
রাজার তিনটে পুকুর,যেমন রাজার আস্তাবল, পিঁজরাপোল…
উট-পাট,ঘোড়া,পাইক, বরকন্দাজ তেমনি আর কি…
দু-টো শুকনো, একটায় জল নেই,
পুকুরজলে পড়লো কি তার ছাওয়া দুপুরবেলা,শালুক-পদ্ম ছড়াছড়ি…
পা ছড়িয়ে সকাল বিকেল দিব্যি বাউল গাওয়া।
জেলেদের তিনটে জাল…দুটো ছেঁড়া,একটার সুতো নেই…
পদ্মপাতার কিনারায় তখন,পদ্মের গা-ঘেঁসে,নীল হাঁসটি ঘুমিয়ে যাবার আগে,
পিঠের পালকে ঠোঁট গুঁজে,গা ভাসিয়ে,চুপটি করে আছে,ঘুমোতেও ভারি লজ্জা তার…
চাঁদের আলো মাখা বাঁশপাতার নীচে ওরা তিনটে মাছ ধরলো,
…..দুটো মরা,একটার প্রান নেই
চাঁদের আলো পাতার ছায়া মাড়িয়ে এলো–
কুমোর বাড়ি,তিনটে ঘর,
দুটো ভাঙা,আর
একটা নির্ঝর ।
শ্বেতপাথরের পুতুলবাগান ঘুরে,মিলিয়ে গেলো এক নিমেষে,খুঁজলো স্মৃতি,
রাজমহিষীর তুচ্ছ আবেগ তুসু-জুজু
পর্দা টানা ঘড়ির সুরে মস্ত হিজিবিজি।
অতীন তোমার গল্প বলো…
কুমোরঘরে তিনটে হাঁড়ি,অ-দরকারী,দুটো ভাঙা,একটা তলাহারি…
বনলতার ফুলসয্যার রাতে,
বনলতার কনকনানি প্রাতে….
রাজার ছিলো তিনটে উনুন…নির্বাপিত তিন….
“নিভন্ত ঐ চুল্লিতে মা একটু আগুন দে…”
ভাঙা সরায় একটু পানি….
মরা মাছের তিনকাহিনী…
তা-হোক তবু রাজকাহিনী..
একটু আবেগ দে….
“ নিভন্ত ঐ চুল্লি-তে মা একটু আগুন দে…”