Breaking News
Home / Breaking News / বৃহস্পতিবার জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা শুরু, তিন বছরে ঝরে পড়ল সাড়ে ৬ লাখ শিক্ষার্থী

বৃহস্পতিবার জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা শুরু, তিন বছরে ঝরে পড়ল সাড়ে ৬ লাখ শিক্ষার্থী

এম আর হারুন :
নিম্ন মাধ্যমিক পর্যায়ে মাত্র ৩ বছরেই ঝরে পড়ল সাড়ে ৬ লাখের বেশি শিক্ষার্থী। এসব শিক্ষার্থী ২০১৫ সালে প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা পাস করেছে।

কিন্তু পরে আর শিক্ষার স্রোতধারায় টিকতে পারেনি। সমাপনী পরীক্ষায় পাস করা শিক্ষার্থী এবং এবারের জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষার্থীদের তথ্য পর্যালোচনা করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

একদিন বাদে বৃহস্পতিবার এই দুটি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী (ইইসি) পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা এ পরীক্ষায় অংশ নেবে। তিন বছর আগে অনুষ্ঠিত পিইসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ৩০ লাখ ৪৮ হাজার ৫৪৪ জন শিক্ষার্থী। আর এ বছর জেএসসি ও জেডিসিতে মোট পরীক্ষার্থী ২৩ লাখ ৮৯ হাজার ৩৬২ জন। এ তথ্য থেকেই দেখা যাচ্ছে, তিন বছরে ঝরে পড়েছে ৬ লাখ ৫৯ হাজার ১৮২ শিক্ষার্থী। শতকরা হিসেবে ঝরে পড়ার হার ২১ দশমিক ৬২ শতাংশ।

শিক্ষায় ঝরে পড়া কমাতে সরকার বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ, উপবৃত্তি প্রদান, ক্লাসরুম আকর্ষণীয় করা, দুপুরে স্কুলে খাবার দেয়াসহ নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এরপরও বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর এভাবে ঝরে পড়ার পেছনে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও একাডেমিক সমস্যা আছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ২০১০ সালে যখন এই পরীক্ষা শুরু হয় তখন পরীক্ষার্থী ছিল ১৪ লাখ ৯০ হাজার। এবার পরীক্ষা দিচ্ছে ২৬ লাখ ৭০ হাজার। শিক্ষার উন্নয়নে সরকারের গৃহীত নীতি, পদ্ধতি ও পদক্ষেপই এই উন্নতি ঘটিয়েছে। এরপরও কিছু শিক্ষার্থী ঝরে পড়ছে। দারিদ্র্যকে আমরা অস্বীকার করতে পারব না। এছাড়া সামাজিক আরও কিছু কারণ থাকতে পারে।

সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এবার জেএসসিতে মোট পরীক্ষার্থীর ২২ লাখ ৬৭ হাজার ৩৪৩ জন। জেডিসিতে মোট ৪ লাখ ২ হাজার ৯৯০ জন। সারাদেশে মোট ২ হাজার ৯০৩টি কেন্দ্রে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

এবার দেশের বাইরে ৯টি কেন্দ্রে ৫৭৮ জন শিক্ষার্থী জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষায় অংশ নিবে। গত বছরের তুলনায় এবার জেএসসিতে ১ লাখ ৭৭ হাজার ৬৬ জন এবং জেডিসি পরীক্ষায় ২৪ হাজার ৪৪৭ জন পরীক্ষার্থী বেড়েছে। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১৮ সালের জেএসসি পরীক্ষায় অনিয়মিত ২ লাখ ৪৬ হাজার ২৯৭ জন এবং জেডিসি পরীক্ষায় ৩৪ হাজার ২৫১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। এদের মধ্যে কেউ এক, দুই বা তিন বিষয়ে কেউ সব বিষয়ে ফেল করা।

গত বছর সব বিষয়ে ফেল করা শিক্ষার্থী ১৯ হাজার ২৭১ জন। সংবাদ সম্মেলনে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসেন, কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর, অতিরিক্ত সচিব জাকির হোসেন ভূঞা, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. অরুণা বিশ্বাস, ড. মোল্লা জালাল, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুল হুদা, ঢাকা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুহাম্মদ জিয়াউল হক, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক একেএম ছায়েফউল্ল্যা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আগামী পহেলা নভেম্বর বাংলা ও বাংলা ১ম পত্র পরীক্ষার মাধ্যমে জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা শুরু হয়ে ১৫ নভেম্বর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শেষ হবে এ পরীক্ষা। এবার ৭ বিষয়ে পরীক্ষা হবে। শারীরিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য, কর্ম ও জীবনমুখী শিক্ষা এবং চারু ও কারুকলা, কৃষি শিক্ষা, গার্হস্থ্য বিজ্ঞান, আরবি, সংস্কৃত, পালি বিষয়ে ধারাবাহিক মূল্যায়নের অধীনে আনা হয়েছে।

কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশ : পরীক্ষা সামনে রেখে সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ পরীক্ষা চলাকালীন সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, কেউ যদি পরীক্ষা চলাকালীন কোচিং সেন্টার খোলা রাখে, তবে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের আসনে বসার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পরীক্ষা কেন্দ্রে আগেই একাধিক প্রশ্ন সেট পাঠানো হবে। তবে পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে কেন্দ্রীয়ভাবে লটারির মাধ্যমে প্রশ্ন নির্বাচন করে প্রশ্নপত্রের খাম খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

Powered by themekiller.com