অনলাইন ডেস্ক :
হাইকোর্টের রায়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধির ‘প্রতিবাদে’ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ডাকা আদালত বর্জন কর্মসূচির মধ্যেই বুধবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভগের কার্যক্রম নির্ধারিত সময়ে শুরু হয়েছে।
বুধবার সকাল ৯টায় প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ নিয়মিত বিচারিক কার্যক্রম শুরু করেন। এসময় আপিল বিভাগে অ্যাটর্নি জেনারেলসহ আজকের কার্যতালিকায় থাকা মামলা সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
তবে বুধবার সকাল ৯টার পর আইনজীবী সমিতির সভাপতির কক্ষ সংলগ্ন সুপ্রিম কোর্টের মূল ভবনে যাওয়ার দোতলার গেইটে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। এসময় অনেক আইনজীবীকে নিচতলার সিঁড়ি দিয়ে আপিল বিভাগে প্রবেশ করতে দেখা যায়।
এর আগে মঙ্গলবার হাইকোর্টে খালেদার রায় ঘোষণার পর এক সংবাদ সম্মেলনে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন বুধবার সকাল ৯টা থেকে ১টা পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট বর্জনের ঘোষণা দেন।
এসময় তিনি বলেন, বেআইনিভাবে খালেদা জিয়ার রায় দেয়ার প্রতিবাদে এবং আদালত ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সমুন্নত রাখার দাবিতে বুধবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের (হাইকোর্ট বিভাগ ও আপিল বিভাগ) উভয় বিভাগের কার্যক্রম আইনজীবীরা বর্জন করবেন।
জয়নুল আবেদীন আরো বলেন, ‘আমাদের কর্মসূচিতে বাধা আসলে আরো কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।’
এই কর্মসূচি ঘোষণার আগে ও পরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে বিক্ষোভ মিছিল করেন বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীরা।
এর আগে মঙ্গলবার সকালে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সাজা ৫ বছর বাড়িয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন।
এছাড়াও এই মামলায় হাইকোর্টে আপিল করা অন্য দুই আসামিকে বিচারিক আদালতের দেয়া সাজাই বহাল রাখেন।
বিচারিত আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের করা আপিল খারিজ করার পাশাপাশি দুর্নীতি দমন কমিশনের-দুদক করা রিভিশন বিবেচনায় নেন হাইকোর্ট।
ওই রায় ঘোষণার সময় আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। তবে দুদকের পক্ষে আইনজীবী খুরশিদ আলম খান এবং রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম উপস্থিত ছিলেন।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে এই মামলায় পাঁচ বছরের সাজা দেন। সেই সঙ্গে তার ছেলে তারেক রহমানসহ অন্য পাঁচ আসামিদের প্রত্যেককে ১০ বছরের জেল ও জরিমানা করা হয়। এ রায়ের পরই আদালত থেকে কারাগারে নেয়া হয় খালেদা জিয়াকে।
এরপর বিচারিক আদালতের দেয়া সাজার রায়ের বিরুদ্ধে খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন খালেদা জিয়া। একইসঙ্গে আপিল করেন এই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি সালিমমুল হক কামাল ও শরফুদ্দিন আহমেদ।
আর বিচারিক আদালতের রায়ে খালেদাকে দেয়া সাজা বাড়াতে রিভিশন আবেদন করে দুদক। সাজা বহাল রাখার আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষও। এসব আপিলের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রায় দিলেন।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি বিচারিক আদালতের রায়ের পর থেকে রাজধানীর নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী ছিলেন খালেদা জিয়া। তবে গত ৬ অক্টোবর চিকিৎসার জন্য তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।